ইসলামভীতি নিয়ে জাতিসংঘে তোলা প্রস্তাবে ভোট দেয়নি ভারত

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক : ইসলামভীতি নিয়ে জাতিসংঘে একটি খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি ভারত। পাকিস্তানের উদ্যোগে উত্থাপিত এ প্রস্তাবে সহযোগী দেশ হিসেবে ছিল চীন।

নিজের অবস্থানের পক্ষে ভারত জোর দিয়ে বলেছে, সহিংসতা ও বৈষম্যের শিকার হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ ও অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসের ব্যাপারেও ‘ধর্মভীতি’ বিরাজমান। তাই শুধু একটি ধর্মের মধ্যে একে সীমাবদ্ধ না রেখে তা অবশ্যই ওই সব ধর্মের পরিপ্রেক্ষিতেও বিবেচনা করতে হবে। 

১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদ গতকাল শুক্রবার ‘মেজার টু কমব্যাট ইসলামোফোবিয়া’ (ইসলামভীতি মোকাবিলায় পদক্ষেপ) শীর্ষক ওই খসড়া প্রস্তাব গ্রহণ করে। প্রস্তাবটি সমর্থন করে ভোট দেয় ১১৫টি দেশ। বিপক্ষে কেউ ভোট দেয়নি। তবে ভোটদানে বিরত ছিল ভারত ছাড়াও ব্রাজিল, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ইউক্রেন, যুক্তরাজ্যসহ ৪৪টি দেশ। 

জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কম্বোজ ইহুদিবিদ্বেষ, খ্রিষ্টান ও ইসলামভীতি দিয়ে অনুপ্রাণিত সব ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান। তবে জোর দিয়ে তিনি উল্লেখ করেন যে এ ধরনের ভীতি আব্রাহামিক ধর্মের (এক স্রষ্টায় বিশ্বাসী ধর্ম) বাইরেও বিস্তৃত থাকার বিষয়টিকে স্বীকার করে নেয়া গুরুত্বপূর্ণ।

ওই প্রস্তাব নিয়ে ভারতের অবস্থানের ব্যাখ্যায় রাষ্ট্রদূত রুচিরা বলেন, দশকের পর দশক নন-আব্রাহামিক ধর্মের মানুষও যে ‘ধর্মভীতির’ শিকার হয়ে আসছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। এটি সমসাময়িক ঘরানার ধর্মভীতি, বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ ও শিখবিরোধী অনুভূতি তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে।

ভারত এ বিষয়েও জোর দিয়েছে যে ওই প্রস্তাব গ্রহণ করে এমন নজির স্থাপন করা উচিত হবে না, যাতে কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের ভীতিকে কেন্দ্র করে অসংখ্য প্রস্তাব তোলা যায় ও বিভিন্ন ধর্মীয় শিবিরে জাতিসংঘের বিভক্ত হয়ে পড়ার শঙ্কার সৃষ্টি হয়। এ রকম ধর্মীয় বিষয়ের ঊর্ধ্বে উঠে নিজের অবস্থান বজায় রাখা জাতিসংঘের জন্য জরুরি। সেটি না হলে তা বিশ্ববাসীকে একটি পরিবার হিসেবে থাকা এবং শান্তি ও সম্প্রীতির ব্যানারে আমাদের একত্র করার পরিবর্তে বিভক্ত করে ফেলতে পারে।

বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান ধর্মীয় বৈষম্যকে আরও বড় পরিসরে বিবেচনা করতে জাতিসংঘের সব সদস্যদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ভারত।

রুচিরা কম্বোজ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে ইসলামভীতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, অন্যান্য ধর্মের মানুষও বৈষম্য ও সহিংসতার সম্মুখীন। শুধু ইসলামভীতি মোকাবিলায় মনোযোগ নিবদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে যুক্ত সাদৃশ্যপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো উপেক্ষা করা হলে তাঁদের মধ্যে “বর্জন ও অসমতার” অনুভূতি অজান্তেই স্থায়ী হতে পারে।’

উল্লেখ্য, খসড়া প্রস্তাবটিতে ইসলামভীতি মোকাবিলায় জাতিসংঘের একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করতে সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ভারত নীতিগতভাবে এমন বিশেষ দূত নিয়োগের বিষয়েও বিরোধিতা করেছে।

এর আগে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে ইসলামভীতি নিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল সাধারণ পরিষদ। সেখানে ইসলামভীতি মোকাবিলায় ১৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর তিন বছর আগে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিহত হন অর্ধশতাধিক মুসল্লি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ - dainik shiksha জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর - dainik shiksha বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা - dainik shiksha হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল - dainik shiksha পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023479461669922