দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে প্রণীত কারিকুলাম একমুখী উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে সচেতন অভিভাবক সমাজ বাংলাদেশ। এ ছাড়াও এই কারিকুলামকে উন্নতির নামে এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে পুরোপুরি বেখাপ্পা ও ধ্বংসাত্মক বলে দাবি করা হয়।
শুক্রবার (৩১ মে) প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
এ সময় সচেতন অভিভাবক সমাজের সভাপতি মুসলিম বিন হাই বলেন, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের সাধারণ ধারার শিক্ষায় ১ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে একমুখী সমন্বিত শিক্ষাক্রম চালু করা হয়েছে। এ বছর তা ২য়, ৩য়, ৮ম এবং ৯ম শ্রেণিতে চালু হয়েছে এবং ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে এটা ৪র্থ, ৫ম ও ১০ম শ্রেণিতে চালু হবে।
এরপর ২০২৬ ও ২০২৭ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হবে। এই কারিকুলামের কারণে আমাদের শিক্ষার মানের যে আরো পতন হবে সে-বিষয়ে সচেতন শিক্ষাবিদ, শিক্ষকসহ দেশ-বিদেশের বহু মানুষ কারিকুলাম প্রণয়নের সময় থেকেই বলে আসছিলেন, লিখে আসছিলেন এবং নানা কর্মসূচিও গ্রহণ করছিলেন। কিন্তু সরকার সে কথা শোনার প্রয়োজন মনে করেনি।আজ কারিকুলাম চালু হওয়ার দেড় বছরের মাথায় সারাদেশের দিকে তাকালে যে কেউ বুঝতে পারবেন যে, তথাকথিত স্মার্ট নাগরিক বানানো, কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী বানানোর এই কারিকুলামের মাধ্যমে যেটুকু লেখাপড়া ছিল তাও শেষ হয়ে গেছে। প্রতিদিন নিত্য-নতুন নির্দেশনা দেয়া ও বাতিল করা, কীভাবে পরীক্ষা হবে এবং মূল্যায়ন হবে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তহীনতা ও হ-য-ব-র-ল নির্দেশনায় ছাত্র-শিক্ষকরা আজ অসহায়, অভিভাবকরা নিরুপায়, বিপন্ন।
এই পরিস্থিতি থেকে অভিভাবক ও শিক্ষক সমাজ নিষ্কৃতি চায়। আমাদের সন্তানের জন্য ভালো মানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে আগে ভালো শিক্ষক দরকার, তাদের ভালো বেতন দরকার, ভালো প্রশিক্ষণ দরকার, তাদের স্বাধীনতা দরকার, স্কুল-কলেজের ওপর থেকে দুর্বৃত্ত ব্যবস্থাপনা কমিটির অপসারণ দরকার, প্রশাসনিক হয়রানি থামানো দরকার।
কিন্তু তা না করে প্রতিনিয়ত শিক্ষার উন্নয়নের নামে যা করা হচ্ছে তাতে শিক্ষার আরো পতন ঘটছে। অবিলম্বে সমন্বিত একমুখী শিক্ষা কারিকুলামের নামে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে পুরোপুরি বেখাপ্পা ও ধ্বংসাত্মক এই কারিকুলাম বাতিল করতে হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, শিশিরের সভাপতি রাখাল রাহা প্রমুখ।