কলেজছাত্র জিসান হত্যায় জড়িত ১২ ছিনতাইকারী, গ্রেফতার ৯

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর আব্দুল্লাহপুরে কলেজছাত্র জিসান হাবিব হত্যায় জড়িত ছিল ১২ ছিনতাইকারীর একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তারা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে কাজ করত। এদের মধ্যে কেউ কেউ সরাসরি ছিনতাই ও হত্যায় অংশ নিত। কেউ কেউ একটু দূরে দাঁড়িয়ে দেখত পুলিশ বা র‌্যাব আসছে কি-না। আবার চক্রের কেউ ধরা পড়লে তাকে উদ্ধার করতে যেত আরেকটি দল। সেদিন মো. বিপ্লব ও কবির জিসানকে ছুরিকাঘাত করে। তাদের মধ্যে বিপ্লবসহ চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।

চক্রের গ্রেপ্তার অপর সদস্যরা হলো- সুন্দরী সুমন, স্বপন, জাহাঙ্গীর ব্যাপারী ওরফে হৃদয়, তানভীর রহমান নেহাল, মো. জিহাদ, নুরুল ইসলাম রাব্বি ও মো. রাকিব। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন কিশোর হওয়ায় তার নাম উল্লেখ করা হলো না। কবিরসহ পলাতক অপর সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

জিসান হাবিব হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানাতে বৃহস্পতিবার উত্তরা পূর্ব থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের পর ১২ ডিসেম্বর উত্তরা ও গাজীপুরের টঙ্গী থেকে সুন্দরী সুমন ও স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে পাওয়া যায় হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি। এরপর তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে নরসিংদীর রায়পুরা থানার বাঘাইকান্দি চর থেকে বিপ্লব ও এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ধারাবাহিক অভিযানে উত্তরা ও টঙ্গী থেকে বাকি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পলাতক কবির ও নাতি সোহাগের সহায়তায় চক্রের সদস্যরা আব্দুল্লাহপুরসহ উত্তরা-টঙ্গী এলাকায় ছিনতাই করে আসছিল।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, চক্রের কোনো সদস্য ধরা পড়লে তিন-চারজনের একটি দল সাধারণ মানুষ হিসেবে ঘটনাস্থলে গিয়ে 'কী হয়েছে ভাই, দেখি দেখি' বলে কৌশলে ছাড়িয়ে নিত। এই চক্রের বেশিরভাগ সদস্যের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় চুরি, মাদক ও ছিনতাই সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহা  বলেন, এই ছিনতাইকারী চক্রে মোট ১২ জন সদস্য। তারা সবাই পেশাদার ছিনতাইকারী। প্রতিদিনই তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন স্পটে অবস্থান নিয়ে ছিনতাই করত। একদল বিপদে পড়লে অপরদল তাদের সহায়তাও করত। সেদিন বিপ্লব ও কবির ছিনতাই ও ছুরিকাঘাত করলেও অপর সদস্যরা তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সেসব স্বীকার করেছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, ১৮ বছর বয়সী জিসান নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। গত ২৮ নভেম্বর তিনি ঢাকার ধামরাইয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আসেন। এরপর ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তিনি এক আত্মীয়কে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে যান। সেখান থেকে রুহুল আমিন নামের আরেক আত্মীয়ের সঙ্গে বাসে নবীনগর ফিরছিলেন। তাদের বাসটি আবদুল্লাহপুর পৌঁছালে এক ছিনতাইকারী জানালা দিয়ে জিসানের মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। তখন তিনি বাস থেকে নেমে দৌড়ে এক ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন। এ সময় রুহুলও বাস থেকে নেমে তাকে সহায়তা করেন। হঠাৎ আরেক ছিনতাইকারী এসে জিসান ও রুহুলকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে। পরে তাদের শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক জিসানকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033888816833496