বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ.পি.জে. আবদুল কালাম এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তার পুরো নাম আবুল পাকির জয়নুল-আবেদিন আবদুল কালাম। তিনি ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ অক্টোবর ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের রামেশ্বরমে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পদার্থবিদ্যা বিষয়ে সেন্ট জোসেফস কলেজ থেকে এবং বিমান প্রযুক্তিবিদ্যা (এরোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং) বিষয় নিয়ে মাদ্রাজ ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে পড়াশোনা করেছিলেন।
চল্লিশ বছর তিনি প্রধানত রক্ষা অনুসন্ধান ও বিকাশ সংগঠন (ডিআরডিও) ও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (ইসরো) বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান প্রশাসক হিসেবে কাজ করেন। ভারতের অসামরিক মহাকাশ কর্মসূচি ও সামরিক সুসংহত নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও উৎক্ষেপক যান রকেট উন্নয়নের কাজে তার অবদানের জন্য তাকে ‘ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র মানব’ বা ‘মিসাইল ম্যান অব ইন্ডিয়া’ বলা হয়।
কালামের পরিবার ছিলো অত্যন্ত গরিব। অল্প বয়স থেকেই পরিবারের ভরণপোষণের জন্য তাকে কাজ করা শুরু করতে হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপ্ত করার পর পিতাকে সাহায্য করার জন্য তাকে সংবাদপত্রে লেখালিখি শুরু করতে হয়। বিদ্যালয়ে তিনি ছিলেন সাধারণ মানের ছাত্র। কিন্তু তার শিক্ষাগ্রহণের তীব্র বাসনা ছিলো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তিনি পড়াশোনা করতেন ও অঙ্ক কষতেন। রামনাথপুরম স্কোয়ার্টজ ম্যাট্রিকুলেশন স্কুল থেকে শিক্ষা সম্পূর্ণ করার পর কালাম তিরুচিরাপল্লির সেন্ট জোসেফস কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে সেই কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক হন। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে পোখরান-২ পরমাণু বোমা পরীক্ষায় তিনি প্রধান সাঙ্গঠনিক, প্রযুক্তিগত ও রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করেন। এটি ছিলো ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে স্মাইলিং বুদ্ধ নামে পরিচিত প্রথম পরমাণু বোমা পরীক্ষার পর দ্বিতীয় পরমাণু বোমা পরীক্ষা। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে কালাম তৎকালীন শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি ও বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। পাঁচ বছর এই পদে আসীন থাকার পর তিনি শিক্ষাবিদ, লেখক ও জনসেবকের সাধারণ জীবন বেছে নেন।
ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ভারতরত্নসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছিলেন কালাম। তার বিজ্ঞানের কৃতিত্ব ও রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার দায়িত্ব পালন ভারতের কাছে স্মরণীয়। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে এ.পি.জে. আবদুল কালাম মৃত্যুবরণ করেন।