এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে কেন এই তামাশা

সুলতান মাহমুদ |

যখন মাননীয় অর্থমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক ‍তৃতীয়াংশই ‘খামাখা’ গড়ে ‍উঠেছে, তখন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে তামাশা করা হবে এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবতা হলো এমপিও প্রদানকারী সরকারী প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও ইএমআইএস সেল শর্তপুরণ না করলে কখনও কোন প্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেওয়া হয় না। এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে শিক্ষক ৪ জন আর ছাত্র একজন। সে সব প্রতিষ্ঠানের এমপিও স্থগিত করা হয়ে থাকে।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে স্থানীয় সাংসদ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে কান ধরে উঠ বস করানোর মত ন্যাক্কারজনক ঘটনায় গোটা জাতি প্রতিবাদ করেছিল। কিন্তু মাস শেষে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন ভাতার সরকারি অংশ প্রদান নিয়ে যে তামাশা চলে এটা নিয়ে কেউ কোন প্রতিবাদ করেন না। কিভাবে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের তামাশার পাত্র বানানো হয় তার কিছু উদাহরণ দেই।

ঢাকার মত জায়গায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ অফিসে সার্ভার নষ্ট হওয়ার সাথে সাথে তা মেরামত করা সম্ভব হয় না। মেরামত করার জন্য দুই দিন অপেক্ষা করতে হয়। যাই হোক অবশেষে ১৫ জুনের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা মে মাসের বেতন তুলতে পারবেন বলে দৈনিক শিক্ষা ডট কমের খবরে জানা গেছে।

বাস্তব তথ্য হলো এই বেতনের টাকা ১৫ জুন পর্যন্ত ব্যাংকে পৌঁছাবে না। তারপর ১৬ জুন ব্যাংকে পৌঁছালে বেতন সংশ্লিষ্ট দাপ্তরিক কাগজ পত্র জমা হবে। ১৭ ও ১৮ জুন সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ব্যাংক বন্ধ থাকবে এবং হয়তবা ১৯ তারিখে শিক্ষকরা বেতন ভাতা তুলতে পারবেন। একজন শিক্ষক কখনো নিশ্চিত করে বলতে পারবেন না যে, তার বেতন মাসের কোন তারিখ হবে। এতে করে একজন শিক্ষক দোকানদার থেকে শুরু করে পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে কতটা হেয় প্রতিপন্ন হয় তা ভোক্তভুগী মাত্রই জানেন।

ভূতপূর্ব শিক্ষা সচিব নজরূল ইসলাম খান এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কষ্ট লাগবে ইন্টারনেটে ইলেক্ট্রনিক এমপিও সিস্টেম চালু করতে চেয়েছিলেন কিন্ত তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অন্য মন্ত্রণালয়ে চলে যাওয়ায় সেটা আর হয়ে উঠেনি। অথচ নাকি সারা বাংলাদেশের এমপিওসিট প্রিন্ট দেওয়ার জন্য তিন রীম কাগজ লাগে এবং দুইদিন সময় লাগে। আর সেই এমপিও ব্যাংকে পৌঁছতে লাগে সাত দিন।

সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। জানিনা ঈদুল ফিতরের আগে এমপিওভূক্ত শিক্ষকদের জুন মাসের বেতন ও ঈদুল ফিতরের বোনাস দেওয়া হবে কিনা। অনিশ্চিয়তার মধ্যে অাজ সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীসভায় নতুন স্কেল পাশের সময় বলেছিলেন যে, বাঙ্গালীর জাতীয় উৎসব বাংলা নববর্ষ যাতে সবাই একসাথে পালন করতে পারে সেই জন্য বৈশাখী উৎসব ভাতা চালু করা হলো। সবাই পেল কিন্তু হতভাগ্য এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পেলেন না।

তাই সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আকুল আবেদন যেন পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য জুন মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস প্রদান করা হয়।

সুলতান মাহমুদ, পরানপুর, মান্দা, নওগাঁ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ - dainik shiksha শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027639865875244