২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু আজ রোববার। পরীক্ষায় সারা দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কৈলাইল ইউনিয়ন টেকনিক্যাল হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেবে। কিন্তু এবারের পরীক্ষার্থী হয়েও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না কৈলাইল ইউনিয়ন টেকনিক্যাল হাই স্কুলের মেধাবী ছাত্র শাওন মন্ডল। কেননা স্কুল কর্তৃপক্ষের ভুলে তার নিবন্ধন করা হয়নি।
শাওন মণ্ডল জানায়, ‘আমি নিয়মিত স্কুলের সকল বেতন, সেমিস্টার ও রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধ করেছি। তবুও কেন আমি পরীক্ষা দিতে পারব না। আমার বন্ধুরা সবাই পরীক্ষা দেবে, আমি কেন দিতে পারব না? কেন আমার জীবনটা নষ্ট করা হবে। শাওন আরও জানায়, গত মার্চ মাসের ২২ তারিখে স্কুল থেকে আমাদের আনুষ্ঠানিক বিদায় দেওয়া হয়। পরে গত ২৬ এপ্রিল ছিল আমাদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেওয়ার দিন। আমিসহ আমার সহপাঠিরা রেজিস্ট্রেশন ও অ্যাডমিট কার্ড আনতে গেলে জানতে পারি আমার রেজিস্ট্রেশন হয়নি।’
শাওনের বাবা প্রাণতুষ্ট মন্ডল বলেন, ‘আমার ছেলে পরীক্ষা দিতে পারবে না জানতে পেরে হেড স্যারকে ফোন দেই। স্যার আমাকে আশ্বাস দেন দেখি কি করা যায়। পর দিন আবার ফোন দিলে স্যার বলে এবার আর পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব না। সরি এটা ভুল ক্রমে হয়ে গেছে। আগামীবার বিনা খরচে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করব। সরি কি আমার ছেলের হারানো বছর ফিরিয়ে দিতে পারবে?’
প্রাণতুষ্ট আরও বলেন, ‘ক্ষতি যা হইছে আমাদেরই হইছে। তবে আমার ছেলের সঙ্গে যা হয়েছে অন্য কারও সঙ্গে যেন এমন না হয়। তাই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
কৈলাইল ইউনিয়ন টেকনিক্যাল হাই স্কুলের শিক্ষক আব্দুল আজিজ বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে এই নিবন্ধনগুলো হয়েছে। এটা যে কোনোভাবে ভুল ক্রমে হতে পারে। এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ভালো বলতে পারবেন।’
কৈলাইল ইউনিয়ন টেকনিক্যাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘নবম শ্রেণিতে যখন ছাত্র-ছাত্রীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয় তখন শাওন মন্ডল তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নিবন্ধন ফি জমা দেয়নি। তাঁকে সময় দেওয়া হয়েছিল। সেও যোগাযোগ করেনি আর স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভুলে গেলে আর নিবন্ধন করা হয়নি। এসএসসি পরীক্ষার চূড়ান্ত ভাবে নাম আসলে শাওন মন্ডলের নাম না থাকায় আমরা বিষয়টি জানতে পারি। আমি বোর্ডে যোগাযোগ করেছিলাম। তবে এই বছর আর পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ নেই। আগামী বছর শাওন পরীক্ষা দিতে পারবে।’
তবে প্রধান শিক্ষকের দাবি অস্বীকার করে শাওন মন্ডল আজকে পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে এক সঙ্গেই নিবন্ধন ফি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছি। হ্যাঁ আমারসহ কয়েকজনের কাগজপত্র জমা দিতে কিছুদিন দেরি হয়েছিল। এর জন্য এক স্যারের থাপ্পড়ও খেয়েছি। থাপ্পড় খেয়ে কাগজপত্র ও রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিয়েছি। এটা কীভাবে আমাদের ভুল হয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহজালাল লিটন বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। এখানে একটা ছেলের ভবিষ্যতের বিষয়। আগে জানালে আমি বোর্ডে কথা বলে চেষ্টা করতে পারতাম। তবে বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি ওই প্রধান শিক্ষকের কাছে ব্যাখ্যা চাইব। প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’