কথিত মাদ্রাসা যেন বন্দিশিবির শিশু কাওসারের মৃত্যু নির্যাতনে!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর পল্লবীতে তিন রুমের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে চলছিল ‘মারকাযু তারতীলিল কুরআন’ নামের মাদ্রাসা। এ প্রতিষ্ঠানের বৈধ অনুমোদন নেই বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সোমবার ভোরে সেখানে হাফিজুর রহমান কাওসার (৯) নামের একটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এখন তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে প্রিন্সিপাল জোনাইদ বিন ইসহাককে। শিক্ষার নামে এখানে শিশুদের বন্দি রেখে নির্যাতন চলত বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় কাওসারের মৃত্যু ঘটেছে বলে স্বজনরা দাবি করেছে।

পল্লবী থানার ওসি দাদন ফকির  বলেন, শিশু কাওসারের মৃত্যু হত্যা না আত্মহত্যাজনিত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুরো বিষয়টি রহস্যজনক। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল জোনাইদ বিন ইসহাককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

অনুমোদনহীন মাদ্রাসায় ১১টি শিশুকে কার্যত বন্দি করে রাখা হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। তাদের মারধর করা হতো, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হতো না বলে অভিযোগ মিলেছে। সব কিছুই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

কাওসারের বাবা দুলাল মিয়া জানান, পল্লবীর ১২ নম্বর সেকশনে অবস্থিত মাদ্রাসায় ২৩ দিন আগে ভর্তি করা হয় কাওসারকে। রবিবার তার মা দেখা করতে গেলে প্রিন্সিপাল অনুমতি দেননি। পরের সকালে কাওসারের মৃত্যু সংবাদ মিলেছে। তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে বলে ধারণা।

শিশু কাওসারের মৃত্যুর ঘটনায় পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। তাতে আসামি করা হয়েছে প্রিন্সিপাল জোনাইদ বিন ইসহাক, তাঁর স্ত্রী ও দুই শিক্ষককে। সোমবার ফজরের নামাজের পর কাওসারের লাশ উদ্ধার হলে ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে দাবি করেন প্রিন্সিপাল জোনাইদ বিন ইসহাক। ময়নাতদন্তের পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের শিক্ষক ডা. সোহেল কবির জানান, কাওসারের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মৃত্যুর আগে শিশুকে বলাৎকারসহ নির্যাতন করা হয়েছে কি না, তা যাচাইয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভাড়া ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে ১১টি শিশুকে রেখে কোরআন শিক্ষা দেওয়া হচ্ছিল। পাশের একটি রুম অধ্যক্ষের বিশ্রামের জন্য। কথিত এ মাদ্রাসা প্রকৃতপক্ষে কী হতো সে ব্যাপারে মুখ খুলছেন না সংশ্লিষ্টরা। তবে উদ্ধার পাওয়া শিশুরা মারধরের কথা জানিয়েছে।

ভবনের দারোয়ান মিনহাজুল বলেন, ‘শিশুরা দিনের বেশির ভাগ সময় বাসার ভেতরেই থাকত। সোমবার সকালে মৃত্যু সংবাদ শুনে তিনতলায় গিয়ে দেখা যায় লাশ পড়ে আছে। ’

ভবনের নিচতলায় অবস্থিত কসমো নামের স্কুলের প্রহরী রহমত উল্লাহ বলেন, ‘মাদ্রাসার ভেতরে কখনো কাউকে ঢুকতে দেওয়া হতো না। আর শিশুদের ভেতরে আটকে রাখা হতো। ’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050849914550781