এখনও টিকে আছে তালপাতার পাঠশালা

দুলাল বিশ্বাস |

গোপালগঞ্জে এখনও টিকে আছে গ্রাম বাংলার বহু পুরনো ঐতিহ্যবাহী তালপাতার পাঠশালা। একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পাঠশালার এই চিত্র দেখে অনেকেই কিছুক্ষণের জন্য হলেও হারিয়ে যান সেই দোয়াত কলমের জীবনে। সরেজমিনে পাঠশালায় গিয়ে দেখা যায় দোয়াতের কালি আর বাঁশের কঞ্চির কলম দিয়ে তাল পাতায় লিখছে কোমলমতি শিশুরা। বর্তমান প্রজন্মের কাছে পাঠশালার এমন ছবি রূপকথার গল্প মনে হতে পারে।

সকাল থেকেই কোমলমতি শিশুদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে তালপাতার এই পাঠশালা। এখান থেকেই শিশুরা প্রথম অক্ষরজ্ঞান লাভ করে। প্রতিদিন শিশুরা এখান থেকে স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জন বর্ণ, বানান, যুক্তাক্ষর, শতকিয়া, নামতা, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করে দুপুরে বাড়িতে ফিরে যায়। শিশুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযোগী করে গড়ে তোলে এই পাঠশালা। 

জানা যায়, গত ৪০ বছর ধরে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বড় ডুমুরিয়া সার্বজনীন হরি মন্দিরে তালপাতার পাঠশালায় পাঠদান করা হচ্ছে। শুধু টুঙ্গিপাড়ায় নয় দীর্ঘ বছর আগে প্রায় প্রতিটি গ্রামে একাধিক পাঠশালা ছিল। এ পাঠশালায় শিশুদের শিক্ষা জীবনের হাতে খড়ি দেয়া হতো। এখন পাঠশালা আর নেই। তবে গ্রামের মন্দিরে এ পাঠশালাটি এখনও টিকে আছে। সেখানে শিশুরা সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে।  

এ পাঠশালায় প্রায় অর্ধশত শিশু তালপাতায় অক্ষর চর্চা করে। পাশাপাশি তারা গান, কবিতা, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার চর্চা করছে। এখানকার পাঠ চুকিয়ে তারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তালপাতায় অক্ষর চর্চা করলে হাতের লেখা ভালো হয়। এ বিশ্বাস থেকে এলাকাবাসী এখনও তালপাতার পাঠশালাটি টিকিয়ে রেখেছেন। এই মন্দিরের সেবাইত পন্ডিত কাকলী মণ্ডল। তাকে গ্রামের লোকজন সামান্য টাকা ও ধান চাল দিয়ে সহযোগিতা করেন। 

পাঠশালা বিষয়ে পন্ডিত কাকলী মণ্ডল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পাঠশালাটি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে। তালপাতার এই পাঠশালাটি সম্প্রসারিত করার জন্য এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়াতে আরও দুই জন শিক্ষক দরকার। শিক্ষকদের মাসিক বেতন, বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন উপকরণ দিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন। এ ব্যাপারে তিনি সরকারি-বেসরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয়মনা লোকজনদেরকে  এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0078661441802979