এমপিওভুক্তির খোলনলচে বদলে যাচ্ছে

রুম্মান তূর্য |

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি প্রক্রিয়ার খোলনলচে বদলে যাচ্ছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে চলা এ প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব হারাচ্ছেন শিক্ষা অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা ও আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। নতুন প্রক্রিয়ায় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশ পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানে যোগদান করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এমপিওভুক্ত হওয়া যাবে।  আর শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সময়ই তাদের কাগজপত্র সংগ্রহ করা হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। 

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দৈনিক আমাদের বার্তার সঙ্গে আলাপচারিতায় এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, নতুন প্রক্রিয়ায় শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত হতে ঘাটে ঘাটে হয়রানির শিকার হতে হবে না।

বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত হতে অনলাইনে সব কাগজপত্রসহ আবেদন করতে হয়। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের করা এমপিওর আবেদন প্রথমে যাচাই বাছাই করেন উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তিনি তা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অগ্রায়ন করেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা যাচাই বাছাইয়ের পর তা অনলাইনে পাঠান আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোতে। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের আবেদন সরাসরি আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখানে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের আবেদন উপপরিচালক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের আবেদন পরিচালক যাচাই বাছাই করে ইএমআইএস সার্ভারে পাঠান। এমপিও কমিটি সভা করে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির অনুমোদন দেয়। কিন্তু অভিযোগ আছে, প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি ও মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিতে নানা বাধা সৃষ্টি করে তাদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা হাতিয়ে নেন। অনেক সময় শিক্ষকদের আবেদন টাকা না পেয়ে অগ্রায়ন করা হয় না। আবার শিক্ষকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি তাদের এমপিওভুক্তির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করে। সর্বশেষ ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে ৩৪ হাজারের বেশি নতুন শিক্ষককে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুপারিশ করেছিলো এনটিআরসিএ। তারা এমপিওভুক্তির সময় এ ধরনের জটিলতায় পড়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে। 

এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রক্রিয়া বদলের উদ্যোগ নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়াটায় কিছু পরিবর্তন আনতে চাচ্ছি। তা নিয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে। এটি শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যাবে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা এমপিওভুক্তিতে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার, আবার আঞ্চলিক কার্যালয়- এতোগুলো ঘাট রাখতে চাচ্ছি না। এখন এনটিআরসিএ শিক্ষকদের নিবন্ধন দেয়। নিবন্ধিত শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শূন্যপদের ভিত্তিতে নিয়োগ সুপারিশ করে। এনটিআরসিএ শিক্ষক নিবন্ধনের সময় ভাইভাও নেয়। যে কাগজগুলো এমপিওর সময় লাগে চেক করার জন্য, সেগুলো ভাইভার আগে সংগ্রহ করে তাকে ভাইভা দেয়ার সুযোগ দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। ভাইভা বোর্ডে যদি আমাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের লোকদের বসিয়ে দেয়া হয় তাহলে তারা ভাইভার সময়ই তার কাগজ চেক করতে পারবেন। তাহলে ভাইভা হয়ে গেলে ফল প্রকাশের পরেই তিনি ফিট হয়ে গেলেন।  

মহপরিচালক আরও বলেন, নিবন্ধিত ওই প্রার্থী সুপারিশ পাওয়ার পর ওই পদে যোগদান করে অনলাইনে অধিদপ্তরকে বিষয়টি জানাবেন। তার তথ্য এনটিআরসিএ থেকে আমরা সংগ্রহ করবো। তিনি ওইখানে যোগদান করে অনলাইনে তার যোগদানপত্র আমাদের কাছে পাঠাবেন। তারপর আবেদন করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এমপিওভুক্ত হবেন। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.005277156829834