শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে সবাইকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। দক্ষ শিক্ষক ও উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করা হবে। এমপিওর বন্ধ দরজা শিগগিরই খোলা হবে। তবে কবে নাগাদ তা খোলা হবে নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি। শিক্ষাবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ‘এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশেন অব বাংলাদেশের (ইআরএবি)’ নবনির্বাচিত সভাপতি ও দেশের একমাত্র শিক্ষা বিষয়ক একমাত্র জাতীয় পত্রিকা দৈনিক শিক্ষার সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান খানের নেতৃত্বে কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা সোমবার (২৩ জুলাই) শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো: সোহরাব হোসাইন, শিক্ষামন্ত্রীর সহকারি একান্ত সচিব মো: জাকির হোসেনসহ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আরও বলেন, শিক্ষকরাই আমাদের নিয়ামক শক্তি।শিক্ষকদের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তাদের গুনগত মান বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। আমাদের নতুন প্রজন্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষকরাই মূল ভূমিকা পালন করেন।
মন্ত্রী বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকায় ৮ বছর ধরে নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে পারিনি। তবে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার প্রেক্ষিতে অর্থ প্রাপ্তির আশ্বাস পাওয়া গেছে। মেধা তালিকার বাইরে অন্যকোনো তালিকা থেকে এমপিও দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কাছ থেকে আমরা কেবল ইতিবাচক খবরই প্রত্যাশা করি না, গঠনমূলক সমালোচনাও আশা করি। এতে মন্ত্রণালয় ও অধীনস্ত প্রতিষ্ঠানের ত্রুটি বিচ্যুতি জানতে পারি।
ইউজিসি আইন চূড়ান্ত হয়েছে, শিগগিরই কেবিনেটে পাঠানো হবে। শিক্ষা আইন করা হবে বলেও মন্ত্রী জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। পাঁচ বছর ধরে চেষ্টা করেছি। এ বছর সম্ভব হচ্ছে না। আগামি বছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি হলে খুশি হবো।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন,শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সহযোগিতা আমরা সব সময় পেয়ে আসছি এবং ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা চাই। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা সমস্যা ও ভুল-ত্রুটি যেমন ধরিয়ে দেবেন, তেমনি ইতিবাচক দিকগুলোও তুলে ধরবেন। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করবেন। কারণ, এক্ষেত্রে শিক্ষার উন্নয়নের জন্য আমাদের সকলেরই জাতিগত দায়িত্ব রয়েছে।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ ও পেশাগত উৎকর্ষ অর্জনে মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা কামনা করেন। এনটিআরসিএ এবং ইউজিসি খবর সংগ্রহে সাংবাদিকরা ভোগান্তির শিকার হন--মন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন, এনটিআরসিএ এবং ইউজিসির চেয়ারম্যানকে বলে দেয়া হবে, তারা যেন সাংবাদিকদের তথ্য সরবরাহ করে সহযোগিতা করেন ।
পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস রোধে সাংবাদিকদের ভূমিকার প্রশংসা করে শিক্ষা সচিব মো: সোহরাব হোসাইন বলেন, সাংবাদিকদের লেখনীর কারণে প্রশ্নফাঁস রোধ করা সম্ভব হয়েছে। প্রশ্নফাঁসে জড়িত অনেককে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। প্রশ্নফাঁস নিয়ে অনেক গুজজ ছাড়ানো হয়, ফলে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়। প্রযুক্তি দিয়ে প্রতারকরা নানাভাবে প্রতারণা করে মানুষের সঙ্গে।
সচিব বলেন, অর্থ বছরের শেষ দিকে কম দামের জিনিষ বেশি দরে আমাদেরকে দিয়ে কেনানোর চেষ্টা করা হয়। শত চাপের মুখেও আমরা তাদের পাতা ফাঁদে পা দিই না। তবে, পরে দেখি কোনও কোনও গণমাধ্যমে উল্টো নিউজ হয়।
এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশেন অব বাংলাদেশের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সাব্বির নেওয়াজ, সহ-সভাপতি মুসতাক আহমেদ ও নিজামুল হক, কোষাধ্যক্ষ শরীফুল আলম সুমন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম মামুন হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক অভিজিৎ ভট্টাচার্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক আকতারুজ্জামান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুরাদ হোসাইন, নির্বাহী সদস্য আমানুর রহমান ও রিয়াজ চৌধুরী সৌজন্য সাক্ষাতকালে উপস্থিত ছিলেন।