চলছে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযজ্ঞ। ঠিক এই সময়ে নানা সমস্যায় জর্জরিত বেসরকারি কলেজগুলোতে ব্যাপক চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছেন ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তা। অখ্যাত ও নতুন কলেজ তাদের প্রধান টার্গেট।
অখ্যাত কলেজগুলো ভর্তির আগে আসন সংখ্যা, বিভাগ, শাখা ইত্যাদি বৃদ্ধির জন্য ঢাকা শিক্ষাবোর্ড অফিসে যোগাযোগ শুরু করে। এসব কলেজের কোনো কোনোটির নিজস্ব জমি নেই, কোনোটির বৈধ কমিটি নেই। কারো নেই পাঠদান, স্বীকৃতির অনুমতির নবায়ন। আবার কোনো কোনো অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান। এসব দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে প্রেষণে বোর্ডে কর্মরত কয়েকজন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা ও বোর্ডের কয়েকজন স্থায়ী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
রাজধানীর একাধিক কলেজ কর্তৃপক্ষ দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানিয়েছেন, বোর্ড কর্মকর্তারা চাঁদ চাইছেন। দরকষাকষির পর হার নির্দিষ্ট হলে তাদের হাতে চাঁদার টাকা তুলে দিতে হচ্ছে।
তবে, কোনো কলেজ কর্তৃপক্ষই কারো বিরুদ্ধে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে রাজী নন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ভর্তি, ফরম পূরণ, পরীক্ষা কেন্দ্রসহ নানা কাজে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কাছে তাদের যেতেই হয়। বোর্ড চেয়ারম্যান ও সচিবের সঙ্গে সামান্য সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলেও তার দপ্তরের লোকদের সুনজরে থাকতেই হবে। নইলে সাক্ষাত মিলবে না। তাই রফা করেই চলতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা আরও বলছেন, শুধু কর্মকর্তারাই নন, চাঁদাবাজিতে কম যান না কর্মচারীরাও। বোর্ডের বর্তমান ও সাবেক ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির এন্তার অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ এসব নেতাদের ডেকে অতিথি করে নামকাওয়াস্তে অনুষ্ঠান করে বিশাল অংকের নজরানা বা সম্মানি দিতে বাধ্য হন। কর্মচারী ইউনিয়নের কয়েকজন নেতার বিপুল অর্থ-সম্পদ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনেও অভিযোগ জমা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজধানীর উত্তরার ট্রাস্ট কলেজের একজন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, বোর্ডের কাছে যেতেই হয়। কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভ নেই।
রাজধানীর জিগাতলা এলাকার একটি কলেজের কর্তৃপক্ষ দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, বোর্ডের কলেজ শাখার এক কর্মকর্তা সম্প্রতি তাদের কলেজে গিয়েছিলেন। প্রথমে পাতলা খাম দিয়েছিলেন। এতে গোস্বা করায় পরে মোটা খাম দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যে কোনো সমস্যা সমাধানে কর্মচারীদের কাছে না গিয়ে সরাসরি তাকে জানানোর পরামর্শ দেন চেয়ারম্যান।