চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছিলেন মো. সজিবুর রহমান সজিব। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার উলানিয়া হাট স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হওয়ার সুযোগ পেলেও তিনি এখনো যোগদান করতে পারেননি। কারণ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে থাকা আরেক শিক্ষক তার কাছে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। এ পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন সজিব। প্রতিষ্ঠানে যোগদান করতে না পারায় তিনি এমপিওভুক্তির আবেদন করতে পারেননি। গতকাল রোববার ছিলো চলতি মাসের এমপিওর আবেদনের শেষ দিন।
জানা গেছে, উলানিয়া হাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি পদে আছেন মেহেদী মাসুদ জুয়েল। তিনি গলাচিপা মহিলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এমপিওভুক্ত প্রভাষক পদেও কর্মরত।
নতুন শিক্ষক সজিব দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ যোগদান পত্র, নিয়োগপত্র এখনো দেয়নি। তাই যোগদান করতে পারিনি। গত ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেদিন সভাপতি মেহেদী মাসুদ জুয়েল ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, এ প্রতিষ্ঠানে আগেও যারা এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ সুপারিশ পেয়ে যোগদান করেছেন তাদের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন। তাই যোগদান করতে আমাকে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। এতো টাকা কোথায় পাবো সেটা চিন্তাই করতে পারছি না।
তিনি আরো জানান, সভাপতি জুয়েল দাবি করেছেন তিনি নাকি এ টাকা নিয়ে স্কুলের বাউন্ডারি দেয়াল করবেন আর ফ্যান কিনবেন। যোগদান করতে না পারায় এমপিওভুক্তির আবেদনও করতে পারিনি। তারা নিয়োগপত্র-যোগদানপত্র কিছুই দেননি। তাই রোববার অক্টোবরের এমপিওর আবেদন করার শেষ দিন থাকলেও আবেদন করতে পারিনি।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রতিষ্ঠানে ৫ জন শিক্ষকের চাহিদা দেয়া হলেও মাত্র একজন নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছেন।
এদিকে যোগদানে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মেহেদী মাসুদ জুয়েল ও অধ্যক্ষ মাহফুজুর রহমান মনির তা অস্বীকার করলেও দুইজন দুইরকম তথ্য দিয়েছেন। সভাপতি দাবি করেছেন নতুন শিক্ষক যোগদান করেছেন, অপরদিক অধ্যক্ষ দাবি করেছেন তাকে যোগদান করানোর প্রক্রিয়া চলছে।
জানতে চাইলে সভাপতি মেহেদী মাসুদ জুয়েল দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এ অভিযোগটি মিথ্যা। নতুন শিক্ষক যোগদান করেছেন। গত ১ অক্টোবর এসে যোগদান করে গেছেন। তাকে নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র সব দেয়া হয়েছে।
এদিকে অধ্যক্ষ মাহফুজুর রহমান মনির দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ওই নতুন শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে এসেছিলেন। তার কাছে টাকা চাওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। তার কাছে টাকা চাওয়া হয়নি। তাকে যোগদান করানোর প্রক্রিয়া চলছে। তার নিয়োগপত্র ও যোগদানপত্র ইস্যু করার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন আছে। নতুন শিক্ষককে নিয়োগপত্র-যোগদানপত্র দেয়া হয়েছে বলে সভাপতি দাবি করেছেন জানালে অধ্যক্ষ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি দাবি করেন, প্রক্রিয়াগত কারণে তাকে যোগদানপত্র ও নিয়োগপত্র দিতে কিছুটা দেরি হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো। নতুন শিক্ষককে সরাসরি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করার পরামর্শ দিচ্ছি। সভাপতি ও অধ্যক্ষকে তাকে যোগদান করাতে বলা হবে। তারা যদি বিষয়টি সমাধান না করেন তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারকে বিষয়টি জানিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।