উন্নত জাতি গঠনে সমৃদ্ধ লাইব্রেরি জরুরি

শাজাহান চাকলাদার |

‘গ্রন্থাগার’-এর আক্ষরিক অর্থ বইপত্র-পত্রিকার আলয় বা নিবাস। ‘পাঠাগার’ একই ব্যাকরণে পঠনকে প্রথম গুরুত্ব দেয়, তারপর আসে পাঠের জন্য নিভৃত নিকেতন, সেখানে নামকরণটি ভাবযোগে বিষয়ের অন্তরে যতোটুকু প্রবেশযোগ্য মনে হয়, বই বা পুস্তকের গন্ধ প্রত্যক্ষভাবে ততোটুকু মনে ছায়া ফেলে না। এসব বিবেচনায় বাংলায় প্রচলিত ‘লাইব্রেরি’ শব্দটি যাথার্থ্য বিবেচনায় ও সামগ্রিক ব্যঞ্জনায় এবং ভর ও ওজনের মাপে বেশ এগিয়ে আছে বলে আমার বিশ্বাস। কাব্য করে কেউ একে ‘বইঘর’ ও বলেন, যা ‘গ্রন্থাগার-এর বিকল্প মাত্র। তবে ‘লাইব্রেরির ভিন্ন অর্থ আছে আমাদের দেশে, প্রায় সব পুস্তক ব্যবসায়ী ও কিছু পুস্তক প্রকাশক তাদের বাণিজ্যিক কর্মস্থলের নামকরণে ‘লাইব্রেরি’  যুক্ত করেন। এটি ‘Book shop’-এর দেশীয় সংস্কারসিদ্ধ নামকরণ মাত্র।

একুশ শতকের গোড়ার দিকে ইউনেস্কো লাইব্রেরির যে সংজ্ঞা দিয়েছে, সেটি যথার্থই আধুনিক ও অর্থবহ। ইউনেস্কোর মতে লাইব্রেরি হচ্ছে, “Any organized collection of printed books and periodical or any other graphic or audio-visual materials with a staff to provide and facilitate the use of such materials as are required to meet the information research, educational and recreational needs of users.” আজ তাই দেশের লাইব্রেরিগুলোকেও নব-সজ্জায় সমৃদ্ধ করার সময় এসেছে।   

বেঁচে থাকার নানা উপাদান খুঁজতে মানুষ বিশ্বব্যাপী যাযাবরের মতো জলে-স্থলে ঘুরে বেড়িয়েছে, সন্ধান করেছে অচিন দেশ ও সম্পদ, বাধিয়েছে যুদ্ধ, সংহার করেছে অসংখ্য প্রাণ। আবার আবিষ্কারও করেছে একই পথে নানা কিছু, বাড়িয়েছে জ্ঞান। এসব নিয়ে জীবন থেকে জীবনান্তরের দীর্ঘ পথে তার প্রয়োজন হয়েছে শব্দ ও ভাষার। ভাষা অভিন্ন হতে পারেনি জীবনাচারের বৈচিত্র্যময়তার কারণে, কিন্তু মাধ্যম সে খুঁজেছে অবিরাম একটি সংগ্রহশালার-যেখানে আহরিত ও উদ্ভাবিত বিষয়গলো সংরক্ষণ করা যায়। পশুর চামড়া, শিলা, গাছের বাকল, পাতা, মাটি, পাপাইরাস ইত্যাদির মধ্যে নানা উপকরণে আঁচর কেটে সে অক্ষয় করে রাখতে প্রয়াস পেয়েছে। আজকের বিজ্ঞান, সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, শিল্পকলার যতো শাখা, এমনকি মহাকাশতত্ত্ব, জ্যোতির্বিদ্যা-সবই সে নানা ভান্ডারে জমা করেছে যুগে যুগে। এই পথচলার নাম সংস্কৃতি। ক্রমাগত এর বিকাশ হয়, বৈচিত্র্যময়তায় রাঙিয়ে তুলেছে তার রূপ। আর রূপায়নের এই পথেই সার্থকভাবে সংরক্ষণের স্বপ্নীল অভিপ্রায়ে জন্ম হয়েছে ‘লাইব্রেরির’। 

আধুনিক জীবন ব্যবস্থায় লাইব্রেরির কোনো বিকল্প নেই। কম্পিউটার-নির্ভর জীবনেও এর অপরিহার্যতা পরীক্ষিত সত্য। জাতি গঠন প্রক্রিয়ায় লাইব্রেরির ভূমিকা এতোই প্রবল যে, বলা হয়-যে জাতির লাইব্রেরি যতো সমৃদ্ধ সে জাতি ততো উন্নত। মহাকালের অসীম প্রান্তরে যে কল্পিত কাল ও যুগবিভাগ সেখানে লাইব্রেরি ভাষিক, শাব্দিক ও বাচিক সেতু হয়ে অসামান্য দৃঢ় এক বন্ধন তৈরি করেছে, যার স্পর্শে মানুষ হয়ে ওঠে ‘মানবিক’। 

