জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একের পর এক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষ থামাতে গিয়েও বার বার ব্যর্থ হচ্ছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তাদের নেতৃত্ব উপেক্ষা করেই চলছে একের পর এক সংঘর্ষ। এ ছাড়াও তাদের উপস্থিতিতে সংঘর্ষের মাত্রা আরও বেড়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
সর্বশেষ গত বুধবার ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনাস্থলে জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক গিয়েও কর্মীদের ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে সংঘর্ষের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছে ছাত্রলীগের একাংশ।
চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ বাণিজ্যের টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শহীদ সালাম বরকত হলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। এর আগে গত বছরের ২ অক্টোবর ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে মীর মশাররফ হোসেন হল ও আল বেরুনী হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এইসব ঘটনাতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে।
এসব ঘটনায় সভাপতি কিংবা সম্পাদক তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে করে ক্যাম্পাসে বিচারহীনতা ও কর্তৃত্বহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। ফলে সভাপতি এবং সম্পাদককে উপেক্ষা করে আলাদাভাবে হলে রাজনীতি শুরু করে নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মাধ্যম থেকে উপার্জিত আয়ের বড় অংশ সভাপতি ও সম্পাদক নিজেদের পকেটস্থ করে। আবার জাবিতে ১৪৪৫ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের যে কাজ শুরু হয়েছে তা নিয়েও ছাত্রলীগের নেতাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। হলভিত্তিক রাজনীতিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আড়াল করে অন্য একটি বলয় তৈরি হয়েছে।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি কর্মীকেই আমাদের কথা শুনতে হবে। যারা আমাদের কথা শুনছে না তারা ছাত্রলীগের কর্মী হতে পারে না। যেহেতু এগুলো হলের সংঘর্ষ, তাই আমরা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছি। সম্পাদক এস এম আবু সুফিয়ান চঞ্চল বলেন, উসকানি দিলে তো ওখানে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। পোলাপান কথা না শুনলে কি করতে পারি! বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্যাঞ্জাম করা তো ভালো না। আমি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। এখন যে অভিযোগ এসেছে তা ভিত্তিহীন।