কলেজ প্রশাসনের কাছে ১০৩ দাবি ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

কলেজের চলমান সংকট সমাধান এবং জুলাই বিপ্লবের প্রত্যাশার আলোকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস বিনির্মাণের লক্ষ্যে ঢাকা কলেজ প্রশাসনের কাছে ১০৩ দাবি পেশ করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি আবদুল হক মানিক এবং সেক্রেটারি মোস্তাকিম আহমেদ।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ২টা ৩০ মিনিটে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসের কাছে লিখিত এ দাবি পেশ করেন তারা।

জুলাই বিপ্লবের বিরোধিতাকারীদের বিচার চেয়ে শিবিরের দাবিসমূহ :

১. ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন প্রসঙ্গে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, চব্বিশের জুলাই বিপ্লবে ঢাকা কলেজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব ছাত্র-শিক্ষক কর্মচারী ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে কাজ করেছিল তাদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

২. বিগত ফ্যাসিবাদের শাসনামলে হল গুলোতে ছাত্র নির্যাতনের সাথে সম্পৃক্ত হল প্রভোস্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৩. নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের হাতে নিহত সবুজ আলী হত্যার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং জড়িতদের কলেজ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে।

৪. পতিত ও পলাতক ফ্যাসিবাদের দোসরদের নামে ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাসে যে সকল স্থাপনা, সড়ক, সেন্টার, বৃত্তি, সম্মাননা, চেয়ার ও ফলকের নামকরণ করা হয়েছে তার পরিবর্তন করে জুলাই বিপ্লবের শহীদদের নামে নামকরণ করতে হবে। শহীদ আবু সাইদ, শহীদ মুগ্ধ, শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্ত, শহীদ ওয়াসিম, শহীদ আলী রায়হান, শহীদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়া, শহীদ নাইমা, শহীদ সুমাইয়াসহ সকল শহীদেরা আমাদের জাতীয় বীর ও প্রেরণার বাতিঘর। জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটকে ভাস্বর রাখতে এবং ফ্যাসিবাদ ও সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস গঠনে শহীদদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের নামে স্থাপনা, সড়ক, ফলক, সেন্টার, বৃত্তি-সম্মাননা ইত্যাদি স্থাপন করতে হবে।

৫. চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি বিশেষায়িত সেন্টার ও সংগ্রহশালা গড়ে তুলতে হবে। যেখানে অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্টি ইতিহাস, গুরুত্বপূর্ণ ছবি, সাহিত্য, ম্যাগাজিন, প্রকাশনা, পত্রিকা ও চিত্রকর্ম ইত্যাদি সংরক্ষিত থাকবে।

৬. জুলাই গণহত্যা ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের নির্মম ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরার ব্যবস্থা করতে হবে।

আবাসন নিয়ে শিবিরের দাবিসমূহ :

১. চলমান আবাসিক সংকট নিরসন করে শতভাগ আবাসিক ক্যাম্পাস বিনির্মানের জন্য এক শিক্ষার্থী এক সিট নীতি গ্রহণ করে দ্রুত হল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

২. হল পরিচালনা, সিট বণ্টনসহ কর্মকাণ্ড পরিচালনায় 'হল চালাবে প্রশাসন' নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।

৩ . ক্যাম্পাসে ঝুঁকিপূর্ণ সকল ভবন সংস্কার ও পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে।

৪ . আবাসিক হলগুলোর ক্যান্টিন ও দোকানগুলোতে খাবারের যথাযথ মান নিশ্চিত করতে হবে। খাবারের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণে কলেজ পরিচালনায় যেন কেউ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. আবাসিক হলগুলোতে পড়ালেখার সুস্থ পরিবেশ সংরক্ষণের স্বার্থে রিডিং রুম ও লাইব্রেরীর পরিসর বৃদ্ধি করতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. শিক্ষকগণের জন্য পর্যাপ্ত আবাসিক বাসভবনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. নিউমার্কেটে অবস্থিত ঢাকা কলেজের বেদখল হয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিতে হবে।

৮.কলেজের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য শতভাগ আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে শিবিরের দাবি :

১. ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

২. বহিরাগত প্রবেশ সংরক্ষিত করতে হবে।

৩. নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হলের গেট খোলা ও বন্ধ রাখতে হবে।

লাইব্রেরিসংক্রান্ত :

