করোনায় ঝুঁকিতে দক্ষিণ এশিয়ার ৬০ কোটি শিশু

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

গত কয়েক দশকজুড়ে দক্ষিণ এশিয়ায় শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অন্যসব ক্ষেত্রের অগ্রগতি ম্লান করে দিচ্ছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারী। টিকাদান, পুষ্টি ও অন্যসব গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে আগামী ছয় মাসে ৪ লাখ ৫৯ হাজার শিশু ও মায়ের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে। ২৩ জুন ‘লাইভস আপএন্ডেড’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে ইউনিসেফ এ তথ্য জানায়।

দক্ষিণ এশিয়ায় ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক জ্যাঁ গফ বলেন, লকডাউন ও অন্যসব পদক্ষেপসহ করোনা মহামারীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নানাভাবে শিশুদের জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। তবে সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রায় শিশুদের ওপর অর্থনৈতিক সংকটের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে। এখনই জরুরি পদক্ষেপ না নিলে কোভিড-১৯ পুরো একটি প্রজন্মের আশা ও ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এ অঞ্চলের লাখ লাখ পরিবারের পুনরায় দারিদ্র্যে নিপতিত হওয়া ঠেকাতে সরকারগুলোকে অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমু হোজুমি বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলার পাশাপাশি বাংলাদেশেও এর ক্রমবর্ধমান ক্ষতির প্রেক্ষাপটে শিশুদের ওপর এর প্রভাবে ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। জীবন রক্ষাকারী টিকাদান কার্যক্রম এবং পুষ্টিজনিত সেবা অব্যাহত রাখতে হবে। বাবা-মায়েরা এসব সেবা অনুসন্ধান করায় এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা সেবা দেয়ায় সবাইকে নিরাপদে থাকা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুলগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদে চালু করতে হবে।

তিনি বলেন, ইউনিসেফ এই সব ক্ষেত্রে সরকারকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘরে অবরুদ্ধ থাকায় সহিংসতা ও নিগ্রহের শিকার অনেক শিশুর কাছ থেকে অভিযোগের সংখ্যা বাড়ছে। ফোনের হেল্পলাইনগুলোয় আসা তথ্য থেকে জানা গেছে- কিছুসংখ্যক শিশু হতাশায় ভুগছে, এর কারণে অনেকে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে শিশুদের জন্য চালু করা একটি হেল্পলাইন মাত্র এক সপ্তাহে সম্ভাব্য ছয়টি আত্মহত্যার ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়- হাম, নিউমোনিয়া, ডিপথেরিয়া, পোলিও এবং অন্যসব রোগের বিরুদ্ধে জীবন রক্ষাকারী টিকাদান কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে হবে। একই সঙ্গে বিশ্বে মারাত্মক রুগ্নতায় আক্রান্ত শিশুদের অর্ধেকেরও বেশি বা প্রায় ৭৭ লাখ শিশুকে সহায়তা করার জন্যও কাজ শুরু করা উচিত। হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়গুলো নিশ্চিত করে যত দ্রুত সম্ভব স্কুলগুলো খুলে দেয়া উচিত।

ইউনিসেফের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, এ অঞ্চলে আগামী ছয় মাসে আরও প্রায় ১২ কোটি শিশু দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় নিপতিত হতে পারে। যা তাদের ইতোমধ্যে দরিদ্র হিসেবে চিহ্নিত হওয়া ২৪ কোটি শিশুর কাতারে নিয়ে যাবে। দরিদ্র পরিবারগুলোর ওপর প্রভাব কমাতে সরকারগুলোর উচিত জরুরি সর্বজনীন শিশু সুবিধা ও স্কুল ফিডিং কর্মসূচিসহ সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলোর দিকে অবিলম্বে^ বেশি করে বরাদ্দ দেয়া। করোনায় অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলজুড়ে পরিবারগুলোর ভীষণ ক্ষতি করছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এবং পর্যটন খাত থেকে আয় কমায় ব্যাপক হারে চাকরি হারানো ও আয় সংকুচিত হওয়ার ঘটনা ঘটছে।

এদিকে, এ বছরের মে মাসে জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের প্রকাশিত একটি স্টাডি অনুযায়ী, করোনা মহামারীর পরোক্ষ কারণে আগামী ছয় মাসে বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ২৮ হাজারেরও বেশি শিশুর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে মৃত্যু হতে পারে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002640962600708