দক্ষিণ আমেরিকার দেশ একুয়েডরের একজন বয়স্ক মহিলার মৃত্যুর পর তার জন্য যেসব আত্মীয় শোক প্রকাশ করতে এসেছিলেন তারা অবাক হয়ে দেখলেন যে কফিনের মধ্যে তিনি তখনও বেঁচে আছেন, নিঃশ্বাস নিচ্ছেন।
বাবাহয়ো শহরের এক হাসপাতালের ডাক্তার স্ট্রোকের পর বেলা মন্টোয়া নামে ৭৬-বছর বয়সী ঐ নারীকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর তার মরদেহ একটি কফিনে রাখা হয় এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য একটি ফিউনারাল হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। তার দাফনের আগে তার আত্মীয়স্বজনেরা সেখানে তার কফিন পাহারা দিয়ে বসেছিলেন।
কিন্তু প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর যখন তারা শেষকৃত্যের জন্য তার পোশাক বদলানোর জন্য কফিনটি খুললেন তখন মহিলাটি সজোরে নিশ্বাস নিয়ে উঠলেন।
তার ছেলে গিলবার্ট বালবেরান যে মুহূর্তে বুঝতে পেরেছিলেন যে তার মা তখনও বেঁচে আছেন, সেই মুহূর্তটি বর্ণনা করে বলেন: "আমার মা তার বাম হাত নাড়াতে শুরু করলেন, তার চোখ খুলে গেল এবং তিনি মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়ার চেষ্টা করলেন; শ্বাস নিতে তার কষ্ট হচ্ছিল।”
উপস্থিত আত্মীয়দের একজনের তোলা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ঐ নারী একটি খোলা কফিনে শুয়ে আছেন, শ্বাস নিতে তার কষ্ট হচ্ছে, এবং অন্য একজন অভিযোগ করছেন তারা যে অ্যাম্বুলেন্সকে ডেকেছেন তা তখন এসে পৌঁছেনি।
এর কয়েক মিনিট পর দমকলকর্মীরা এসে বেলা মন্টোয়াকে কফিন থেকে স্ট্রেচারে তুলে নিয়ে যান এবং তাকে আবার সেই একই হাসপাতালে ফিরিয়ে নিয়ে যান যেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল।
তার ছেলে একুয়েডরের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার মা এখন হাসপাতালের আইসিউতে আছেন, এবং তিনি কথা বলছেন।
"আমার মাকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে। তার হার্টের অবস্থা স্থিতিশীল,” তাকে উদ্ধৃত করে সংবাদপত্র এল ইউনিভার্সো এক খবরে জানিয়েছে।
এই ঘটনাটি তদন্ত করে দেখতে একুয়েডরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেছে।
মি. বালবেরান বলছিলেন, তিনি তার মাকে প্রায় সকাল ন’টায় হাসপাতালে নিয়ে যান" এবং দুপুরবেলা একজন ডাক্তার আমাকে বলেন যে [তিনি] মারা গেছেন।"
তিনি জানান, এমনকি তার মায়ের জন্য একটি মৃত্যুর সার্টিফিকেটও জারি করা হয়, যেখানে বলা হয়েছিল যে তিনি স্ট্রোকের পরে কার্ডিওপালমোনারি অ্যারেস্টে মারা গেছেন।
তবে বেলা মন্টোয়াই একমাত্র ব্যক্তি নন যিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করার পরও ‘বেঁচে’ উঠেছেন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের একটি ফিউনারাল হোমে শুয়ে থাকা ৮২-বছর বয়সী এক নারীকে শ্বাস নিতে দেখা যায়। তিন ঘণ্টা আগে একটি নার্সিং হোমে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল।
সূত্র : বিবিসি বাংলা