মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেল আগুনে পুড়ে বিকল হয়ে রয়েছে ৪ দিন ধরে। শনিবার (১২ মে) এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ লাইন সচল না হওয়ায় নতুন করে এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় থাকা কয়েক হাজার শিক্ষকের এমপিওভুক্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গত বুধবার (৯ মে) সকাল ১০ টার দিকে শিক্ষা ভবনের ২য় ব্লকের পাঁচ তলায় অবস্থিত এমপিওর তথ্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেলে আগুনের ঘটনা ঘটে। আগুনে দুইটা এসি ও তিনটা কম্পিউটার পুড়ে যাওয়াসহ সার্ভারে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুন লাগার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মহাপরিচালক অধ্যাপক মো: মাহাবুবুর রহমান।
ইএমআইএস সেলের মধ্যে কোটি কোটি টাকার কম্পিউটার ও সার্ভার রয়েছে। প্রায় পাঁচ লাখ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীর সরকারি বেতন-ভাতার সরকারি অংশ (এমপিও) বিতরণ ও যাবতীয় তথ্য সরক্ষণ করার একমাত্র তথ্য ভান্ডার ইএমআইএস সেল। প্রতিমাসে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিদের এমপিও আদেশের কপি ছেপে তা ব্যাংকে পাঠানো হয় এই সেল থেকে।
এই সেলের কর্মকর্তারা চাইলে যে কাউকে এমপিওভুক্ত ও বেতন কোড পরিবর্তন করে দিতে পারেন। বিগত ২০ বছর যাবত ঘুষ নিয়ে হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করেছেন এই সেলের কর্তারা। গত কয়েকবছরে প্রোগ্রামার সাইফুরসহ কয়েকজনের দুর্নীতি নিয়ে দৈনিকশিক্ষায় ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। সাইফুরকে দুর্নীতি দমন কমিশন আটক করে কয়েকমাস আগে। দুদকের তদন্ত চলছে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। সিনোসিস আইটি নামক একটি জামাতপন্থী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নতুন সফটওয়্যার বিনা টেন্ডারে কিনেছে সাবেক পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক মো: এলিয়াছ গং। এছাড়াও সেসিপের অধীনে নিয়োগ পাওয়া অস্থায়ী লোকদের হাতে অতি স্পর্শকাতর এই সেলের যাবতীয় পাসওয়ার্ড দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষা ভবনে এমপিও শাখার তথ্যভাণ্ডারে আগুন
এদিকে মে মাসে এমপিওভুক্তির জন্য নতুন শিক্ষকদের আবেদন কেন্দ্রে পৌঁছানোর সময় দেওয়া আছে ১৮ মে। এ সময়ের মধ্যে যদি দেশের ৯টি আঞ্চলিক অফিস শিক্ষক ফাইল ও তথ্য পাঠাতে না পারে, তাহলে এ মাসের এমপিও পাবেন না শিক্ষকরা। এর আগে গত মার্চ মাসে আঞ্চলিক পরিচালকের অবহেলায় রংপুরের প্রায় দেড় হাজার শিক্ষক এমপিও বঞ্চিত হন। এবারও ওই বঞ্চিত দেড় হাজারসহ প্রায় সাড়ে চার হাজার শিক্ষক বঞ্চিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উদ্বিগ্ন একাধিক এমপিওপ্রত্যাশী শিক্ষক দৈনিকশিক্ষায় ইমেইল ও টেলিফোন করে এমপিওবঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক আবদুল মান্নান জানান, যদি ইএমআইএস চালু হতে দেরি হয়, সেক্ষেত্রে সময় বাড়িয়ে দেওয়া হবে। কোনোভাবেই শিক্ষকদের সমস্যায় ফেলা হবে না।
জামিলুর রহমান নামক একজন নিম্নপদস্থ কর্মকর্তাকে ইএমআইএস সেলের দায়িত্ব দেয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষা অধিদপ্তরের অনেকেই।