করোনা আতঙ্কে ঢাবি বন্ধের দাবি

ঢাবি প্রতিনিধি |

বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও হানা দিয়েছে কোভিড-১৯। ইতিমধ্যেই তিনজনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস। ফলে সারাদেশের মত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ব্যাপক হারে সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

তবে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রচার ছাড়া দৃশ্যমান তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। এমন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের কথাও বলছেন কোনো কোনো শিক্ষার্থী।

সংশ্লিষ্ট জানা গেছে, সরকারিভাবে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে বলা হলেও শিক্ষার্থীদের অনেককে একসাথে ক্লাস করতে হচ্ছে। তাছাড়া ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের সমাগম তো আছেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলের প্রতিটি কক্ষে গড়ে চার থেকে পাঁচজন এবং গণরুমগুলোতে ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী একসাথে থাকেন। ফলে কোনো শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হলে এটির ব্যাপক সংক্রমণ ঘটবে। 
সরেজমিন দেখা গেছে, পাঠ্য কার্যক্রমের বাহিরেও প্রতিদিন রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোতে শিক্ষার্থীরা সমবেত হচ্ছে। নিজেদের মধ্যে করমর্দনও করছেন তারা। তাই মহামারি আকারে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলের শিক্ষার্থী হাসান মানজুর বলেন, হলগুলোতে আমাদের গাদাগাদি করে থাকতে হয়। এখানে কেউ যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে সবার মধ্যেই এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে এই আতঙ্কে আছি। করোনা প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

এদিকে, করোনা ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রচার ছাড়া দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি কর্তৃপক্ষকে। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হলের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকার আহবান জানানো হয়। লক্ষণ দেখা দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে পরামর্শ  নেওয়ার কথাও বলেছেন তারা।

তবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. সারওয়ার জাহান মুক্তাফীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাস শনাক্ত বা এর চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা মেডিকেল সেন্টারের নেই। 

তিনি বলেন, এটি এত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা যে, এখানে কারো সংক্রমণ হলে সেটি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সরকার ঢাকার মাত্র তিনটি জায়গায় করোনাভাইরাস শনাক্তের ব্যবস্থা করতে পেরেছে। আমাদের মেডিকেল সেন্টারই তো এগুলোর মধ্যেই পড়বে না। সচেতনতা আর সাবধান থাকা ছাড়া সারাবিশ্বের কোথাও কিছু করা যাচ্ছে না। 

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি তাদের রুমে থাকে এবং বিদেশফেরত কারো সংস্পর্শে না আসে তাহলে এটি নিয়ে এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সর্বোপরি সবারই সাবধান থাকতে হবে। 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে একই পরামর্শ দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এদিকে, সচেতনতা তৈরিতে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে ‘করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড কনসার্নস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035929679870605