এমপিওভুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে এসিটি শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এমপিওভুক্তি অথবা পরবর্তী প্রকল্পে স্থানান্তরের দাবিতে  জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সেকায়েপ প্রকল্পের অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষকরা। সোমবার (২২ অক্টোবর)  সকাল সাড়ে ১০টার দিকে  বাংলাদেশ এসিটি এসোসিয়েশনের  ব্যানারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। রাতেও শিক্ষকরা  অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

কর্মসূচিতে  অংশ নেয়া শিক্ষকরা দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানিয়েছেন তাদের ১০ মাসের বকেয়া বেতনসহ চাকরি স্থায়ীকরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। একই দাবিতে গত ৮ এবং ৯ অক্টোবর  জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা।

এমপিওভুক্তির দাবিতে এবছরের শুরু থেকে কয়েক দফায় এ প্রকল্পের শিক্ষকরা দাবি আদায়ে সংবাদ সম্মেলনসহ সারাদেশে মানববন্ধন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ এসিটি এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৌশিক চন্দ্র বর্মণ দৈনিকশিক্ষাকে জানান, বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত সেকায়েপ প্রকল্পের অধীনে আমরা ৫ হাজার ২০০ অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে  ২ হাজার ১০০ প্রতিষ্ঠানে বিষয়ভিত্তিক ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে অত্যন্ত দক্ষতা, নিষ্ঠা ও সফলতার সাথে পাঠদান করছি। গত ৩১ ডিসেম্বর সেকায়েপ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে এসিটিদের নতুন প্রকল্পে স্থায়ী করার জন্য নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে পাঠদান চালিয়ে যাওয়ার কথা বলে সরকার। মন্ত্রণালয় থেকে এমপিওভুক্তির উদ্যোগে নেয়া হয়েছে বলে আমরা শুনলেও  সে বিষয়ে কোনো অগ্রগতি আমরা দেখতে পাচ্ছি না। নিতান্ত বাধ্য হয়েই আমরা বারবার রাজপথে নামছি। চাকরি স্থায়ীকরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।

এসিটি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো: মামুন হোসেন দৈনিকশিক্ষাকে জানান, সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের ১০ মাসের বকেয়া বেতনসহ চাকরি স্থায়ীকরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আজ থেকে শুরু হওয়া আমাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষে এসিটিদের এমপিওভুক্ত করা হবে তা এসিটি ম্যানুয়ালের ৩৬ নং ধারা অনুযায়ী ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রোগ্রাম প্ল্যান ২৬ পৃষ্ঠায় সরকারি বিশেষ আদেশের মাধ্যমে নতুন প্রকল্পে স্থানান্তরের কথা স্পষ্ট উল্লেখ ছিল। সেকায়েপ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে ও সেকায়েপ এর সাবেক প্রকল্প পরিচালক ড. মো: মাহমুদ-উল হক প্রকল্পভুক্ত এসিটি শিক্ষকদের পরবর্তী সমন্বিত প্রকল্পতে রাখার জন্য মন্ত্রনালয়ে সুপারিশ করেন। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সরকারি আদেশ না আসা পর্যন্ত পাঠদান চালিয়ে যাওয়ার মৌখিক পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি । কিন্তু গত ১০ মাসেও আমাদের বিষয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ফলে এসব শিক্ষক বেতন না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

জানা যায়, মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নত করতে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত সেকায়েপ প্রকল্পের অধীনে দুর্গম ৬৪টি উপজেলার দুই হাজার ১০০টি স্কুলে গণিত, ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিষয়ে ছয় হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ‘সেকায়েপ’ প্রকল্পে এসিটি কম্পোনেন্টটি যুক্ত হয়, যা শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় ফিরিয়ে আনা, পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের সামনে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে অভিভাবকদের সমন্বয় সভা, অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে কোচিং বাণিজ্য, বাল্য বিবাহ ও শিশু নির্যাতন বন্ধসহ নানা ধরণের ইতিবাচক কার্যক্রম সফলতার সাথে সম্পন্ন করতে এডিশনাল ক্লাসরুম টিচার (এসিটি) প্রচেষ্টা যথেষ্ট ভূমিকা পালন করছে।

অপরদিকে সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ) প্রকল্পে রিসোর্স টিচার (আরটি) পদে ১ হাজার ৪৪৩ জন শিক্ষক রয়েছে। গত বছর অস্থায়ী ভিত্তিতে এসব শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো। সেকায়েপ প্রকল্পটির মেয়াদ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035438537597656