কলেজের নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ

নাটোর প্রতিনিধি |

বাগাতিপাড়া উপজেলার লোকমানপুর মহাবিদ্যালয়ে দুটি পদের নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষায় কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শাহাবুদ্দিন তার মেয়ে ও এক আত্মীয়ের স্ত্রীকে নির্বাচিত করায় অন্য প্রার্থী, শিক্ষকসহ অভিভাবক মহল নতুন করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা গ্রহণসহ নিয়োগ প্রদানের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, কলেজের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ল্যাব সহকারী পদে বিজ্ঞপ্তির সূত্র ধরে আবেদন করেন ১৩ জন পরীক্ষার্থী। পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শাহাবুদ্দিনের ছেলে মোস্তাফিজুর ও মেয়ে নাসরিন এবং তাদের আত্মীয়ের স্ত্রী ফাতেমা খাতুনও পরীক্ষার্থী ছিলেন। ১৮ মে নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজে লিখিত পরীক্ষা হয়। এরপর সভাপতির উপস্থিতিতে নিয়োগ বোর্ড না বসে পরীক্ষা হলেই মৌখিক পরীক্ষার প্রশ্ন করেন নাটোর এনএস সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শামসুজ্জামান। পরদিন অধ্যক্ষ ফারুক উদ্দিন বিশ্বাসকে ফলাফল শিট দেওয়া হয়নি। এদিকে ফলাফল শিট নিয়ে সভাপতি এলাকায় ঘোষণা করেন তার মেয়ে ও আত্মীয়ের স্ত্রী পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন। তিনি অধ্যক্ষ ফারুক উদ্দিন বিশ্বাসকে কলেজে এসে নিয়োগপত্র প্রদানসহ প্রয়োজনীয় কাজ করতে বলেন।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সভাপতি শাহাবুদ্দিন বলেন, অধ্যক্ষের নেতৃত্বে কমিটির কিছু সদস্য প্রার্থী মৌসুমী ও অনিকাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য কয়েক লাখ টাকায় চুক্তি করেছে। এ কাজে ব্যর্থ হয়ে তারা এ কথা বলছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রার্থী অনিকা ও মুকুল।

নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজের অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান জানান, স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়ম মেনেই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পরীক্ষা গ্রহণের পরদিন লোকমানপুর মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ তাকে ফোন করে সভাপতির কাছে কাগজ দিতে বললে তিনি তা দিয়ে দেন। তবে অধ্যক্ষ এমন দাবি অস্বীকার করে জানান, তিনি নিয়োগ বোর্ডের সবার সামনে পরের দিন ডিজি প্রতিনিধিকে ফোন করেন। পরীক্ষার্থীসহ কমিটির একাংশের একটি আবেদন পেয়েছেন বলে দাবি করে অধ্যক্ষ আরও জানান, দ্রুত এ ব্যাপারে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসহ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কিন্তু ডিজি প্রতিনিধি জানান, সভাপতি শাহাবুদ্দিন এসে কাগজপত্র নিয়ে গেছেন।

ইউএনও প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল জানান, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই কথা জানান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ জানান, নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণের দিনই ফলাফল ঘোষণা করতে হবে। পরের দিন ফলাফল দেওয়ার বিধান নেই। এ ধরণের একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, বিগত সময়কালে এধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন এসব চলবেনা। লোকমানপুর কলেজের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টি শুনেছেন এবং এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে কোনো অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030901432037354