করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে পারে যে কোনো সময়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দিকভ্রান্ত বাংলাদেশ। এখনো সংক্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় স্থিতিশীল রয়েছে। এক মাস সংক্রমণের হার এক দিন বাড়ে এক দিন কমে এমন অবস্থা থাকাটা নিয়ন্ত্রিত বলা যাবে না। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা বলছেন, করোনা সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। যে কোনো সময় সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। শীতকালে ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। মানুষের মধ্যে সর্বজনীন মাস্ক ব্যবহার, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়ার অভ্যাস বাড়ানো এবং পরীক্ষা ও আইসোলেশনের মতো স্বাস্থ্যবিধির কঠোর প্রয়োগের ওপর এ রোগের বিস্তার অনেকটা নির্ভর করবে। বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আবুল খায়ের। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক তথ্য না থাকলেও অনেকেই আশঙ্কা করছেন, শীতকালের আবহাওয়ায় বাংলাদেশে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। তাদের আশঙ্কা, আর্দ্রতা, সূর্যের তাপ, ভিটামিন ডিয়ের অভাব এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ শীতকালে অন্যান্য ভাইরাস ও ফ্লু জাতীয় শ্বাসকষ্টের রোগের লক্ষণ দেখা দেয় বলে এ সময় মানুষ করোনা ভাইরাস নিয়ে আরো বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠতে পারে। এদিকে শুরুর দিকে করোনা ভাইরাস নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ভয়ভীতি ছিল, এখন তা আর নেই বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেছেন। মানুষ অনেকটা বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করছেন। মানুষের এই ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ সংক্রমণ বাড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে।

করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সদস্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, সামনে শীতকাল। শীতে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে বলা যাবে না। শীতকে সামনে রেখে কর্মপরিকল্পনা জরুরি। তিনি বলেন, আমরা লকডাউনে ব্যর্থ হয়েছি। এখন সবকিছু খুলে দিয়েছি। তাই সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহার করতেই হবে। নইলে সামনে বিপদ চলে আসতে পারে। অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, দেশের করোনা সংক্রমণ এক দিন বাড়ে, এক দিন কমে—এটা দেখে ভালো অবস্থা বলা যাবে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিত্সক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ এখন কিছুটা কমার দিকে। কিন্তু এখন কম-বেশি বলা মুশকিল। এক মাস পরিস্থিতি দেখে বলা যাবে, কোন দিকে যাচ্ছে। সবাইকে মাস্ক পরার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, মাস্ক ব্যবহার করে নিজে ও পরিবারকে নিরাপদ রাখুন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন বলেন, বর্তমানে খুব একটা বাড়ছে কিংবা খুব একটা কমছে—তা বলা যাবে না। পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে। আশানুরূপ ভালো খবর নেই। সামনে শীতকালে সংক্রমণের হার বাড়তে পারে। তাই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি বলেন, মাস্ক ব্যবহার করলে ৮০ ভাগ মানুষ করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পারে। ভ্যাকসিন কবে আসবে তার কোনো ঠিক নেই। তাই সবারই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, সার্বিক বিবেচনায় কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিছুটা নিয়ন্ত্রিত মনে হলেও বিপদ যায়নি। এক দিন বাড়ছে, এক দিন কমছে—এটাকে নিয়ন্ত্রণে বলা মুশকিল। এখন সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কিছু দেশকে সফল হিসেবে ভাবা হয়েছিল। কিন্তু এখন সেখানে নতুন সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। কোনো কোনো দেশে দ্বিতীয় দফা শেষ করে তৃতীয় দফায় সংক্রমণ বাড়ছে।’ অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আর ভ্যাকসিনের যেহেতু এদেশে শিগিগরই ট্রায়াল হবে, তাই টিকা যাতে আমরা দ্রুত পাই সেই ব্যাপারে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

নিপসনের সাবেক পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুর রহমান বলেন, দুই-এক দিন বাড়ছে-কমছে, এটা কমা কিংবা বাড়া বলা যাবে না। এক মাস পর পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেন, সামনে শীতকালে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় বলা যায় না। ডা. আব্দুর রহমান বলেন, দেশের ৮০ ভাগ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করে না। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে। সময় থাকতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে জানান তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029199123382568