ঈদের আগে জামা-জুতার টাকা পেল না শিক্ষার্থীরা, উপবৃত্তি ৫০০ টাকায় উন্নীত করার সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা শেষ পর্যন্ত ঈদুল ফিতরের আগে জামা, জুতা ও ব্যাগ কেনার টাকা পেল না। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ঈদের আগেই 'কিট অ্যালাউন্স' হিসেবে তাদের হাতে এ টাকা পৌঁছে যাবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।

দেশের ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক কোটি ৪০ লাখ শিশু পড়াশোনা করছে। তাদের প্রত্যেকেরই এক হাজার টাকা কিট অ্যালাউন্স পাওয়ার কথা। অবশ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, করোনার দেড় বছরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমেছে। এর বড় একটি অংশ চলে গেছে কওমি মাদরাসায়। সব মিলিয়ে এখন শিক্ষার্থী সংখ্যা এক কোটি ১০ লাখের মতো হতে পারে। অধিদপ্তর এ বিষয়ে তথ্য নিচ্ছে।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

শিশুদের ঈদের আগে টাকা না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি প্রকল্পের (তৃতীয় পর্যায়) পরিচালক ইউসুফ আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কিট অ্যালাউন্সের টাকা রোজার ঈদের পর দেওয়া হবে। তিনি বলেন, জুনের প্রথম সপ্তাহে টাকা দেওয়া হবে। আমরা এজন্য প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত প্রস্তুত করছি।

জানা গেছে, ঈদের আগে এই টাকা শিশুদের দেওয়ার কোনো প্রস্তুতিই নেওয়া হয়নি। জামা-জুতা কেনার এক হাজার টাকা এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে উপবৃত্তির তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির টাকা দিতে ৯ মে থেকে তথ্য অন্তর্ভুক্তির কাজ শুরু হয়েছে। প্রধান শিক্ষকরা ডাকবিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদের পিইএসপি পোর্টালে আগামী ২৫ মে পর্যন্ত তথ্য দেবেন। সুবিধাভোগী ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকদের তথ্য এবং চাহিদাসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য পিইএসপি পোর্টালে এন্ট্রির কাজ চলছে এখন। অথচ আগেভাগে উদ্যোগ নিলে ঈদের আগেই এই টাকা শিশুদের দেওয়া যেত।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

জানা গেছে, আগামী মাসেই (৩০ জুন) উপবৃত্তি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। প্রকল্প শেষ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা আর কোনো টাকা পাবে না। প্রকল্প সূত্র জানায়, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থবছরের তৃতীয় কিস্তির উপবৃত্তির টাকার সঙ্গে অতিরিক্ত এক হাজার টাকা হারে কিট অ্যালাউন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জামা, জুতা ও স্কুলব্যাগ কেনার জন্য প্রাথমিকের শিশুদের মাথাপিছু এই এক হাজার টাকা মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত বছর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মুজিববর্ষে এটি শিক্ষার্থীদের জন্য উপহার।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় না হওয়ায় গত বছর এ টাকা বিতরণ করা যায়নি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে টাকা ছাড় করে অর্থ মন্ত্রণালয়। সে সময়ে সিদ্ধান্ত হয়, কিট অ্যালাউন্স হিসেবে মার্চের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক কোটি ১০ লাখ শিক্ষার্থীকে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, কিট অ্যালাউন্স ও উপবৃত্তির বকেয়া টাকা দিতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেয়েছি। যে কোনো সময় এ টাকা বিতরণ করা হবে। তিনি বলেন, আসলে আমরা চেয়েছিলাম প্রধানমন্ত্রীর এই উপহার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে। এতে তারা নতুন উদ্যমে ক্লাসে ফিরতে পারত। তবে করোনা পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি হওয়ায় এ পরিকল্পনা বদলাতে হয়েছে।

৫০০ টাকা করে উপবৃত্তি দেওয়ার সুপারিশ : প্রাথমিক স্তরের একজন শিক্ষার্থী সরকার থেকে মাসে মাত্র ১০০ টাকা করে উপবৃত্তি পায়। এটিকে অন্তত ৫০০ টাকায় উন্নীত করার সুপারিশ করেছে বেসরকারি দুই প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026350021362305