করোনায় ধুঁকছে কারিগরি শিক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

কারিগরি শিক্ষায় কমপক্ষে ৬৫ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যাবহারিক শিক্ষা নিতে হয়। ফলে কারিগরি শিক্ষায় তত্ত্বীয় ক্লাসের চেয়ে ব্যাবহারিকের গুরুত্বই বেশি। করোনাকালে ঝুঁকিতেই পড়েছে ব্যাবহারিকনির্ভর কারিগরি শিক্ষা।

সংশ্লিষ্টরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কারিগরি শিক্ষার চলতি বছরের এসএসসির (ভোকেশনাল) জন্য ৬০ কর্মদিবস ও এইচএসসির (ভোকেশনাল) জন্য ৮৪ কর্মদিবসের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ডিপ্লোমা পর্যায়েও কোর্স ছোট করা হয়েছে। অথচ ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৬৫ শতাংশ এবং ভোকেশনালে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যাবহারিক রয়েছে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে শিক্ষার্থীদের পক্ষে যথাযথ ব্যাবহারিক করা সম্ভব হবে না। এতে তাদের দক্ষতা অর্জনও দুরূহ হয়ে পড়বে।

সংশ্লিষ্টরা, সাধারণ শিক্ষার শিক্ষার্থীরা এক শ্রেণিতে কম পড়লেও পরবর্তী শ্রেণিতে তা সমন্বয় করতে পারে। কিন্তু কারিগরি শিক্ষা দক্ষতানির্ভর। বিশেষ করে এসএসসি বা ডিপ্লোমা শেষে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই চাকরিতে ঢুকে যায়। এখন তাদের যদি ব্যাবহারিকে ঘাটতি থেকে যায়, তাহলে তারা চাকরি জীবনেও জটিলতায় পড়বে। এমনকি তাদের যে দক্ষতার জন্য চাকরিতে নেওয়া হবে তা তারা দেখাতে পারবে না।

করোনায় এক বছর বন্ধ থাকার পর ফেব্রুয়ারি থেকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ ও অষ্টম বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়। প্রতিটি বিষয়ের মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে পরীক্ষা দিতে হয় ৫০ নম্বরের। আর তিন ঘণ্টার পরীক্ষা দুই ঘণ্টা এবং দুই ঘণ্টার পরীক্ষা দিতে হয় এক ঘণ্টা ৩০ মিনিটে। প্রতিটি বিষয়ে পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরকে প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত মোট নম্বরের বিপরীতে রূপান্তরিত করে ফল নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত হয়। এসব শিক্ষার্থীর গত বছরের মার্চের আগে ৮০ শতাংশ ক্লাস ও ব্যাবহারিক শেষ হয়েছিল, কিন্তু পরীক্ষা আটকে ছিল। তাই তাদেরই শুধু পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, কারিগরির কিছু শিক্ষার্থী হয়তো অনলাইনে তত্ত্বীয় ক্লাস করেছে। কিন্তু ব্যাবহারিক ক্লাস করতে না পারায় তাদের তত্ত্বীয় ক্লাসগুলোও কাজে লাগাতে পারছে না। 

রাজধানীর মহানগর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সলিম উল্লাহ সেলিমের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। করোনাকালে পাঠদানের সরকারি নির্দেশনা না মানার অভিযোগ তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। 

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ইদ্রিস আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষাকে কোনোভাবেই মেলানোর সুযোগ নেই। অনলাইনে তত্ত্বীয় ক্লাস নেওয়া গেলেও ব্যাবহারিক নেওয়া যায় না। ব্যাবহারিকের জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, কাঁচামালের প্রয়োজন হয়। যা সরাসরি ক্লাসরুম ছাড়া অসম্ভব। তাই করোনায় কারিগরির শিক্ষার্থীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। আগামীতে তাদের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া উচিত।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0042870044708252