এবার আবেদনের বিপরীতে আসন সংখ্যা বেশি থাকার পরও প্রথম ধাপে কলেজে ভর্তির সুযোগ পাননি চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ৮ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। প্রথম ধাপে মনোনয়ন না পাওয়া এ বোর্ডের ৮ হাজার ৭০১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া ৫০১ জনও রয়েছেন।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, জিপিএ- ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের অতি আত্মবিশ্বাসের কারণে এই সমস্যা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি শিক্ষার্থী পছন্দের কলেজের তালিকায় ১০ টার নাম দেয়ার সুযোগ থাকলেও অনেকে তা দেননি। ফলে নির্দিষ্ট কলেজে বেশি নম্বর পাওয়াদের আবেদন উপরে থাকায় এই বিপত্তি হয়েছে। প্রথম পর্বে কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দফায় আবার আবেদনের সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
গত ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় একাদশে ভর্তির প্রথম পর্যায়ের ফল প্রকাশিত হয়। আবেদনকারীদের মাঝে চট্টগ্রামের সবমিলিয়ে ৮ হাজার ৭০১ শিক্ষার্থী প্রথম তালিকায় ঠাঁই পায়নি।
শিক্ষাবোর্ডের কলেজ শাখার তথ্য মতে, চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে এবার ২৮২টি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন রয়েছে। অনুমোদিত এসব কলেজে সবমিলিয়ে আসন সংখ্যা ১ লাখ ৭৫ হাজার ১৩৯টি। বিপরীতে বোর্ডের অধীন কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য এবার আবেদন করেছে ১ লাখ ২৩ হাজার ১৫১ জন। সে হিসেবে একাদশে ভর্তিতে আসন সংকট থাকছে না। সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও আরো ৫১ হাজার ৯৮৮টি আসন শূন্য থাকবে।
প্রথম তালিকায় ভর্তির জন্য নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থীদের বৃহস্পতিবার থেকে রোববার (৭ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার মধ্যে নির্ধারিত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৩৩৫ টাকা ফি পরিশোধ করে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন সম্পন্ন করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন সম্পন্ন না করলে নির্বাচিত শিক্ষার্থীর মনোনয়ন ও আবেদন দুটোই বাতিল বলে গণ্য হবে। সেক্ষেত্রে ১২ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১৫০ টাকা ফি দিয়ে তাদের পুনরায় নতুন করে আবেদন করতে হবে। আর প্রাথমিক নিশ্চায়ন সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীরা তাদের আবেদনে দেয়া পছন্দক্রমের উপরের দিকের কলেজে অটো মাইগ্রেশনের সুযোগ পাবে। মাইগ্রেশনের জন্য আলাদা আবেদনের প্রয়োজন হবে না।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য চট্টগ্রামের ১ লাখ ২৩ হাজার ১৫১ শিক্ষার্থী অনলাইনে আবেদন করে। এর মধ্য থেকে কলেজ ভর্তির জন্য প্রথম তালিকায় নির্বাচিত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৪৫০ জন। হিসেবে আরো ৮ হাজার ৭০১ শিক্ষার্থী আবেদন করেও প্রথম তালিকায় কলেজ পায়নি। এর মাঝে জিপিএ-৫ পাওয়া ৫০১ শিক্ষার্থীও রয়েছে।
প্রথম তালিকায় কলেজ না পাওয়ায় ভর্তির জন্য মনোনয়ন পেতে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে এসব শিক্ষার্থীকে। ওই দিন (১৬ সেপ্টেম্বর) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের ফল প্রকাশ করা হবে। এর আগে ১২ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২য় দফায় পুনরায় আবেদন করতে হবে এসব শিক্ষার্থীকে। তবে ২য় দফায় আবেদনকালে তাদের আর আবেদন ফি দিতে হবে না। অর্থাৎ কলেজের পছন্দক্রম পরিবর্তন, নতুন কলেজ যুক্তকরণ বা কোনো কলেজ বাদ দেয়ার মাধ্যমে আগের (প্রথম দফায় করা) আবেদনটি আপডেট বা সংশোধন করলেই চলবে।
জিপিএ-৫ পেয়েও ভর্তির জন্য তালিকায় ঠাঁই না পাওয়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের এক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সর্বোচ্চ দশটি কলেজে আবেদনের সুযোগ থাকলেও জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী পছন্দের ক্ষেত্রে ৫-৬টির বেশি কলেজ দেয়নি। তাদের ধারণা ছিলো জিপিএ-৫ পাওয়ায় ৫-৬টি কলেজে আবেদন করলেই হবে। আর বেশি করার দরকার নেই। কিন্তু যেসব কলেজে তারা আবেদন করেছে সেসব কলেজে তাদের তুলনায় বেশি নম্বর প্রাপ্ত আবেদনকারীর সংখ্যা হয়তো বেশি ছিলো। যে কারণে আবেদন করা ওই ৫-৬টি কলেজের একটিতেও তাদের সুযোগ হয়নি। কিন্তু সর্বোচ্চ সংখ্যক দশটি কলেজে আবেদন করলে এ সমস্যা হতো না। আবেদন চলাকালীন সর্বোচ্চ সংখ্যক কলেজ পছন্দ দিয়ে আবেদন করতে শিক্ষার্থী–অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।