দৈনিকশিক্ষাডটকম, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সিটি কলেজের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী কবির হোসেনকে সভাপতি করে কলেজের অ্যাডহক কমিটি করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদরের নব নির্বাচিত জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো:আশরাফুজ্জামান আশুর সুপারিশে তাকে সভাপতি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক পত্রে কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়।
কলেজের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীকে সভাপতি করে কলেজের কমিটি গঠন করায় আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী, কোনো কলেজের কর্মচারী ওই কলেজের সভাপতি হতে পারবেন না। যদিও কবির হোসেন দাবি করেছেন, তিনি চাকরি থেকে পদত্যাগ করেছেন। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিচালনা পর্ষদের সভা না হওয়ায় তার পদত্যাগ পত্রের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তার বিরুদ্ধে জামায়েত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছেন। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জান আশুর সুপারিশে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ও জামায়াত নেতা কবির হোসেনকে কলেজের সভাপতি করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগড়দাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হবি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সিটি কলেজ আমার ইউনিয়নের মধ্যে। কিন্তু আমরা যারা দলীয় নেতাকর্মী আছি আমাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা না করেই কলেজের অফিস সহকারী এবং জামায়াত নেতা মিলনকে কলেজের সভাপতি বানিয়েছেন নতুন এমপি।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার তিন দিনের মধ্যেই যদি জামায়াত নেতাকে কলেজের সভাপতি বানানো হয়। তাহলে সামনের দিনগুলোতে কি হবে বুঝতে বাকি থাকে না।
তবে সাতক্ষীরা-২ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো:আশরাফুজ্জামান আশু দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কলেজের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে জোটের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তাকে আমি সভাপতি বানিয়েছি।
সাতক্ষীরা সিটি কলেজের নতুন অ্যাডহক কমিটির সভাপতি কবির হোসেন মিলন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি কলেজের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ছিলাম, তবে গত মাসে অধ্যক্ষ স্যারের কাছে রিজাইন লেটার জমা দিয়েছি।
এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে সরেজমিনে বুধবার সাতক্ষীরা সিটি কলেজে গেলে কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো শিহাবুদ্দীন উদ্দিনকে কলেজে পাওয়া যায়নি। তবে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গত মাসে কলেজের অফিস সহকারী কবির হোসেন রিজাইন লেটার জমা দিয়েছে। তবে অ্যাডহক কমিটির মিটিং না হওয়ায় তিনি এখনো অফিস সহকারী পদেই আছেন। এসময় দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী কলেজের সভাপতি হয়েছেন।
এসব বিষয়ে শিক্ষকদের মতামত জানার চেষ্টা করা হলে বাধা দেন কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও জেলা জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান।
এসব বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্থানীয় নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মো. আশরাফুজ্জামান আশুর সুপারিশে কবির হোসেন মিলনকে সভাপতি করা হয়েছে। তবে তিনি কলেজের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সেটি গোপন রেখেই কমিটির অনুমোদন নিয়েছেন। যদি কোনো ব্যক্তি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হিসেবে কোনো সময় কর্মরত থাকেন, তবে তিনি ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারবেন না। সাতক্ষীরা সিটি কলেজের বিষয়টি আমি জেনেছি, এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।