ভুমধ্যসাগর তীরবর্তী জলধোয়া সবকটি দেশ বিশ্বসভ্যতায় যে প্রাথমিক ছাপ রেখেছিলো তার মাঝে বেবিলনভিত্তিক আসিরিয় সভ্যতার অগ্রগামিতা ছিলো উজ্জ্বতর। আসিরিয় সম্রাট আসুরবানির লাইব্রেরির কথা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ আছে রূপকথার মতো। পার্চমেন্ট, পাপাইরাস, ক্লে ট্যাবলেট, পাথরের চাই ইত্যাদির মাঝে অঙ্কিত হতো বর্ণ-ছবি-সংকেতের ভাষায় নানা বিষয় যা কালিক নিদর্শন শুধু নয়, অতীতের ইতিহাস হিসেবে চিহ্নিত হতো। অনাগত মানুষ ও সময়কে সেই কালেই লাইব্রেরির অভিধায় সেতুবন্ধনের বৃত্তে আসীন করার চেষ্টা হয়েছিলো কর্মোদ্দীপনার ঐন্দ্রজালিক আকাঙ্ক্ষায়। সম্রাট আসুরানির ওই লাইব্রেরিতে শুধু বস্তু খণ্ডই ছিলো, বই বলে আজ যাকে আমরা জানি, সেটি তখনো আবিষ্কৃত হয়নি। প্রাচীন সভ্যতার ওই লাইব্রেরিটি খ্রিষ্টপূর্ব সপ্তম শতকে দাঙ্গা ও যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যায়। তবে খোদাইকৃত ক্লে ট্যাবলেট পুড়িয়ে পাথরের মতো শক্ত করে তৈরি ছিলো বলে বহুসংখ্যক ট্যাবলেট প্রত্নতাত্ত্বিক আদর্শ হিসেবে সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। এর কয়েক হাজার নিদর্শন ব্রিটিশ মিউজিয়ামে সযত্নে সংরক্ষিত আছে। একই ভাবাদর্শে জ্ঞানপাল্লা ভারি করেছিলো মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রিক রাজা টলেমি।

উপমহাদেশে ভারতের বিহার রাজ্যের অর্ন্তগত পাটনার নালন্দা নামক স্থানে ছিলো বৌদ্ধবিহার। খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ-সপ্তম শতকের দিকে এখানে গড়ে ওঠে নালন্দা মহাবিহার লাইব্রেরি। প্রধানত পাতার মধ্যে লেখা দর্শন, সাহিত্য, চিকিৎসাবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যার বিপুল সংগ্রহ ছিলো এখানে। তের শতকের গোড়ার দিকে তুর্কি আক্রমণের অভিশাপে এই লাইব্রেরিটি ধ্বংস হয়ে যায়। এ বিষয়ে জানাও গিয়েছে মাত্র আড়াইশ’ বছর আগে। ইংরেজ ঐতিহাসিক আলেক্জান্ডার কানিংহাম-এর প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় এই তথ্য প্রকাশ পায়। 

