এমপিওভুক্তির আবেদনের কার্যক্রম শুরু আগামী সপ্তাহে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে অনলাইন আবেদন কার্যক্রম আগামী সপ্তাহে শুরু। নতুন সফটওয়্যার তৈরি হয়েছে। বর্তমানে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সোমবার (৯ জুলাই) এমপিও কমিটির সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নতুন এমপিওভুক্তি সংক্রান্ত কমিটির প্রধান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জাভেদ আহমেদ।

এমপিওভুক্তির নীতিমালা অনুযায়ী এক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাত্র একটি স্তরে এমপিও দেয়া হবে। অর্থাৎ কোনো প্রতিষ্ঠান ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত হলে সেখানে নিম্ন মাধ্যমিক (অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত) অথবা মাধ্যমিক (নবম-দশম) যেকোনো একটি স্তরে এমপিওভুক্ত করা হবে। সফটওয়্যার সেভাবে তৈরি হচ্ছে। গত বুধবার এ সংক্রান্ত কমিটি বৈঠকে বসে। তাতে এমপিও আবেদন কাঠামো চূড়ান্ত হয়। ওই কাঠামোর আলোকে অনলাইনে আবেদন নেয়ার লক্ষ্যে একটি সফটওয়্যারও তৈরি করা হয়েছে। সফটওয়্যার চূড়ান্ত করতে সোমবার ফের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই সফটওয়্যারেই এমপিওভুক্তির আবেদন নেয়া হবে।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) জাবেদ আহমেদ রোববার  বলেন, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন গ্রহণের সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এ সংক্রান্ত সফটওয়্যার প্রস্তুত, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কাল (সোমবার) এ সংক্রান্ত কমিটির সভা রয়েছে। এমপিওভুক্তির জন্য আগামী সপ্তাহ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবেদন গ্রহণ শুরু করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রলালয় সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও প্রথম পর্যায়ে মাত্র ১ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তি করা হবে। তার মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে ৪০০টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ১০, কলেজ ৭৫, ভোকেশনাল স্কুল ও কলেজ ৩০০টি, মাদরাসা ১০০টি এবং ১১৫টি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ রয়েছে।

এমপিও নীতিমালায় বলা আছে, শিক্ষকদের নিয়োগে ৩৫ বছর নির্ধারণ করে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ১০০ নম্বরের গ্রেডিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করা হবে। তার মধ্যে একাডেমিক স্বীকৃতিতে ২৫ নম্বর (প্রতি দুই বছরের জন্য পাঁচ নম্বর। ১০ বা তার চেয়ে বেশি বয়স এমন প্রতিষ্ঠানের জন্য ২৫ নম্বর)। শিক্ষার্থীর সংখ্যার ওপর ২৫ নম্বর (কাম্য সংখ্যার জন্য ১৫ নম্বর, এরপর ১০ শতাংশ বৃদ্ধিতে পাঁচ নম্বর)। পরীক্ষার্থীর সংখ্যার জন্য ২৫ নম্বর (কাম্য সংখ্যার ক্ষেত্রে ১৫ ও পরবর্তী প্রতি ১০ জনের জন্য পাঁচ নম্বর)। পাবলিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণের জন্য ২৫ নম্বরের (কাম্য হার অর্জনে ১৫ নম্বর ও পরবর্তী প্রতি ১০ শতাংশ পাসে পাঁচ নম্বর) গ্রেডিং করা হবে।

প্রভাষকদের এমপিওভুক্তিতে বিষয়ভিত্তিক ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। তবে বিজ্ঞান বিভাগের ১৫ জন করা হচ্ছে। তবে নতুন জনবল কাঠামোতে সৃষ্ট পদের শিক্ষক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা দেয়া হবে না। কিন্তু নতুন পদে এমপিওভুক্ত করা হবে। নতুন জনবল কাঠামোর বাইরে কর্মরত পদ শূন্য হলে নতুন করে নিয়োগ দেয়া যাবে না। যারা এমপিওভুক্ত নন কিন্তু বৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের নতুন পদে পদায়ন করতে হবে।

এদিকে, নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীরা গত ২৫ দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলন করছেন। এর মধ্যে গত ১৪ দিন ধরে আমরণ অনশন করছেন তারা। অনশন শুরুর পর শিক্ষক-কর্মচারীরা অসুস্থ হওয়া শুরু করলে তাদের স্যালাইন দিয়ে রাখা হচ্ছে। এছাড়া বেশি অসুস্থদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছিল। কিন্তু ২৫ দিনেও কোনো সাড়া না পেয়ে শিক্ষকরা বুধবার চিকিৎসা নেয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন।

এদিকে আমরণ অনশনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ ওয়াহিদা আক্তার শনিবার দুপুরে আন্দোলনকারী সংগঠনের সভাপতিকে টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা জানান।

এমপিওভুক্তি কমিটির মিটিং 

এদিকে গত বুধবার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির লক্ষ্যে সরকার গঠিত কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে এমপিওভুক্তির লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ে ‘বিধিগত’ শর্তসংবলিত একটি আবেদন ফরম ও সফটওয়্যার উপস্থাপন করা হয়। এরপর বৈঠকের সদস্যরা এতে বিভিন্ন মতামত দেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, ফরমে ও সফটওয়্যারে এমপিও নীতিমালায় উল্লিখিত চার শর্তের আলোকে বিভিন্ন কলাম তৈরি করা হয়েছে। তাতে প্রতিষ্ঠানের বয়স, শিক্ষার্থী সংখ্যা, পাশের হার, প্রাপ্যতাসহ নানা তথ্য নেয়া হবে। প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক পরিচিতি, ইআইআইএন (পরিচিতি) নম্বর, প্রথম স্বীকৃতির তারিখ, স্বীকৃতি নবায়নের তারিখ ও বোর্ডের চিঠি স্ক্যান করে দেয়ার কলাম থাকবে।

ব্যানবেইস মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাভেদ আহমেদ প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে ব্যানবেইস মহাপরিচালক বলেন, আগামী সপ্তাহ নাগাদ আবেদন নেয়ার প্রক্রিয়াগত কাজ শেষ করা হবে। এ লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে চলছে। আগামী সপ্তাহ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবেদন গ্রহণ কার্যক্রম শুরু করা হতে পারে বলেও তিনি জানান।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029499530792236