উচ্চ আদালতে বাংলার প্রচলন বরফ কি গলবে

আহমদ রফিক |

a-rafiqপ্রতিবছর ফেব্রুয়ারি এলে বাংলা ভাষা, মাতৃভাষা, সর্বস্তরে বাংলার ব্যবহার, মাতৃভাষার শুদ্ধ ব্যবহারের দীনতা ও অনাগ্রহ নিয়ে অনেক ঢাকঢোল পেটানো হয়। পেটানো হয় রাজধানী ঢাকার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে, আর তা সবচেয়ে জোরে বাজে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। যেমন তার দীর্ঘ অনুষ্ঠানমালার প্রবন্ধপাঠে ও আলোচনায়, তেমনি পরোক্ষে বইমেলার ভাষিক চেতনা প্রকাশের সূত্র ধরে। এরপর এসব বিষয়ে বছরের বাকি ১১ মাস নিশ্চিন্ত ঘুম।

বাঙালি, বিশেষ করে পূর্ববঙ্গের বাঙালি মুসলমান জনগোষ্ঠী, অর্থাৎ শিক্ষিত জনগোষ্ঠী কি ভাষা ও জাতীয়তার প্রশ্নে এতটাই আত্মবিরোধী যে তার এক হাতে অর্জন, অন্য হাতে বিসর্জন? এমনকি ত্যাগের অর্জনও তা ঝেড়ে ফেলে দিতে চৈতন্যে বাধে না, যুক্তিতেও বাধে না। সে ক্ষেত্রে কখনো উদাসীন, অবহেলা, কখনো স্ববিরোধিতা কাজ করে। ফেব্রুয়ারির আবেগধৃত হালচাল দেখে এমনটাই মনে হয়।

তবু রক্ষা যে সমাজে কিছুসংখ্যক আত্মসচেতন, সমাজ সচেতন মানুষ আছেন, যাঁরা একচক্ষু নন, যুক্তিতর্ক সংগতির পথ ধরে তাঁদের চলা, যুক্তিনির্ভর সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনে তাঁদের প্রতিবাদী হওয়া। তাই ভাষার মাসে উত্থিত আবেগ স্পর্শ করতেই বোধ হয় বিশে ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি আলোচনা সভার আয়োজন। বিষয় : উচ্চ আদালতে বাংলা প্রচলন। উদ্যোক্তা ‘হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন’, এর নেপথ্যে মূল ব্যক্তিটি হচ্ছেন আইনজীবী শফিকুর রহমান। এখানে মূলত আইনজ্ঞ বা আইনজীবীদের থাকার কথা হলেও বে-আইনজীবী অনেকে ছিলেন, যেমন অর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক, ডিন, পেশাজীবী, এমনকি ভাষাসংগ্রামী এবং যথেষ্টসংখ্যক সংবাদসেবী তথা সাংবাদিক।

বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলেই বোধ হয় স্বনামখ্যাত আইনজ্ঞ-সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। শিরোনাম, ‘উচ্চ আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন’। এ সমাবেশের সভাপতি ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমদ, যার নিশ্চিত প্রত্যয় একুশের চেতনা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল কথা হচ্ছে জাতির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক মুক্তি। আর সার্বিক আলোচনার মূল সুর ছিল এমন বক্তব্যে যে ভূরাজনৈতিক মুক্তি সত্ত্বেও অঙ্গীকৃত ভাষিক চেতনার বাস্তবায়ন ঘটেনি স্বাধীন বাংলাদেশে। এ সভায় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারসহ সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী বা নির্বাচন কমিশনের সদস্যের মতো ধীমানও উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি এলে বাংলা ভাষা, মাতৃভাষা, সর্বস্তরে বাংলার ব্যবহার, মাতৃভাষার শুদ্ধ ব্যবহারের দীনতা ও অনাগ্রহ নিয়ে অনেক ঢাকঢোল পেটানো হয়। পেটানো হয় রাজধানী ঢাকার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে, আর তা সবচেয়ে জোরে বাজে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। যেমন তার দীর্ঘ অনুষ্ঠানমালার প্রবন্ধপাঠে ও আলোচনায়, তেমনি পরোক্ষে বইমেলার ভাষিক চেতনা প্রকাশের সূত্র ধরে। এরপর এসব বিষয়ে বছরের বাকি ১১ মাস নিশ্চিন্ত ঘুম।

বাঙালি, বিশেষ করে পূর্ববঙ্গের বাঙালি মুসলমান জনগোষ্ঠী, অর্থাৎ শিক্ষিত জনগোষ্ঠী কি ভাষা ও জাতীয়তার প্রশ্নে এতটাই আত্মবিরোধী যে তার এক হাতে অর্জন, অন্য হাতে বিসর্জন? এমনকি ত্যাগের অর্জনও তা ঝেড়ে ফেলে দিতে চৈতন্যে বাধে না, যুক্তিতেও বাধে না। সে ক্ষেত্রে কখনো উদাসীন, অবহেলা, কখনো স্ববিরোধিতা কাজ করে। ফেব্রুয়ারির আবেগধৃত হালচাল দেখে এমনটাই মনে হয়।

তবু রক্ষা যে সমাজে কিছুসংখ্যক আত্মসচেতন, সমাজ সচেতন মানুষ আছেন, যাঁরা একচক্ষু নন, যুক্তিতর্ক সংগতির পথ ধরে তাঁদের চলা, যুক্তিনির্ভর সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনে তাঁদের প্রতিবাদী হওয়া। তাই ভাষার মাসে উত্থিত আবেগ স্পর্শ করতেই বোধ হয় বিশে ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি আলোচনা সভার আয়োজন। বিষয় : উচ্চ আদালতে বাংলা প্রচলন। উদ্যোক্তা ‘হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন’, এর নেপথ্যে মূল ব্যক্তিটি হচ্ছেন আইনজীবী শফিকুর রহমান। এখানে মূলত আইনজ্ঞ বা আইনজীবীদের থাকার কথা হলেও বে-আইনজীবী অনেকে ছিলেন, যেমন অর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক, ডিন, পেশাজীবী, এমনকি ভাষাসংগ্রামী এবং যথেষ্টসংখ্যক সংবাদসেবী তথা সাংবাদিক।

বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলেই বোধ হয় স্বনামখ্যাত আইনজ্ঞ-সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। শিরোনাম, ‘উচ্চ আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন’। এ সমাবেশের সভাপতি ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমদ, যার নিশ্চিত প্রত্যয় একুশের চেতনা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল কথা হচ্ছে জাতির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক মুক্তি। আর সার্বিক আলোচনার মূল সুর ছিল এমন বক্তব্যে যে ভূরাজনৈতিক মুক্তি সত্ত্বেও অঙ্গীকৃত ভাষিক চেতনার বাস্তবায়ন ঘটেনি স্বাধীন বাংলাদেশে। এ সভায় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারসহ সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী বা নির্বাচন কমিশনের সদস্যের মতো ধীমানও উপস্থিত ছিলেন।

লেখক : আহমদ রফিক, কবি, গবেষক ও ভাষাসংগ্রামী।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026659965515137