১. ঢাকা কলেজ সেন্ট্রাল লাইব্রেরীর পরিধি বৃদ্ধি ও নতুন ভবন নির্মাণ করতে হবে।

২. লাইব্রেবিতে নিয়মিত বিভিন্ন জাতীয় আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ সাময়িকী, পত্রিকা, জার্নাল সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. পুরাতন পান্ডুলিপি, বই, পত্রিকা ও গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টগুলোর সফট কপি তৈরি করে ই-লাইব্রেবিতে সংরক্ষণ ও শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি এক্সেস রাখতে হবে।

৪. ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত সকল পত্রিকা ম্যাগাজিন ও প্রকাশনার ব্যবস্থা করে তার লাইব্রেরিতে সংরক্ষণ করতে হবে এবং সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে।

৫. বিসিএস ক্যাডার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে।

৬. ক্যাম্পাসের সকল ছাত্রের চাহিদার আলোকে পর্যাপ্ত বইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. ছাত্রদের প্রফেশনাল আউটপুট বাস্তবায়নে সকল প্রকার সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে।

ধর্মীয় উপাসনালয়সংক্রান্ত :

১. মসজিদের অজুখানা ও টয়লেট ব্যবস্থাপনা পর্যাপ্ত সম্প্রসারণ করতে হবে।

২ . মসজিদের খতিব নিয়োগ দেওয়া ও ইমাম সাহেবের জন্য কোয়ার্টারের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. মসজিদের হিসাব যথাযথভাবে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

৪. কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে মসজিদে কোরআন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে হবে।

৫. মসজিদে ইসলামী পাঠাগার নিশ্চিত করতে হবে এবং পর্যাপ্ত বইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. পশ্চিম ছাত্রাবাসসহ অন্যান্য হোস্টেলে সংখ্যালঘু সকল সম্প্রদায়ের জন্য উপাসনালয় এবং নিজ নিজ ধর্ম পালনের উপযুক্ত পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে উপাসনালয় এরিয়ায় সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা।

৮. বছরে একবার ছাত্রদের নিকট তাদের স্ব-স্ব ধর্মগ্রন্থ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

শরীরচর্চা কেন্দ্র নিয়ে শিবিরের দাবি :

১. কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, জিমনেশিয়াম এবং উন্মুক্ত ব্যায়ামাগারের নিয়মিত পরিচর্যা নিশ্চিত করতে হবে।

২. জিমেনেশিয়ামে সৎ ও দক্ষ প্রশিক্ষকদের নিয়োগ দিতে হবে।

৩. মাঠে বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

৪. হল ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক নিয়মিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে।

ছাত্রদের কল্যাণে বিশেষ উদ্যোগ সমূহ :

১. ছাত্রদের একাডেমিক, ব্যক্তিগত এবং কর্মসংস্থান সংক্রান্ত পরামর্শ প্রদানের জন্য একটি ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।

২. মেধাবী ও অসচ্ছল ছাত্রদের জন্য কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. ক্লাস রুমে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা লক্ষ্যে স্মার্ট ক্লাসরুম, ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম এবং অনলাইন লাইব্রেরীর ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. ইন্টারমিডিয়েট ও অনার্স শ্রেণির ক্লসের জটিলতা দূর করে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার আলোকে সবার ক্লাস নিশ্চত করতে হবে।

৫. ক্যাম্পাসে ফ্রি ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. ক্যাম্পাসের প্রতিটি নির্দিষ্ট স্থানে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত লাইটের ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. শিক্ষার্থীদের পরিবহণ সেবা বৃদ্ধির জন্য যানবাহন বৃদ্ধি করতে হবে।

৯. উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে MoU (Memorandum of Understanding) করতে কলেজ কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

মেডিকেল সেন্টারসংক্রান্ত দাবি :

১. ছাত্রদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা মেডিকেল সেন্টার স্থাপন করতে হবে।

২. সার্বক্ষণিক ও দ্রুত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে।

৩ . মেডিকেল সেন্টারে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

৪. বিনামূল্যে সেবা প্রদানের জন্য ওষুধ ও মেডিকেল সরঞ্জাম সরবরাহ বৃদ্ধি করতে হবে।

৫. সামগ্রিক কাঠামোর আধুনিকায়ন করে একটি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সহায়তা কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে।

প্রশাসনিক কার্যক্রমসংক্রান্ত দাবি :

১. কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রমের আধুনিকায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

