করোনায় ৯১ ভাগ শিশু মানসিক চাপে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর কারণে ৯১ ভাগ শিশু ও তরুণ মানসিক চাপ ও যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছে। ৭৫ ভাগ শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব আরোপের কারণে মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। চ্যালেঞ্জ অনুভব সত্ত্বেও কভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের লড়াইয়ে অবদান রাখতে চায় শিশুরা। আন্তর্জাতিক শিশুকেন্দ্রিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ডভিশনের জরিপে উঠে এসেছে এ তথ্য। সংস্থাটি গত দুই মাসে উন্নয়নশীল ১৩টি দেশে এ জরিপ পরিচালনা করে। শিশু ও তরুণদের অংশগ্রহণে ‘চিলড্রেন ভয়েসেস ইন দ্য টাইম অফ কভিড-১৯’ শিরোনামে এই জরিপে দেখা যায় যে, শিশুরা এই পরিস্থিতিতে মানসিক বেদনা ও শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। তবে বৈশ্বিক এই মহামারী প্রতিরোধে তারাও ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত। রোববার (১০ মে) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন মাহবুব মমতাজী।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই জরিপে ১৩টি দেশের ১০১ জন শিশু ও তরুণের (৫৮ মেয়ে এবং ৪৩ ছেলে) সঙ্গে কথা বলা হয়। এদের বয়স ৮ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। আলবেনিয়া, বাংলাদেশ, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, ব্রাজিল, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, মালি, মঙ্গোলিয়া, নিকারাগুয়া,  পেরু, ফিলিপাইন, রোমানিয়া, সিয়েরা লিওন এবং তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া সিরীয় শিশুদের মধ্যে জরিপ চালানো হয়। মহামারির সময়ে জীবনে ছন্দপতনের জন্য সরাসরি তিনটি কারণকে উল্লেখ করেছে জরিপে অংশ নেওয়া শিশুরা। কারণগুলো হলো- শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া, সামাজিক দূরত্বের কারণে মানসিক বেদনা এবং পরিবারে দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়া। শতকরা ৭১ ভাগ শিশু ও তরুণরা বলছে, স্কুল বন্ধের কারণে তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন ও নিঃসঙ্গ অনুভব করছে।

ওয়ার্ল্ড ভিশন পার্টনারশিপের অ্যাডভোকেসি ও এক্সটার্নাল এনগেজমেন্টের প্রধান ডানা বুজডুসিয়ে বলেন, যদিও করোনা শিশুদের ওপর সন্দেহাতীতভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে তবুও তাদের কমিউনিটি বা সম্প্রদায়কে সাহায্য করার আকাঙ্ক্ষা বা ক্ষমতা কোনোটাই কমাতে পারেনি। তাই সমাজের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য শিশুর ক্ষমতায়ন বিশেষ প্রয়োজন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা হারিয়ে ফেলায় শিশু ও তরুণরা অসমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি শিশু স্কুল মিল থেকে এখন বঞ্চিত। অভিভাবকরা চাকরি এবং জীবিকা হারিয়ে সন্তানদের খাবার জোগাড়ে অক্ষম। শিশুরা আমাদের বলেছে, এ পরিস্থিতিতে দ্বিধা, ভয় এবং হতাশা থেকে তারা বন্ধু এবং স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছে না।
বুজডুসিয়ে আরও বলেন, শিশুরা অসহায় নয়, তারা এই মহামারীর অদৃশ্য শিকার। তারা পরিবর্তনের শক্তিশালী অনুঘটক। শিশুরা সবার সঙ্গে মিলেমিশে তাদের সমাজের ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারে। তাদের অংশগ্রহণের অধিকার যে কোনো বিষয়ে নাটকীয় পরিবর্তন আনতে পারে। সামাজিক পরিবর্তনে শিশু ও তরুণদের অংশগ্রহণ তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং তারা অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় এই বোধ তাদের সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে।

জরিপে ইবোলা ক্ষতিগ্রস্ত কঙ্গোর ১৬ বছর বয়সী অনিতা বলেছে, ‘এমন পরিস্থিতি মোটেও ভালো লাগার কিছু নয়। ইবোলা শেষে আমরা এমন সময়টা শেষ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন আবার করোনাভাইরাস শুরু হয়েছে। যদিও বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘরে বসে থাকলে ভাইরাসের হাত থেকে হয়তো আমরা রক্ষা পাব কিন্তু খাবারের অভাবে আমরা মরেও যেতে পারি।’ ব্রাজিলের ৭ বছর বয়সী লারা বলেছে, ‘সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শের মধ্যে হাত-ধোয়া অন্যতম, কিন্তু যেখানে আমরা থাকি, সেখানে আমাদের কাছে পানি নেই। অনেক পরিবার সপ্তাহে একবার পানি পায়; তাহলে কীভাবে  তারা  স্বাস্থ্যবিধি  পালন করার  সুযোগ পাবে?  তারা তা করতে পারবে না। ফলে সংক্রমণ বাড়বে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034079551696777