ভোটকেন্দ্রের মতো হবে করোনার টিকাকেন্দ্র

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনার টিকাকেন্দ্র হবে অনেকটা ভোটকেন্দ্রের মতো। ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকে। নির্দিষ্টসংখ্যক ভোটার থাকে। ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত করার ব্যবস্থা থাকে। গোপনীয়তা রক্ষা করে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। অনেকটা এমন ব্যবস্থা রেখে করোনার টিকাদানের কেন্দ্র পরিচালনার পরিকল্পনা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সোমাবার (১৮ জানুয়ারি) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন শিশির মোড়ল। 

প্রতিবদনে আরও জানা যায়, জাতীয় নির্বাচনে বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয় সাধারণত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, কমিউনিটি সেন্টারে। আর করোনার টিকাকেন্দ্র হবে ইউনিয়ন পরিষদে, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, জেলা বা সদর হাসপাতালে, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, বিশেষায়িত হাসপাতালে, পুলিশ হাসপাতালে, বিজিবি হাসপাতালে, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে এবং বক্ষব্যাধি হাসপাতালে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাতৃ, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর মো. শামসুল হক জানিয়েছেন, সারা দেশে এ রকম ৭ হাজার ৩৪৪টি টিকাকেন্দ্র হবে।

১৮ বছর বয়স না হলে কেউ ভোট দিতে পারেন না। করোনার টিকাও ১৮ বছরের কম বয়সী কাউকে দেওয়া হবে না। এ ছাড়া গর্ভবতী মাকে করোনার টিকা দেওয়া হবে না। টিকা নেওয়ার জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন করলে টিকাগ্রহীতা ‘কোভিড-১৯ টিকাদান কার্ড’ পাবেন।

কার্ডে ব্যক্তির নাম, বয়স, জন্মতারিখ, মা-বাবার নাম, ঠিকানার পাশাপাশি নিবন্ধন নম্বর ও নিবন্ধনের তারিখ থাকবে। থাকবে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর। টিকা নেওয়ার দিন কার্ডটি সঙ্গে করে কেন্দ্রে আসতে হবে।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিকা দেওয়ার তারিখ ও টিকাকেন্দ্রের নাম গ্রহীতাকে মুঠোফোনে খুদে বার্তার (এসএমএস) মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘একটি কেন্দ্রে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ জনকে করোনার টিকা দেওয়া হবে। ব্যক্তি যাচাই, সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর বা টিপসই নেওয়া এবং ইনজেকশনের মাধ্যমে টিকা দিতে সব মিলে একেক জনের জন্য ৭ থেকে ১০ মিনিট সময় লাগবে।’

টিকা দেওয়ার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে ছয়জনকে নিয়োগ করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এঁদের দুজন স্বাস্থ্যকর্মী, এঁরাই টিকা দেবেন। বাকি চারজন স্বেচ্ছাসেবক, এঁরা ব্যবস্থাপনার কাজ করবেন। এর বাইরে কেন্দ্রে কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রাখার চিন্তা চলছে, যেমন থাকে নির্বাচনের সময়।

কেন্দ্র ব্যবস্থাপনার যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তাতে বলা হচ্ছে, প্রতিটি কেন্দ্রের প্রবেশমুখে টিকাগ্রহীতাদের নামের তালিকা টাঙানো থাকবে। কেন্দ্রে ঢোকার সময় একজন স্বেচ্ছাসেবক কার্ড আছে কি না তা দেখবেন, একজন দেখবেন টাঙানো তালিকার সঙ্গে কার্ডের তথ্যের মিল আছে কি না।

টিকা নেওয়ার আগে প্রত্যেক ব্যক্তিকে একটি সম্মতিপত্রে সই করতে হবে অথবা আঙুলের ছাপ দিতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিকাকেন্দ্রে টিকাগ্রহীতাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা থাকবে। টিকা দেওয়ার জায়গাটি এমন হবে যেন গোপনীয়তা রক্ষা হয়, হতে পারে তা পৃথক কক্ষ বা পর্দা দিয়ে ঘেরা জায়গা। অনেকটা ভোটকেন্দ্রের বুথের মতো জায়গা হবে।

ভোট দেওয়ার পর কাউকে ভোটকেন্দ্রে থাকতে দেওয়া হয় না। কিন্তু টিকা দেওয়ার পরপরই কোনো ব্যক্তিকে কেন্দ্র ত্যাগ করতে দেওয়া হবে না। একটি পৃথক কক্ষে টিকা নেওয়ার পর অপেক্ষা করতে বলা হবে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক ব্যক্তিকে টিকা নেওয়ার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে অনুরোধ করব। এই সময়টা পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হয়েছে। কারও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, সকাল ১০টায় টিকা দেওয়া শুরু হবে।

প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে ব্যানার টাঙানো হবে বা পোস্টার লাগানো হবে। তাতে করোনা ও টিকা সম্পর্কে তথ্য ও বার্তা থাকবে। আজকাল অবশ্য অনেক ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) কীভাবে ভোট দিতে হয়, তার নির্দেশনা দেওয়া থাকে।

করোনার টিকাকেন্দ্র ভোটকেন্দ্রে মতো হচ্ছে কি না জানতে চাইলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শক মুশতাক হোসেন বলেন, পার্থক্য কিছু আছে। যেমন, মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসে ভোট দিতে, আর টিকাকেন্দ্রে আসবে টিকা নিতে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024609565734863