২. কলেজের ওয়েবসাইটের মান উন্নয়ন, নিয়মিত আপডেট ও সক্রিয় রাখা।

৩ . পরীক্ষার ফি সহ সকল ধরনের ফি অনলাইনে পরিশোধের ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪ . সিসিটিভির মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান কার্যক্রম মনিটরিং করতে হবে।

৫. কলেজের সকল সামাজিক সংগঠনকে স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ করে দিতে হবে।

৬. কলেজের যেসকল সাবেক ছাত্র স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত তাদের বিস্তারিত তথ্য কলেজ ওয়েবসাইটে যুক্ত করতে হবে, যাতে করে বর্তমান ছাত্ররা উৎসাহ পায় ও প্রয়োজনে সাবেকদের সাথে যোগাযোগ করে সহযোগিতা নিতে পারে।

ছাত্র সংসদসংক্রান্ত দাবি :

১. অবিলম্বে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতির প্রবর্তন এবং কলেজ প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দাবি দাওয়া পেশের একটি সুন্দর সংযোগ স্থাপন করতে হবে।

২. ছাত্র সংসদের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের সমস্যাগুলো দূর করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

ছাত্র শিক্ষকসংক্রান্ত দাবি :

১. শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

২. ছাত্রদের ক্লাসে উপস্থিতি বৃদ্ধির জন্য সেমিনার, আলোচনা সভা ইত্যাদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

৩. শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার তৈরিতে শিক্ষকদের ভূমিকা থাকতে হবে। ক্যারিয়ার গাইডলাইন, ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

৪. অনার্স ও ইন্টারমিডিয়েট ছাত্রদের মধ্যকার সকল বৈষম্য দূর করতে হবে।

৫. অনার্স ও ইন্টারমিডিয়েট উভয় ক্লাসেই শিক্ষকদের প্রস্তুতি নিয়ে গঠনমূলক লেকচার প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।

৬. একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চলাকালীন অনার্সের শিক্ষার্থীরা নিজ ডিপার্টমেন্টে প্রবেশ করতে পারেনা। এ বাধা দূর করার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে তা সমাধান করতে হবে।

৭. বিভাগ ভিত্তিক ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত নয় বরং সক্ষমতার আলোকে ছাত্র ভর্তি করতে হবে।

৮. ইন্টারমিডিয়েটের শিক্ষার্থীরা প্রায়শই বিভিন্ন কারণে পার্শ্ববর্তী কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে কলেজের মান ক্ষুণ্ন হয়। এ ধরণের ঘটনা যেন পুনরায় না ঘটে সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

৯. শিক্ষার্থীদের সাথে কোনো অন্যায় ঘটে থাকলে বা অসৎ উদ্দেশ্যে কোনো তৃতীয় পক্ষ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করলে বা কেউ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করলে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এতে কোনো শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রশাসনকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

১০. একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাসের সময় অনার্সের ক্লাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

১১. পর্যাপ্ত ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করতে হবে।

১২. পর্যাপ্ত সেমিনারের আয়োজন করতে হবে।

ঢাবি অধিভুক্ত সাত ৭ কলেজ নিয়ে শিবিরের দাবি :

১. অনতিবিলম্বে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিসমূহ মেনে নিয়ে অর্নাস ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের সকল বৈষম্য দূর করতে হবে। এক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ হিসাবে ঢাকা কলেজের মানকে সমুন্নত রাখতে হবে।

২. সাত কলেজ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তিত হয় তাহলে ইন্টারমিডিয়েটের জন্য আলাদা ব্যবস্থা বা স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কাঠামোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।

ক্লাস রুমসংক্রান্ত দাবি :

১. ক্লাস রুম গুলোকে আধুনিক মানের করতে হবে।

২. ডিজিটাল বোর্ড ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের সংস্কার পূর্বক শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

৩. পর্যাপ্ত ফ্যান ও লাইটের ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. আরামদায়ক চেয়ার টেবিলের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. ক্লাস রুম ও শিক্ষার্থীদের ওয়াশরুম নিয়মিত পরিস্কার করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

০৬. বিভাগের প্রতিটি বর্ষের জন্য আলাদা আলাদা ক্লাস রুম নিশ্চিত করতে হবে।

হলসংক্রান্ত দাবি :

১. হলে বহিরাগতদের প্রবেশে গতিবিধি পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।

২. ইন্টারের ছাত্রদের আন্দোলনে যুক্তকরণনীতি বন্ধ করতে হবে।

৩. কোনো প্রকার ট্যাগ ব্যবহার করে কাউকে হেনস্তা না করা। এক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় নিয়ে আসা।

