গত সাত দিনে দেশে করোনার সংক্রমণ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বুধবার দুপুরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিশ্বে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় আছে। গত ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ পর্যন্ত বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি ৮৪ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সব মহাদেশে দেখা যাচ্ছে বর্তমান সময়ে সব চেয়ে বেশি শনাক্ত হচ্ছে। ওমিক্রনের পাশাপাশি ডেলটা ভাইরাস- দুটোই কিন্তু অবস্থান করছে। সংক্রমণ হঠাৎ করে মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেলে ধরে নিতে হবে নতুন যে ভ্যারিয়েন্ট তারই সংক্রমণ বেশি হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত ১ সপ্তাহে বাংলাদেশে ১০ শতাংশের বেশি পরীক্ষা বেড়েছে। ৭ দিনে দেড় লাখ টেস্ট হয়েছে। শনাক্ত হয়েছে ১০ হাজার ৪৭৪ জন। এর আগের সপ্তাহের তুলনায় ৭ দিনে ৬ হাজার রোগী বেশি শনাক্ত হয়েছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় পরের সপ্তাহে ১৬৯ দশমিক ১২ শতাংশ রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। মোট শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৯৮ হাজার ৩৮৯ জন। গত ৭ দিনে ২০ জনের মৃত্যু দেখেছি করোনায়। যদিও আগের সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মৃত্যু ২০ শতাংশ কম।
গত ৫ থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা শতাংশের হিসাবে প্রায় দ্বিগুণ রোগী পেয়েছি। ৫ জানুয়ারি ছিল ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, ১১ জানুয়ারি এসে ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ সংক্রমণ হয়েছে। গত ৭ দিনে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সংক্রমণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তারপর থেকে এটা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা শুধু একই ধারায় বৃদ্ধি হচ্ছে তা না, প্রোগ্রেসিভলি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেটা আমাদের জন্য অ্যালার্মিং। পুরো ডিসেম্বরে ৪ হাজার ৫৮৮ জন রোগী আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি, সেখানে জানুয়ারির মাত্র ১১ দিনে ১২ হাজার ৮৫০টি রোগী ইতোমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে।
এদিকে, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেখানে সংক্রমণের উচ্চঝুঁকি, মধ্যম ঝুঁকি ও কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়।
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঢাকা ও রাঙ্গামাটি জেলা সংক্রমণের রেড জোন অর্থাৎ উচ্চঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া হলুদ জোন বা মধ্যম ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে ৬ জেলা এবং কম ঝুঁকি অর্থাৎ সবুজ জোনে রয়েছে দেশের ৫৪ জেলা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উচ্চঝুঁকিতে থাকা ঢাকায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং রাঙ্গামাটিতে শনাক্তের হার ১০ শতাংশ। হলুদ জোন অর্থাৎ মধ্যম ঝুঁকির তালিকায় থাকা জেলাগুলো হলো- যশোর, রাজশাহী, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, নাটোর ও রংপুর। সংক্রমণের গ্রিন জোন বা কম ঝুঁকিতে রয়েছে ৫৪ জেলা।