উপবৃত্তি পাচ্ছেন অনার্স-মেডিক্যালের শিক্ষার্থীরাও

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

স্নাতক (সম্মান) বা অনার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাও সরকারের তরফে উপবৃত্তি পাবেন। চার বছর মেয়াদি অনার্স কোর্সের পাশাপাশি এমবিবিএসের মতো পাঁচ বছর মেয়াদি কোর্সে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও পাবেন উপবৃত্তি। উপবৃত্তির জন্য বিবেচিত একেকজন শিক্ষার্থী কোর্স সম্পন্ন করা পর্যন্ত বছরে মোট পাঁচ হাজার টাকা করে পাবেন। নির্ধারিত কিছু শর্তের ভিত্তিতে উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের অধীন দেওয়া হবে এ উপবৃত্তি। বর্তমানে এই ট্রাস্টের আওতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ষষ্ঠ থেকে স্নাতক (পাস) শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি পান। আর প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে উপবৃত্তি দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।  কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনও নির্ধারিতসংখ্যক শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেওয়া হয়। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের তরফে সংখ্যালঘূ ও উপজাতিসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দিয়ে থাকে।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) কাজী দেলোয়ার হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অনার্সের শিক্ষার্থীদেরও উপবৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেহেতু এখন উপবৃত্তি দেওয়ার কাজটি পুরোপুরি অনলাইনে হয়, তাই এই কাজে ডেটাবেজের প্রয়োজন আছে। কিন্তু দু-একটি ছাড়া কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষার্থীদের ডেটাবেজ নেই। এখন এই স্তরের শিক্ষার্থীদের আলাদা একটি সফটওয়্যার তৈরি করে তাঁদের উপবৃত্তি দেওয়া হবে। চলতি বছরই অনার্সের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়া শুরু করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ট্রাস্টের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, আসন্ন নতুন অর্থবছর থেকে অনার্সের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

কারা উপবৃত্তির যোগ্য হবেন? 

ইতিমধ্যে স্নাতক ও সমমানের (অনার্সসহ) স্তরের শিক্ষার্থীদের কীভাবে উপবৃত্তি দেওয়া হবে, তার একটি নির্দেশিকাও ঠিক করা হয়েছে। তাতে উপবৃত্তি পাওয়ার জন্য কিছু শর্ত মানতে হয়। শর্তগুলো হলো নিয়মিত শিক্ষার্থী হতে হবে, শ্রেণিকক্ষে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ উপস্থিতি থাকতে হবে, আগের পরীক্ষায় ন্যূনতম ৬০ শতাংশ নম্বর বা জিপিএ–৩.৭৫ অথবা সিজিপিএ–৪–এর স্কেলে ৩ পেতে হবে। শিক্ষার্থীর পিতা–মাতা বা অভিভাবকের বছরে আয় ২ লাখ টাকার কম হতে হবে। এ ছাড়া সরকারি-আধা সরকারি-স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের (জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী) কর্মচারীদের সন্তান উপবৃত্তি পাওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

এ ছাড়া বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, এতিম, হিজড়া বা ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী, ভূমিহীন পরিবারের সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা সন্তানের সন্তান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুস্থ পরিবারের সন্তান উপবৃত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।

স্নাতক পর্যায়ের বিবাহিত শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি পাবেন না বলে গত ২৬ এপ্রিল ট্রাস্টের এক আদেশে বলা হয়েছ।

বর্তমানে দেশে ৫৪টি সরকারি এবং ১১২টি অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক (২০২১ খ্রিষ্টাব্দের তথ্যের ভিত্তিতে) প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অধিভুক্ত কলেজসহ সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় মোট শিক্ষার্থী ছিলেন ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৭১৭ জন। 

বছরে মোট কত শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পেতে পারেন, সেটি নির্ভর করছে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। প্রথমত, শর্তগুলো পূরণ করতে হবে; দ্বিতীয়ত, প্রতি অর্থবছরে এ খাতে কত টাকা বরাদ্দ থাকে তার ওপর।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের স্থায়ী তহবিল হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সিড মানি (থোক বরাদ্দ) হিসেবে এক হাজার কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। ব্যাংকে রাখা এই টাকার এফডিআর থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তি ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষার্থীর হিসাব নম্বরে উপবৃত্তির টাকা দেওয়া হয়। এ জন্য শিক্ষার্থীকে সরাসরি অনলাইনে নির্ধারিত সফটওয়্যারের মাধ্যমে উপবৃত্তির জন্য আবেদন করতে হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে - dainik shiksha চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ - dainik shiksha সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন - dainik shiksha রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? - dainik shiksha বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে - dainik shiksha ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051121711730957