মধ্যযুগে বাংলায় হোসেন শাহীর রাজবংশ রাজকীয় লাইব্রেরি গঠন করেছিলো। সেখানেও পুস্তকারে নয় বরং পূর্বোক্ত বিভিন্ন মাধ্যমে সংকলিত বিষয়াদির সংগ্রহই ছিলো মুখ্য। প্রথম মুদ্রিত বই ও পাণ্ডুলিপির লাইব্রেরি ছিলো কলকাতার শ্রীরামপুর মিশনে। আঠারো শতকের শেষের দিকে এটি গঠিত হয়েছিলো। বই-পুস্তক ও পুঁথির সংগ্রহশালা ছিলো কলকাতা মাদরাসা ও বেনারসে হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে। সামন্ত সমাজ কাঠামোর আওতায় জমিদার ও জমিদার-পোষ্য বিদ্যানুরাগীদের আনুকূল্যে কালে কালে বাংলার গ্রামাঞ্চলে ‘লাইব্রেরি’ গড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। হিন্দু ধর্মানুশীলনের জন্য ও ব্রাহ্মবাদীদের আন্দোলনের স্বপক্ষে প্রচার সুবিধার জন্যও লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। ঢাকার বিখ্যাত রামমোহন লাইব্রেরি ছিলো ব্রাহ্মবাদ উদ্দীপক বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার ফসল। ভারত ভাগের আগে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে ইংরেজি শিক্ষার প্রস্তুতিকালে গ্রন্থপাঠ অপরিহার্য হয়ে ওঠে (যেমনটি দেখি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের পাঠবিকাশকালে মুদ্রণসুবিধার বিস্তারে) এবং ঔপনিবেশিক পরিবেশেই আপন সত্ত্বার সন্ধানে মানুষের পুস্তক সংগ্রহে আগ্রহ তৈরি হয়। এই সামাজিক অগ্রযাত্রায় গ্রামভিত্তিক একক অনুপ্রেরণায় আপন গৃহে পুস্তক ভাণ্ডার তৈরিতে এক রকম আত্মার আনন্দ-উৎস ঘনীভূত হয়। গৃহস্থালি মানুষ এই শ্রেণির বাড়িকে ‘বইওয়ালা বাড়ি’ বলে জানতো।  অনধিক পঞ্চাশ খানা বইয়ের একটি সংগ্রহকেই সৌখিন পাঠক ‘লাইব্রেরি’ নাম দেয়। কিন্তু ১৯৪০-এর 

দিকে ব্যাপক নগরায়ন ও শিক্ষিত শ্রেণির শহরকেন্দ্রিক আন্দোলনের কারণে গ্রাম-লাইব্রেরিগুলো ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হতে থাকে। অন্যদিকে, তারও আগে বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে ওঠে শহরভিত্তিক মুদ্রিত সম্ভারের সংগ্রহশালা। এক তথ্যে জানা যায় ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ রাজের প্রতিষ্ঠিত ঢাকা কলেজের সংগ্রহে থাকা প্রায় ১৮,০০০ (আঠারো হাজার) পুস্তক ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দ নবপ্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়া হয়েছিলো।  

এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বাংলাপেডিয়ার তথ্যানুসারে ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দ স্থাপিত ন্যাশনাল লাইব্রেরি বা জাতীয় গ্রন্থাগার হচ্ছে দেশের সকল গ্রন্থের কপিরাইট সংরক্ষণশালা। শের-ই-বাংলা নগরে স্থাপিত এই লাইব্রেরিটি এ পর্যন্ত প্রকাশ করেছে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি’ সংবাদপত্র ও ম্যাগাজিনের সংক্ষিপ্তসার, প্রকাশক-অভিধান এবং বরেণ্য ব্যক্তিবর্গেও জীবনী। অবিভক্ত বাংলায় পূর্বাঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরির মধ্যে ছিলো ১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দে স্থাপিত বরিশাল, যশোহর ও রংপুরের পাবলিক লাইব্রেরি এবং বগুড়ার উডবার্ন লাইব্রেরি। এরপর ১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দে পাই ঢাকার নর্থব্রুক হল লাইব্রেরি। ঢাকার কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দ। এতে ঢাকার পূর্বতন পাবলিক লাইব্রেরি নামক সংস্থাটি যুক্ত করা হয়। বাংলাদেশের সর্বত্র এর শাখা রয়েছে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমির কেন্দ্রীয় অফিসেও রয়েছে গুণমানসম্পন্ন একটি লাইব্রেরি। এ ছাড়া দেশের প্রায় সব বড়ো এনজিও সংস্থা যেমন ব্র্যাক, কারিতাস, আহসানিয়া মিশন ইত্যাদিরও রয়েছে নিজস্ব লাইব্রেরি। বিভিন্ন পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও রয়েছে সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। বিষয়ভিত্তিক ও পেশাজীবী শিক্ষা-প্রশিক্ষণেরও রয়েছে মানসম্মত লাইব্রেরি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সমসাময়িক জ্ঞানচর্চার সহজগামিতায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুস্তক, পিরিয়ডিকলস, ম্যাগাজিন, ডকুমেন্টরি ইত্যাদি নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া রয়েছে ইসলামিক ইনসটিউিট অব টেকনোলজি (আইআইটি), বাংলাদেশ ইনসটিউিট অব টেকনোলজি (বিআইটি) এবং বাংলাদেশ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইনফরমেশন অ্যান্ড ডকুমেন্টেশন সেন্টার (ব্যান্সডক)। শেষেরটি সার্ক ডকুমেন্টেশন সেন্টার-এর সদস্য। 

চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য ন্যাশনাল হেলথ লাইব্রেরি অ্যান্ড ডকুমেন্টেশন সেন্টার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা বিদ্যালয় গ্রন্থাগার, বারডেম লাইব্রেরি ছাড়াও দেশের প্রায় সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রয়েছে বিষয়ভিত্তিক লাইব্রেরি। জাতীয় নানা প্রতিষ্ঠানেও রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গবেষণা-সংশ্লিষ্ট লাইব্রেরি, যেমন-বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, ইনসটিটিউট অব স্টাডিজ, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনসটিটিউট, পরিসংখ্যান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনসটিটিউট, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, পরিকল্পনা কমিশন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আধুনিক ভাষা ইনসটিটিউট, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী একাডেমি, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ইনসটিটিউট। 

ব্যানবেইস বলছে, এ ধরনের বিশেষ লাইব্রেরির সংখ্যা প্রায় ৭০০। রাষ্ট্রীয় আনুকূল্যে গড়ে ওঠা লাইব্রেরি রয়েছে প্রায় সব কটি মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও অধিদপ্তরের। সরকারি লাইব্রেরিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়ো লাইব্রেরি হচ্ছে বাংলাদেশ সচিবালয় লাইব্রেরি। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র’ পুস্তক সংগ্রহ, প্রকাশনা ও বিপণনের একটি গুরুতপূর্ণ সংস্থা যার তত্ত্বাবধানে রয়েছে ‘মহানগর পাঠাগার’ নামক একটি লাইব্রেরি। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাসট্রিজ (এফবিসিসিআই) এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইনডাসট্রিজ (ডিসিসিআই)-এরও রয়েছে সমৃদ্ধ লাইব্রেরি।

১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে স্বনামধন্য অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ মননশীলতার উৎকর্ষের লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকায় একটি প্রকল্প গঠন করেন এবং দেশের সর্বত্র পাঠ্যাভ্যাসের আন্দোলন গড়ে তোলেন। ‘মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়’ মন্ত্রবাণী তরুণ-যুবাদের মধ্যে সঞ্চার করার অভিপ্রায় নিয়ে গড়েন ‘বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র,’ যেখানে পাঠাভ্যাসের অনুশীলন ছাড়াও রয়েছে সংগৃহিত পুস্তকের বিশাল ভান্ডার। আজ তার নতুন আবাহনী সুর ‘আলোকিত মানুষ চাই’। ‘বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র,’ লাইব্রেরিপ্রেমিদের কাছে চমৎকার এক জ্ঞানবৃক্ষ।

জাতীয় উন্নয়ন ও মানসিক পুষ্টির জন্য লাইব্রেরি ও পাঠাভ্যাস কতোটা অপরিহার্য সেটি বুঝতে হলে দার্শনিক-কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পয়লা নম্বর’ গল্পে উল্লেখিত চরণদ্বয়ের কথা বলতেই হয় ‘যাবজ্জীবেৎ নাই-বা জীবেৎ ঋণং কৃত্বা বহিং পঠেৎ’। চার্বাকদের লোকায়ত দর্শন-এর বাহ্যিক সুখ আস্বাদনে ঋণ করে হলেও ঘি খাওয়ার যে প্রবণতার কথা প্রবচনরূপে মানুষের মুখে মুখে ফিরতো, কবিগুরু সেই ইচ্ছারূপকে ‘বইপড়া’র জালে জড়ালেন। আর সে জন্যই সর্বত্র চাই ‘লাইব্রেরি’র মতো নিরাপদ পুস্তক-বিতান। 

লেখক: ইউরোপ প্রবাসী   

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অবশেষে বাজারে আসছে একাদশ শ্রেণির পাঁচ আবশ্যিক বই - dainik shiksha অবশেষে বাজারে আসছে একাদশ শ্রেণির পাঁচ আবশ্যিক বই অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে রেলগেট অবরোধ তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে রেলগেট অবরোধ তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের আওয়ামী আমলে শত কোটি টাকা লুট শিক্ষা প্রকৌশলের চট্টগ্রাম দপ্তরে - dainik shiksha আওয়ামী আমলে শত কোটি টাকা লুট শিক্ষা প্রকৌশলের চট্টগ্রাম দপ্তরে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির তালিকা - dainik shiksha শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির তালিকা ছাত্ররা রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে কি না জনগণ নির্ধারণ করবে - dainik shiksha ছাত্ররা রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে কি না জনগণ নির্ধারণ করবে কুয়েটে ভর্তি আবেদন শুরু ৪ ডিসেম্বর, পরীক্ষা ১১ জানুয়ারি - dainik shiksha কুয়েটে ভর্তি আবেদন শুরু ৪ ডিসেম্বর, পরীক্ষা ১১ জানুয়ারি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002791166305542