করোনার মধ্যেই মেডিকেল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতিটি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা হবে। নার্সদের পরীক্ষা হবে। স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ২২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও পরীক্ষা নেওয়া হবে। করোনার মধ্যে এই পরীক্ষা বন্ধ থাকবে না।

শনিবার মানিকগঞ্জে ১০টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিকেলে জেলা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠান করা হয়। এতে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. আখতারুজ্জমান সভাপতিত্ব করেন। শনিবার (২১ নভেম্বর) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায় অনুষ্ঠানে জাহিদ মালেক বলেন, করোনার সময়ে ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে একটি বছর নষ্ট হয়ে যাবে, তা ঠিক হবে না। এ জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মানিকগঞ্জের ৬টিসহ চারপাশের ১০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমিউনিটি ভিশন সেন্টার থাকবে। প্রতিটিতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন। এসব কেন্দ্রে চোখের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের সেবা দেওয়া হবে। চোখের সমস্যা জটিল হলে এসব কেন্দ্র থেকে অনলাইনে যোগাযোগ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে রোগীকে সেবা দেওয়া হবে।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যাঁরা চোখের সমস্যায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাতে পারেন না, তাঁরা নিজের এলাকা থেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে বিনা মূল্যে চিকিৎসা পাবেন। একটি মানুষ যেন বিনা চিকিৎসায় কষ্ট না করেন বা মারা না যান, সেটা আমাদের সংকল্প।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। স্বাস্থ্যসেবা দিতে হলে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। মানিকগঞ্জ ঢাকার খুব কাছের হলেও স্বাস্থ্যসেবায় খুব পিছিয়ে ছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর হলেও এ জেলার লোকজন খুব একটা উন্নয়ন পাননি। অন্যান্য জেলার তুলনায় এখানে স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থার মান ভালো।

জাহিদ মালেক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশে স্বাস্থ্যসেবার মান অনেক এগিয়ে গেছে। প্রতিটি জেলা সদরের হাসপাতাল ২৫০ শয্যার হচ্ছে। ৩৮টি মেডিকেল কলেজ নির্মিত হচ্ছে। প্রতিটি জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হবে। এটি প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার এবং তা বাস্তবায়ন করা হবে। চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে অনুমোদন হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দুটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ হবে। প্রতিটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে।

করোনা মোকাবিলার বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার সময়ে অন্যান্য মন্ত্রণালয় বা দপ্তর লকডাউন (অবরুদ্ধ) ছিল। শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্যসেবায় কোনো লকডাউন ছিল না। প্রতিটি মুহূর্তে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। অনেকেই অনেক সমালোচনা করেছেন। কিন্তু কাজটা তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ই করেছে। প্রায় ১২০ জন চিকিৎসক মৃত্যুবরণ করেছেন। স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত অন্য কর্মীরাও মৃত্যুবরণ করেছেন। জনগণ বিচার করে কাজের। তাঁরা কাজ চান।

জাহিদ মালেক বলেন, করোনা মোকাবিলায়ও বাংলাদেশ অনেক ভালো করেছে। ইউরোপ, আফ্রিকার দেশগুলো এমনকি ভারতও করোনায় বিপর্যস্ত। অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। সেই তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো আছে। মৃত্যুহারও পৃথিবীর অন্য দেশের তুলনায় ভালো এবং সুস্থতার হার বেশি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। বাংলাদেশে যেন এই বিপর্যয় না ঘটে, আমাদের সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। করোনার প্রতিষেধক হিসেবে ভ্যাকসিনের চুক্তি করা হয়েছে। বাজারে এলেই আমরা তা পেয়ে যাব। তার আগে আমাদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। করোনা প্রতিরোধ বা সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্কই বড় হাতিয়ার। “মাস্ক নেই, সেবাও নেই” কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে সব মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনায় আমেরিকা ও ইউরোপে অনেক লোক মারা যাচ্ছেন। অনেকে সংক্রমিত হচ্ছেন। এখন শীতের সময়। এ কারণে এখন থেকেই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047249794006348