বাজেটে অপ্রতুল বরাদ্দের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া। তবে আগামী অর্থবছরের বাজেটে এমপিওভুক্তির জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা হতে পারে। প্রাথমিকভাবে এর পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিটি বাজেটেই শিক্ষা খাত গুরুত্ব পাচ্ছে। কিন্তু তার পরও ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের পর মাত্র একবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এরপর বহু নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হলেও এমপিওভুক্ত হয়নি কোনোটি। শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের জুলাই থেকে এমপিওভুক্তির আবেদন নেওয়া শুরু করে সরকার। অনলাইনে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুই হাজার ৭৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য বিবেচনা করেছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীন স্কুল ও কলেজ এক হাজার ৬২৯টি, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের অধীন মাদরাসা ৫৫১টি এবং কারিগরি প্রতিষ্ঠান ৫৮২টি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ওই সব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হলে সরকারের বাড়তি খরচ হবে এক হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ জন্য অর্থ বরাদ্দও চেয়েছে। অথচ স্কুল ও কলেজ এমপিওভুক্তি খাতে আছে মাত্র ৪৩২ কোটি টাকা। কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে এর পরিমাণ আরও অনেক কম। কিন্তু এত কম টাকায় বিপুলসংখ্যক প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা অসম্ভব। বিষয়টি যাতে অর্থের অভাবে ঝুলে না থাকে সে জন্য আগামী অর্থবছরে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। এর পরিমাণ হতে পারে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। এমপিওভুক্তির জন্য প্রাথমিকভাবে ৩৩২টি স্কুল এবং ২৯৯টি কলেজের একটি তালিকা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে হিসেবে স্কুলের জন্য আগামী বাজেটে ২৪২ কোটি ৫১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে। আর কলেজের জন্য রাখা হতে পারে ৬২৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া মাদরাসার জন্য বাকি অর্থ বরাদ্দ রাখা হতে পারে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে এমপিওভুক্ত করা সম্ভব নয়। পর্যায়ক্রমে তিন অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিও সংসদে জানিয়েছেন, ধাপে ধাপে দুই হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির আওতায় আনা হবে।