এমপিও নীতিমালায় কয়েকটি সংশোধনী প্রস্তাব

মো: শাহাদাত হোসাইন শিমুল |

নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকসহ মাদরাসা ও কারিগরির এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ সংশোধন করার লক্ষে কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্কুল ও কলেজের নীতিমালা পর্যালোচনা করে এক মাসের মধ্যে  সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে। শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র পত্রিকা দৈনিক শিক্ষার প্রতিবেদনে জানলাম ১০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রথম সভা ৪ ডিসেম্বর। 

আলোচনার শুরুতেই বলছি, নীতিমালার সংশোধনী ২০১০ ও ২০১৩-তে শিক্ষকদের যে সকল সুযোগ- সুবিধা ছিল তার অনেকটাই ২০১৮তে রাখা হয়নি।

সংশোধন কমিটির সদস্যদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষে আমি বর্তমান নীতিমালার কিছু অসঙ্গতি তুলে ধরছি। 

প্রথমেই বলছি, সব প্রভাষকের দাবির পরও বহাল রয়েছে সহকারি অধ্যাপক পদে পদোন্নতির কালো নিয়ম ৫:২ অনুপাত প্রথা। নীতিমালায়  জেনারেল  শিক্ষকদের   প্রশাসনিক  পদে নিয়োগ ও অন্যসকল  অফিসিয়াল পদের নিয়োগ  প্রক্রিয়াগুলো সুস্পস্ট  ও সুসংবদ্ধ করা হয়নি।  এ নীতিমালায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের টাইমস্কেল বাদ দিয়ে উচ্চতর গ্রেড প্রদানে দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি করা হয়েছে। 

আরও পড়ুন: অনুপাত প্রথা : সরকারি বনাম বেসরকারি শিক্ষক

 সহকারী মৌলভীদের দশম গ্রেড নয় কেন?

 অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওবিহীন ২৭ বছর

এবারে নিম্নোক্ত পরিবর্তন এবং সংশোধন দাবি করছি : শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল  নির্ধারণ  করা হোক এবং তা দ্রুত বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা করা হোক। প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির বিদ্যমান কালো বিধান ৫:২ অনুপাত প্রথা বাতিল করে সহযোগী এবং অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেয়া হোক।  অধ্যক্ষ / উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক/ সহকারী প্রধান শিক্ষক,  সুপার/ সহ- সুপারসহ  অফিসিয়াল পদগুলো যোগ্যতা ও জোষ্ঠতার ভিত্তিতে এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা  করা হোক। এমপিওভুক্ত  শিক্ষকদের বদলি প্রথা দ্রুত  চালু করে তা এনটিআরসিএর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হোক।  এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের  সরকারী চাকরিজীবীদের ন্যয়  ঈদ উৎসব বোনাস ও  বাড়িভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা এই নীতিমালায় রাখা  হোক। শিক্ষকদের পারিবারিক  পেনশনের আওতায় আনার পরিকল্পনা  এ নীতিমালায় সন্নিবেশ করা হোক। এমপিওভুক্ত শিক্ষক- কর্মচারীদেরও গৃহঋণ সুবিধা  প্রদানের বিষয়টি এই নীতিমালায় রাখা হোক। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি  শ্রেণিতে (প্রতিটি শাখাসহ) সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে  পাঠদানের জন্য  নির্ধারিত করে দেওয়া  হোক যার ফলে  শ্রেণিকক্ষে পাঠের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা যায়, এতে সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর ভারসাম্য সৃষ্টি হবার মধ্যদিয়ে শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেতে পারে । কোটা সংস্কার নীতিমালা অনুযায়ী  সরকারী বিধি মোতাবেক ১ম ও ২য় শ্রেণির গ্রেডের  পদ সমূহের বিপরীতে প্রদত্ত  কোটাপদ্ধতি  বাতিল করা করা হোক। এই নীতিমালায়  যত্রতত্র ব্যঙের ছাতার মতো ব্যক্তিমালিকানায় বাণিজ্যিকভাবে যেন কোনও  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে না উঠতে পারে তার জন্য কঠোর  বিধিমালা প্রণয়ন করা হোক এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান গুলোর প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম সরকার প্রদত্ত বিধিমালা অনুযায়ী স্বচ্ছতার মাধ্যমে  পরিচালিত হচ্ছে কি না তা তদারকিতে আনার উদ্যোগ  গ্রহণ করা হোক। 

পরিশেষে  বলবো,  টেকসই উন্নয়নের জন্য এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবী। আর এটি বাস্তবায়নে বর্তমান  সরকারের সু-দৃষ্টি ও প্রচেষ্টা  শিক্ষাক্ষেত্রে এক নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করবে।

লেখক: মো: শাহাদাত হোসাইন শিমুল, সহকারী শিক্ষক ও সাধারণ সম্পাদক বিএমজিটিএ রায়পুর উপজেলা, লক্ষ্মীপুর। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028269290924072