উচ্চশিক্ষায় বিদেশ গিয়ে হদিস নেই কুবির ৬ শিক্ষকের

কুবি প্রতিনিধি |

উচ্চশিক্ষা নিতে বিদেশ গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেননি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ জন শিক্ষক। উচ্চশিক্ষার জন্য সবরকম সুযোগ-সুবিধা নিয়েও শিক্ষকরা না ফেরায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আরও কঠোর হওয়া দরকার বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্টরা।

উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশগুলোতে গিয়ে অনেক শিক্ষকই ফিরে আসতে চান না। ফিরে না আসা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নিলেও এবং চাকরিচ্যুত করলেও এ প্রবণতা বেড়েই চলছে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের সূত্র অনুযায়ী, পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান পিএইচডি করতে ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে আর ফিরে আসেননি। মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাহিদ শাহ্‌ মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য ২০১৬ সালে কানাডা যান। আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খন্দকার ফিদা হাসান ২০১৪ সালে পিএইচডি করতে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে আর ফিরে আসেননি; ২০২১ সালের আগস্টে তাকে ভোগকৃত অর্থ বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলে ফেরত দেওয়ার জন্য পত্র পাঠানো হয়।

একইভাবে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আবুল বাসার উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমান। কিন্তু পরে আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেননি। তার বিরুদ্ধে বেতন-ভাতা বন্ধসহ বিভাগীয় মামলা চলছে। ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. তাসনিমা আকতার একই বছর যুক্তরাজ্যে গিয়ে ফিরে আসেননি। তার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় মামলা চলছে। নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হামিদা আক্তার ২০১৭ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিদেশ গিয়ে ফিরে আসেননি।

আইন অনুযায়ী, বিদেশে যাওয়া শিক্ষকরা বৈতনিক, অবৈতনিকসহ বিভিন্নভাবে সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত ছুটি নিতে পারেন। এ সময়ে কারও ডিগ্রি বা গবেষণা শেষ না হলে আরও দুই বছরের অবৈতনিক ছুটি দেওয়া হয়। এ ধরনের ছুটি ভোগের পর কেউ যদি পদত্যাগ করতে চান, তাহলে তাকে চার বছর ধরে নেওয়া অর্থ ফেরত দিতে হয়। অথবা সমপরিমাণ সময় চাকরি করার পর অব্যাহতি নিতে হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা নিয়মানুযায়ী সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত শিক্ষা ছুটি নিতে পারেন এবং এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন-ভাতা সবই পরিশোধ করে। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্নিষ্ট শিক্ষকরা আইনের এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ছুটিতে দেশের বাইরে থেকে আয়-উপার্জন করেন।

ফিরে না আসা শিক্ষকদের ছুটি চলাকালীন বেতন-ভাতার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নেবে সে অনুযায়ী অর্থ দপ্তর পদক্ষেপ নেবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, যেসব শিক্ষকরা উচ্চশিক্ষার নামে বিদেশ গিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে ফিরে আসেননি তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশীয় আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিক্ষকদের বন্ড থাকে। যেসব শিক্ষক ফিরে আসতে অনীহা প্রকাশ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী যেসব ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, কর্তৃপক্ষ তাও গ্রহণ করবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028989315032959