নওগাঁর মান্দার সতিহাট কে টি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের একটি কক্ষে মাদক সেবন করতে না দেওয়ায় শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে মারপিট করেছে ওই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ বহিরাগতরা। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ লুৎফর রহমান মণ্ডল বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের জন্য গত শনিবার রাতে প্রতিষ্ঠানে জিলাপি তৈরি হচ্ছিল। আনুমানিক রাত ১০ টার দিকে উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের মো. এনামুল হকের ছেলে মোঃ সুইট হোসেন (৩০), মামুন হোসেনের ছেলে মো. মিঠু (২৮) ও স্কুলে প্রাক্তন ছাত্র মো. রিমন (২৯) মাদক সেবনের জন্য একটি কক্ষ খুলে নিতে চায়। রুম খুলে দিতে না চাইলে তারা হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনার জের ধরে পরের দিন রোববার (১০ অক্টোবর) সকাল ১০ টার দিকে প্রতিষ্ঠানের পিয়ন মো. সাইফুল ইসলামকে (৩০) অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে অভিযুক্তরা। এক পর্যায়ে গাছের ডাল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে এবং এলোপাথারিভাবে মারধর শুরু করে। পিয়নকে বাঁচানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক (মৌলভী) মো. মিজানুর রহমান এগিয়ে গেলে তাকেও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়। এরপর প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ঘটনাস্থলে গেলে তাকে মারধরে চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। অধ্যক্ষ ভয়ে দৌড়ে অফিস কক্ষে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। এরপর তারা অধ্যক্ষকে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের অফিস সহায়ক মো. সাইফুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ঘটনার আগের দিন রাতে প্রতিষ্ঠানে দোয়া মাহফিল উপলক্ষে জিলাপি তৈরির জন্য আমরা কিছু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ প্রতিষ্ঠানে ছিলাম। এসময় অভিযুক্তরা মাদকদ্রব্য সেবনের জন্য আসলে তাদের আমি বাধা দেই। এ কারণে পরদিন দিন সকালে তারা অতর্কিতভাবে প্রতিষ্ঠানে এসে আমাকে আক্রমণ করে মারধর করে। এ সময় আমার সহকর্মীরা আমাকে রক্ষা করে।
সহকারী শিক্ষক (মৌলভী) মো. মিজানুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারীকে মারপিট করার সময় আমি তাকে রক্ষা করতে গেলে তারা আমাকেও শারীরিকভাবে হেনস্তা করে।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. লুৎফর রহমান মণ্ডল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার প্রাক্তন ছাত্রসহ বহিরাগতরা আমার প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের মারধর করার সময় আমি এগিয়ে গেলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারতে উদ্ধত হয়। প্রাণ ভয়ে আমি অফিস কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেই। তখন তারা বাহিরে থেকে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে চলে যায়। এরপর আমি আমার সহকর্মীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করে সকলের পরামর্শ নিয়ে থানায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করি।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. হানিফ উদ্দিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষক ও কর্মচারীকে হেনস্তার ঘটনায় প্রধান শিক্ষককে থানায় অভিযোগে করার কথা বলেছি। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিনুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে অধ্যক্ষ বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাতে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা যায়নি। তবে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।