করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে শিক্ষা প্রশাসন

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনা সংক্রমণের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে শিক্ষা প্রশাসন। সর্বশেষ সিন্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি রয়েছে। এরপর সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে নাকি ছুটি আরও বাড়বে- সেই সিদ্ধান্ত আগামী দু’একদিনের মধ্যে জানা যাবে বলে গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন রাকিব উদ্দিন।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায় এদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তারা প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়ার তৎপরতা চালাচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই সময়ে (বছরের শেষ সময়) প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে কোন শ্রেণী কার্যক্রম হয় না। শুধুমাত্র পরীক্ষা নেয়া ও ফল প্রকাশ করা হয়। এ কারণে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কোন কারণ নেই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব ও জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর শেখ ইকরামুল কবির বলেন, ‘এই সময়ে যেহেতু কোন ক্লাশ হয় না, সাধারণত নভেম্বরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা হয়। ডিসেম্বরের প্রথম দিকে বার্ষিক পরীক্ষা হয়। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে এবার যেহেতু সব পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে, তাহলে কোন যুক্তিতে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হবে? করোনা সংক্রমণ কী শেষ হয়ে গেছে? তা না হলে ছাত্রছাত্রীদের কেন ঝুঁকিতে ফেলার চিন্তা? আমি মনে করি, এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখাই সমীচীন হবে।’

১৪ নভেম্বরের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানাবে আপনাদের।’ তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘দেখেন উনারা (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) কাল-পরশুই জানাবেন।’

করোনা সংক্রমণের কারণে এবার সমাপনী এবং এসএসসি ও সমপর্যায়ের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি ও সমপর্যায়ের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হবে। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা এবং মাধ্যমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষা নেবে না সরকার।

দেশে প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট চার লাখ ২১ হাজার ৯২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে দেশে করোনায় মোট ছয় হাজার ৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১১৫টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৪২টি নমুনা পরীক্ষা করে এক হাজার ৬৮৩ জনের করোনা শনাক্ত এবং ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ১৭ শতাংশ। করোনার কারণে গত ১৬ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তাভাবনা

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে প্রাথমিক থেকে হাইস্কুল পর্যায়ে কোন শ্রেণী কার্যক্রম হয় না। এই সময়ে সমাপনী ও বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হয়, এরপর পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে প্রায় আট মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণী কার্যক্রম মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে আগামী বছরের এসএসসি ও সমপর্যায়ের পরীক্ষার্থী এবং এইচএসসি ও সমপর্যায়ের পরীক্ষার্থীদের জন্য সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর শাহেদুল কবির চৌধুরী বলেন, ‘স্কুল-কলেজ খোলার কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষা ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টি নিয়ে আমাদের মাঠ পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মতামত নেয়া হচ্ছে। এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয় ফেব্রুয়ারির শুরুতে, আর এইচএসসি শুরু হয় এপ্রিলের শুরুতে। আগামীতে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দেবে তারা গত মার্চ থেকেই শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত। তাদের জন্য সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তাভাবনা হচ্ছে, তবে বিষয়টি এখনও সিদ্ধান্ত পর্যায়ে আসেনি।’

প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে স্কুল পর্যায়ে শ্রেণী কার্যক্রম না থাকলেও করোনা সংক্রমণের মধ্যেই বারবার প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়ার তৎপরতা চালাচ্ছে মন্ত্রণালয়ের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ভিন্নমতও রয়েছে। তারা বলছেন, বারবার কেন বিদ্যালয় খুলে দেয়ার কথা বলা হচ্ছে তা বোধগম্য নয়।

সবশেষ তৎপরতা অনুযায়ী, আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার চিন্তাভাবনা করছে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকের মৌলিক সক্ষমতা তৈরিতে ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরির কাজ শুরু করা হয়। বিদ্যালয় খোলা সম্ভব হলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে পরবর্তী ক্লাসে তোলা হবে।

জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৯ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও ১৪ দিন ছুটি বাড়ানোয় সেটি সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরির কাজ শুরু করেছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)। শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণের সক্ষমতা তৈরিতে এ সিলেবাসটি তৈরি করা হচ্ছে। আগামী ১৫ নভেম্বরের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হলে সেটি কার্যকর করে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে তোলা হবে। তবে ১৫ নভেম্বরের পর প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা সম্ভব না হলে স্ব স্ব বিদ্যালয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে পঞ্চম শ্রেণীসহ সব ক্লাসের সনদ বিতরণ করা হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে যে কদিন সময় পাওয়া যাবে সে কদিন পড়িয়ে পরবর্তী ক্লাসে নেয়া হবে। আমরা ৩০ দিনের ও ১৫ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যখনই স্কুল খোলা সম্ভব হবে শিক্ষার্থীদের সেটি পড়িয়ে পরবর্তী ক্লাসে তোলা হবে। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’

এনইউ’র মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনইউ) অনুষ্ঠিত ২০১৮ সালের অনার্স চতুর্থ বর্ষের (বিশেষ) মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। করোনা সংক্রমণের কারণে এ পরীক্ষাগুলো স্থগিত করা হয়েছিল। স্থগিত থাকা ওই মৌখিক পরীক্ষা বিষয়ওয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হচ্ছে। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে অনলাইনে মৌখিক পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হবে। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

গতকাল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দফতরের পরিচালক ফয়জুল করিম জানান, পরীক্ষার কেন্দ্রের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (www.nubd.info)) এ পাওয়া যাবে। পরীক্ষার্থীদের নিজ নিজ কলেজের মাধ্যমে পরীক্ষা কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য জানানো হয়েছে।

বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ দেয়ার দাবি

বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ দেয়াসহ তিন দফা দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন ‘জাতীয় কিন্ডারগার্টেন স্কুল কলেজ ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ’ এবং ‘বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল-কলেজ অ্যাসোসিয়েশন’।

কর্মসূচিতে ঐক্য পরিষদের সভাপতি আহসান সিদ্দিকী বলেন, ‘দেশের প্রায় সব কিন্ডারগার্টেন স্কুল-কলেজ ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব অর্থায়নে ভাড়াবাড়িতে পরিচালনা করে আসছি। সারাদেশে প্রায় ৬৫ হাজারের মতো এ ধরনের প্রতিষ্ঠান আছে। এতে প্রায় ১২ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োজিত। এসব প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত টিউশন ফি দ্বারা পরিচালিত হয়।’

গত ১৬ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এরপর থেকে প্রায় সব প্রতিষ্ঠান কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এসব কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও কলেজ আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে এখন পর্যন্ত ৮ মাসের বাড়িভাড়া দেয়া সম্ভব হয়নি। এমনকি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বাড়িওয়ালারাও প্রতিনিয়ত ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে শতকরা ৮০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে এবং লাখ লাখ শিক্ষক কর্মচারী ও পরিচালক বেকার হয়ে যাবে।’

শিক্ষকদের অন্য দুটি দাবি হলো- বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরিস্থিতির দুর্যোগকালে কিন্ডারগার্টেন স্কুল-কলেজ ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান পরিচালকদের উদ্যোক্তা ঘোষণার মাধ্যমে সহজশর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা এবং ২০২১ সালের ভর্তির সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা দেয়া।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035190582275391