এ কেমন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা!

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি |

ফোন রাখার অভিযোগে মাস্টার্সের ৪০ পরীক্ষার্থীর খাতা আটকে রেখেছেন নারায়ণগঞ্জের এক কলেজ শিক্ষক। পায়ে ধরেও রক্ষা পায়নি শিক্ষার্থীরা।এছাড়া ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ তো রয়েছেই। অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষক। তিনি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক। মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরপরই রফিকুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। খবর পেয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গত ২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে মাস্টার্স পরীক্ষা। তোলারাম কলেজের ব্যবস্থাপনা ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। দুপুর ১টা থেকে পরীক্ষা শুরু হলে রফিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মোবাইল ফোন থাকলে দিয়ে দেওয়ার জন্য বলেন। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৪০ জন মোবাইল ফোন জমা দেননি। পরে রফিকুল ইসলাম এসব পরীক্ষার্থীর পরীক্ষার খাতা নিয়ে যান এবং তাদের ওএমআর ফরম পূরণ করতে না দিয়েই খাতা কেড়ে নেন। শিক্ষার্থীরা স্কুলের প্রিন্সিপালকে ঘটনা জানালে তিনি তাদের খাতা দিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু রফিকুল ইসলাম তাতে কর্ণপাত করেননি।

মাস্টার্সের এক পরীক্ষার্থী বলেন, 'পরীক্ষার খাতার জন্য আমি কাঁদতে কাঁদতে স্যারের পায়ে পড়ি। অনেকবার মিনতি করে বলি, স্যার, আমার খাতা দিয়ে দিন। পাস মার্কটা তুলে চলে যাব। স্যার তখন আমাকে লাথি মেরে সরিয়ে দেন। তার পরও যখন খাতা ফেরত চাই তখন স্যার আমার গালে থাপ্পড় মারেন। তখন সত্যিই ইচ্ছে করছিল ছাদ থেকে লাফিয়ে মরে যাই।'

তবে অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। তারা বানিয়ে বানিয়ে বলছে। পরীক্ষা কক্ষে পরীক্ষার্থী গোপনে অ্যান্ড্রয়েড ফোন নিয়ে আসে। একাধিকবার চাওয়ার পরও তারা ফোন জমা দেয়নি। তখন আমরা তাদের সার্চ করি। এ সময় তাদের কাছে ফোন পাওয়ায় তাদের পরীক্ষাপত্র রেখে দিই।'

বুধবার দুপুরে তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থীরা রফিকুল ইসলামকে বহিস্কার দাবি জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বেদৌরা বিনতে হাবীবের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। অধ্যক্ষ বেদৌরা বলেন, 'শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী রফিকুল ইসলামকে সব ধরনের দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে এ ঘটনার জন্য শোকজ করে ৫ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পুনরায় পরীক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করব।'

তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ বেলা রানী সিংহ বলেন, 'আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। পরীক্ষা কক্ষে কোনো পরীক্ষার্থীর কাছে ফোন পাওয়া গেলে পরীক্ষক পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করতে পারেন। কিন্তু ৩ ঘণ্টা খাতা আটকে রাখা কোনো নিয়মের মধ্যে পড়ে না। আর ফোন নিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করার মানে হচ্ছে, তাদের ব্যবস্থাপনাতেও ত্রুটি ছিল।'


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002316951751709