উত্তরপত্রে জালিয়াতি করেও পুরস্কৃত শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান

বদরুল আলম শাওন |

প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার উত্তরপত্রে টেম্পারিং করে নম্বর বৃদ্ধির অভিযোগ প্রমানিত হলেও শাস্তির পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও স্কুলকে পুরস্কৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায় ওই ঘটনার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট একটি স্কুল এবং এক পরীক্ষককে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০১৭ এ শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান ও শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।

কুমিল্লার তিতাস ও বুড়িচং উপজেলার সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও স্কুলের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবী জানিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রদান করা এক অভিযোগের মাধ্যমে এ খবর জানা গেছে।

অভিযোগে বলা হয়, গত প্রাথমিক সমাপনী ২০১৬ পরীক্ষায় কুমিল্লার তিতাস উপজেলার উত্তরপত্র নিরীক্ষার দায়িত্ব পায় বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন পরীক্ষকরা।

জানা যায়, তিতাস উপজেলার গাজীপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাবুবুল হক সরকার ও বাতাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আক্তার হোসেন মিলে যোগসাজশ করেন। তারা বুড়িচং উপজেলার গণিত বিষয়ের প্রধান পরীক্ষক মো: কামরুল হাসান এবং বিজ্ঞান বিষয়ের প্রধান পরীক্ষক ফরিদা বেগমের সাথে যোগসাজশ করে অর্থের বিনিময়ে তিতাস উপজেলার ওই দুই স্কুলের ৩২ পরীক্ষার্থীর ৬ বিষয়ের উত্তরপত্রের ভেতরে, কভার পেইজে এবং মার্কসীটে টেম্পারিং এর মাধ্যমে নম্বর পরিবর্তন করেছে।

অভিযোগে দাবী করা হয় ফল পরিবর্তনের এ ঘটনায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পৃথক তদন্তে প্রমাণিত হয়। ফলে সংশিষ্টদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী আইনে মামলা এবং বিভাগী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি ওই ৩২ পরীক্ষার্থীর ফলাফল স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।

কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো সংশ্লিষ্ট ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা তো নেয়া হয়ইনি বরং ওই ৩২ পরীক্ষার্থীর ফলাফল যথাসময়ে প্রকাশ করা হয়। আরও দু:খের বিষয় হল জালিয়াতির সাথে জড়িত সংশিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকদের মধ্যে থেকে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০১৭ এ তিতাস উপজেলার গাজীপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান এবং বুড়িচং উপজেলার গণিত বিষয়ের প্রধান পরীক্ষক মো: কামরুল হাসানকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়।

এঘটনায় তিতাস ও বুড়িচং উপজেলার সচেতন শিক্ষক অভিভাবক ও সুশীল সমাজ তীব্র ক্ষোভ এবং উদ্বেগ প্রকাশ করে। তারা মনে করে এভাবে চলতে থাকলে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন কখনই সম্ভব নয়। এর ফলে প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে। তাই এই জালিয়াতিমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে যেহেতু অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তাই তাদেরকে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানানো হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039339065551758