নলডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজকলেজে নিয়োগে কোটি টাকা ঘু*ষ লেনদেনের অভিযোগ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি |

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজে আট পদে নিয়োগে কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ স্থগিত চেয়ে আদালতে করা মামলার শুনানির মধ্যেই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান শিক্ষা নীতিমালা লঙ্ঘন করে এক বছরের স্থলে প্রায় আড়াই বছর ধরে অবৈধভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট এবং সেখানকার নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শুনানি হয়েছে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত মেলেনি। এই সুযোগে তিনি এবং কলেজের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম আজীম নিয়োগ-বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আনোয়ারুল স্থানীয় সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতির ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস)। 

কলেজ সূত্র জানায়, সম্প্রতি একজন অধ্যক্ষ, চারজন ল্যাব সহকারী, একজন অফিস সহায়ক, একজন অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার অপারেটর ও একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২৩ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে অধ্যক্ষ ব্যতীত অন্যান্য পদে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়। এর আগে তা স্থগিত চেয়ে কলেজের দাতা পরিবারের সদস্য আব্দুর রউফ এবং এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ২১ সেপ্টেম্বর সাদুল্লাপুর উপজেলার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন।

ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগপ্রত্যাশী কায়েস আহাম্মেদ রাঙা দাবি করেন, প্রতিটি পদের জন্য কলেজের সভাপতি আনোয়ারুল ১৩ থেকে ১৬ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন।

অফিস সহায়ক পদে আবেদন করা রবিন বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সভাপতি আগের রাতে পছন্দের প্রার্থীদের মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েছেন। আমরা টাকা দিতে না পারায় আমাদের ভাগ্যে চাকরি জোটেনি।’

পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, কলেজের সভাপতি নিজে পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালন করছেন। যাঁরা নিয়োগের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা অফিসকক্ষে বসে ছিলেন।

এ নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বে থাকা গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ খলিলুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আপনারা সবই বোঝেন! তারপরও আমার কাছে জিজ্ঞাসা করতে হয়?’

নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান হুমকির সুরে বলেন, ‘আপনি কে যে এ বিষয়ে বলতে হবে। এমপির পিএসের সঙ্গে কথা বলেন। সরকারি দলের লোকজন নিয়ে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করলে সাংবাদিকতা দূর হয়ে যাবে।’ নিয়োগে বাণিজ্যের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কলেজের সভাপতি আনোয়ারুল বলেন, ‘কোথায় টাকা লেনদেন হয় না?’

এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন উপেজলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034401416778564