একাদশ শ্রেণিতে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে আজ ক্লাস শুরু হলেও ভর্তিচ্ছু ১ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এখনও ভর্তির বাইরে রয়ে গেছে। ফলে এসব শিক্ষার্থী প্রথম দিনের ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারছে না। তবে এসব শিক্ষার্থীকে কোন প্রক্রিয়ায় ভর্তি করানো যাবে তার সিদ্ধান্ত হবে ৪ জুলাইয়ের পর।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ড জানিয়েছে, এবার প্রায় ১৩ লাখ ২০ হাজার শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য তিন ধাপে কলেজ নির্ধারণ করে দিলেও নিশ্চায়ন করেছে ১২ লাখ ৩৬ হাজার। ৮৪ হাজার শিক্ষার্থী কলেজ নিশ্চায়ন করেনি। ফলে এসব শিক্ষার্থী ভর্তির বাইরে রয়ে গেছে। কলেজ নিশ্চায়ন না করায় ভর্তির সময় থাকলেও সুযোগ নেই তাদের। অন্যদিকে ২৭ হাজার শিক্ষার্থীকে কোন কলেজ নির্ধারণ করে দিতে পারেনি শিক্ষাবোর্ড। এসব শিক্ষার্থী যে কলেজগুলো পছন্দের তালিকায় রেখেছিল মেধা অনুযায়ী তারা সে কলেজে ভর্তির জন্য উপযুক্ত নয়। ফলে এদের কলেজ নির্ধারণ করা যায়নি বলে জানিয়েছে ঢাকা বোর্ড।
২০১৭ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৪২২ জন শিক্ষার্থী। সে হিসাবে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী যারা একাদশে ভর্তির বাইরে রয়ে গেছে এর সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক আশফাকুস সালেহীন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আগামী ২, ৩, ৪ জুলাই পর্যন্ত উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা কলেজে ভর্তি হবে। যারা ভর্তি হয়নি বা সুযোগ পায়নি তারাও ভর্তির সুযোগ পাবে। তবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৪ জুলাইয়ের পর।
একাধিক অভিভাবক এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, অনলাইনে ভর্তির জটিলতার কারণেই এক লাখ শিক্ষার্থী ভর্তির বাইরে রয়ে গেছে। ভালো ফল করেও অনেককে বিপাকে পড়তে হয়েছে, নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। এই প্রক্রিয়া আরো সহজ ও উন্নত করা হোক। নইলে পুরনো অবস্থায় ভর্তির সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হোক।
আমিনুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক জানান, জিপিএ-৫ পেয়েও আমার সন্তান তৃতীয়বারে এসে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। নানা অনিশ্চয়তায় ও উত্কণ্ঠার মধ্যে কাটছে প্রায় এক মাস। ভর্তির জন্য আগের পদ্ধতিই ভালো। আবদুর রহমান নামে এক অভিভাবক বলেন, ভর্তির জন্য একাধিক অপশন থাকায় অপছন্দের কলেজ হলেও পছন্দের তালিকায় রাখা হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেছে, ওই অপছন্দের কলেজই ঢাকা বোর্ড থেকে ভর্তির জন্য আমার সন্তানকে নির্ধারণ করে দিয়েছে। এ কারণে সে এখনও কলেজে ভর্তি হয়নি।
দেশের সব প্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু হবে আজ। কিন্তু এক লাখ শিক্ষার্থী প্রথম দিনের ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারবে না এটা শিক্ষার্থীদের জন্য ধাক্কা বলে মনে করেন আজিজুল ইসলাম নামে এক শিক্ষক। তিনি বলেন, কলেজের প্রথম দিনে অন্যরকম অনুভূতি। ‘কলেজের প্রথম দিন’ শিরোনামে রচনা প্রতিযোগিতাও হয়। নানা স্বপ্ন থাকে শিক্ষার্থীদের এই দিনটিকে নিয়ে। এই সমস্যার জন্য অনলাইন পদ্ধতির সমালোচনা করেন এই শিক্ষক।
একাদশে ভর্তির জন্য গত ৯ মে থেকে অনলাইন ও এসএমএসে আবেদন গ্রহণ করা হয়। প্রায় ২৫ দিন পর ৫ জুন প্রথম পর্যায়ের ফল প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে সময় বৃদ্ধি করে তিন দফায় আবেদন নেওয়া হয়। ২০ জুন থেকে ভর্তি শুরু হয়। ২৯ জুন ছিল ভর্তির শেষ দিন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ৪ জুলাই পর্যন্ত ভর্তির সময় বৃদ্ধি করা হয়।