৪. নিয়মিত ছাত্রের বাহিরে কাউকে হলে না উঠানো। পাশাপাশি অনার্স ১ম বর্ষ ছাত্রদের হলে উঠানো নিশ্চিত করা। মাস্টার্স শেষ হয়েছে এমন ছাত্রদের হল থেকে দ্রুত বের করতে হবে।

৫. সকল ছাত্রের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এক্ষেত্রে অধিকাংশের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে।

৬. শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান নিশ্চিত করতে হবে। গেস্ট রুম, গণরুম কালচার চিরতরে রহিত করতে হবে।

৭. হলে থাকার উপযুক্ত পরিবেশ ও পড়াশোনার পর্যাপ্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

৮. হল পাড়ায় ছাত্রী প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।

৯. হলের পাঠকক্ষে মনোরম পরিবেশ ও পর্যান্ত বইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

১০. হলের ভিতরে ধূমপান নিষিদ্ধ করতে হবে।

১১. হলে মেডিকেল সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

১২. মেধাবী ও অসচ্ছল ছাত্রদের হলে অগ্রাধীকার দেওয়া এবং শিক্ষা সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

১৩. হল সংস্কার করার পাশাপাশি নতুন হল নির্মাণ করতে হবে।

১৪. প্রত্যেক হলে পাঠকক্ষের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

১৫ . নিয়মিত হল পরিক্ষা করতে হবে।

১৬. হলের ডাইনিং এর খাবারের মান বৃদ্ধি এবং খাবারের মূল্য কমাতে হবে। প্রয়োজনে ভর্তুকি প্রদান করতে হবে।

১৭ . হলে সিসি টিভির ব্যবস্থা করতে হবে।১৮. হলে ছাত্রদের ক্যারিয়ার গাইডলাইন মূলক প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন ও সকল ছাত্রকে ব্রিজিং প্রজেক্টের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

১৯. হলে ফ্রি ইন্টারনেট এর ব্যবস্থা করতে হবে।

২০. প্রতি মাসে হলে ছাত্র- শিক্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করতে হবে।২১. হল প্রভোস্টদের নিয়মিত সফর নিশ্চিত করতে হবে।

২২. নির্দিষ্ট সময় হলের গেট বন্ধ করতে হবে।

২৩. হলের নিরাপত্তা জোরদার করে শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত সকল কার্যক্রমকে গুরুত্বের সাথে তদারকি করতে হবে।

২৪. পর্যাপ্ত ডাস্টবিন এর ব্যবস্থা করতে হবে।

২৫. হল থেকে জোরপূর্বক দলীয় কর্মসূচিতে যুক্ত করা নিষিদ্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রত্যেকের আদর্শ দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ রাখতে হবে।

২৬. ঢাকা কলেজের এরিয়ার কলেজ সমূহের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা কলেজ শাখার সেক্রেটারি মোস্তাকিম আহমেদ বলেন, অধ্যক্ষ স্যার আমাদের দাবির ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন। একসাথে সব দাবি বাস্তবায়ন করা সম্ভব না, এজন্য ধাপে ধাপে সব দাবি মেনে নেওয়া হবে। তবে যে দাবি আগে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন সেগুলোর প্রতি গুরুত্ব দিবেন বলে জানান।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মেডিক্যাল ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এমপিও শিক্ষকদের নভেম্বরের বেতন দেরির নেপথ্যে - dainik shiksha এমপিও শিক্ষকদের নভেম্বরের বেতন দেরির নেপথ্যে প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু নোট-গাইড কোম্পানির প্রতিনিধিদের - dainik shiksha প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু নোট-গাইড কোম্পানির প্রতিনিধিদের দুদক ও বিচার বিভাগ আওয়ামী লীগের দাসে পরিণত হয়েছিল: আইন উপদেষ্টা - dainik shiksha দুদক ও বিচার বিভাগ আওয়ামী লীগের দাসে পরিণত হয়েছিল: আইন উপদেষ্টা কারিগরি শিক্ষকদের নভেম্বর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের নভেম্বর মাসের এমপিওর চেক ছাড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খাসজমি কারো নামে রেকর্ড কিনা জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খাসজমি কারো নামে রেকর্ড কিনা জানতে চায় অধিদপ্তর বিশাল ব্যয়েও উপবৃত্তিতে নেই কাঙ্ক্ষিত ফল - dainik shiksha বিশাল ব্যয়েও উপবৃত্তিতে নেই কাঙ্ক্ষিত ফল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030968189239502