নির্বাচন কমিশন যখন তপশিল ঘোষণা করবে, তখন থেকেই বর্তমান সরকার ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সংবিধান সংশোধনের জন্য ৩০ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয় অভিমুখে ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার অধিকার তাদের আছে। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও অবৈধ বলে ঘোষণা করেছেন সর্বোচ্চ আদালত। এর প্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদ পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করেছে। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারা ফিরিয়ে আনা বা সংবিধান সংশোধনেরও কোনো সম্ভাবনা নেই।
সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে মন্ত্রিসভা তো ছোট হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য সেই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি সবাইকে নিয়ে একটি নির্বাচন করার চেষ্টা করছিলেন। সে সময় বিরোধী দলীয় নেতাকে প্রধানমন্ত্রী টেলিফোন করেছিলেন, কিন্তু তিনি তা ধরেননি। সেক্ষেত্রে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দেও নির্বাচন নিয়ে তিনি আলোচনা করেন। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নির্বাচনে যান। কিন্তু প্রতিবারই বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন নষ্ট করার সব পদক্ষেপ নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, সংবিধানে পরিস্কার বলা আছে, নির্বাচন কখন হবে। সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তপশিল ঘোষণা করবে। আমরা চাই, সবাই নির্বাচনে আসুক এবং নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপুর্ণ হোক।
সংবিধান অনুযায়ী আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ৩০ জানুয়ারি- এই ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে হিসেবে অক্টোবরের ৩০ থেকে থেকেই নির্বাচনকালীন সরকার কিনা, সংবিধান কী বলে- এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই। এখন কথা হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দেও এটি করেছিলেন। এখন তার ওপর নির্ভর করে, তিনি কীভাবে নির্বাচনকালীন সরকার দেবেন বা কী করবেন, কী করবেন না। আবার সংবিধান অনুযায়ী যদি আমরা বলি, যখন নির্বাচন কমিশন তপশিল ঘোষণা করবে, সেই মুহূর্ত থেকে এ সরকার নির্বাচনকালীন সরকার।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যদের অপরাধীকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, এ ধরনের কোনো ক্ষমতা আনসার বাহিনীকে দেওয়া হচ্ছে না। এই আইনটা নিয়ে যেসব বিষয়ে প্রশ্ন ছিল, সেসব ব্যাপার দেখা হয়েছে। তদন্তের কথা বলা হয়েছে, পুলিশ বাহিনীর বক্তব্যগুলো প্রাধান্য দিয়ে এই আইনটা পাস হবে।
আইনটিতে বলা হয়েছে, কোনো অপরাধ যদি আনসার বাহিনীর সামনে ঘটে, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ধরে পুলিশে সোপর্দ করতে পারবে- একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি যেটা জানি আইনটি কিছু কিছু জায়গায় সংশোধন করা হবে। সেটা যখন সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে যাবে, তখন সেগুলো স্পষ্ট করা হবে।