কলেজ র‌্যাঙ্কিং কন্টিনিউ করতে হবে

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম র‌্যাঙ্কিং এর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর ও সাবেক শিক্ষাসচিব মো. নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, কলেজ র‍্যাঙ্কিং একটা ভালো উদ্যোগ।এটাকে কন্টিনিউ করতে হবে। শুধু স্যাম্পল নিয়ে নয়, সারাদেশের শতভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের র‌্যাঙ্কিং করতে হবে। স্কুল ও কলেজকে উৎসাহিত করতে হবে ফাইন্যান্স করতে। 

গত শুক্রবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত দৈনিক শিক্ষাডটকম কলেজ র‍্যাঙ্কিং-২০২৩ প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, এ ধরনের কাজ খুবই ব্যয়বহুল। এসব কাজে কেউ টাকা দিতে চায় না। কক্সবাজারে খেলা বা ঘুড়ি উড়ানো সব কিছুতেই মানুষ টাকা দেয়। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে টাকার কথা বললে কেউ দিতে চায় না। এটাই বাস্তবতা। এসব ক্ষেত্রে কেউ ইনভেস্ট করতে চায় না। আমি নিজেও এ ধরনের কাজ করেছি এবং এগুলো খুবই পেইনফুল। এটা প্রথমবার শুরু হলো। দ্বিতীয়বার বা তৃতীয়বার গিয়ে এই উদ্যোগ আরো বেশি সাড়া ফেলবে।

র‌্যাঙ্কিং কর‌্যক্রম অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করতে পারেন। ব্যক্তিগত আক্রমণও আসতে পারে। তবে দমে গেলে চলবে না। 

তিনি বলেন, শিক্ষার অন্তত থার্টি পার্সেন্ট হলো কালচার। সবচেয়ে বেস্ট ছাত্রের সঙ্গে সবচেয়ে দুর্বল ছাত্রের মেধার পার্থক্য খুব বেশি নয়। বেশি হলে মাত্র ২-৩ শতাংশ। নেদারল্যান্ডসের ব্রেইন রিসার্চ ইনস্টিউটের গবেষণায়ও এটা বলা হয়েছে। 

অনেকে বাধ্য হয়ে শিক্ষকতায় আসেন জানিয়ে এন আই খান বলেন, আমি বিসিএস ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে দেখেছি, পঞ্চাশ জনে একজনকে পেয়েছি তিনি শিক্ষক হতে চান। আর বাকি সবাই কিন্তু বাই ফোর্স শিক্ষা ক্যাডারে যান। আসলে যেখানে ঘুষ নাই, সেখানে কেউ যেতে চান না। 

দেশের সার্বিক গবেষণার বিষয়ে তিনি বলেন, যখন শিক্ষাসচিব ছিলাম তখন দেখেছি আমাদের দেশে রিসার্চ করে ঠিকই, কিন্তু যে ক্ষেত্র নিয়ে দরকার সেটাতে করে না। মালয়েশিয়াতে সরকারের পলিসি আছে যে, যেটা আলোচিত বিষয়, যেটা সরকারের সমস্যা, দেশের সমস্যা সেটাকে প্রাধান্য দেয়া। কিন্তু আমাদের এখানে সেটা কেউ শোনে না। পুরোনো দিনের মতো গবেষণায় ব্যস্ত। এটা একটা সমস্যা। 

বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার আগ্রহ নিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, অনেকেই বলে আজকালকার ছেলেপেলে পড়াশোনা করে না। আমাদের সময় পড়াশোনা হতো। আমি এটা বিশ্বাস করি না। এসব নস্টালজিক কথাবার্তা। আগে কয়জন শুদ্ধ ইংরেজি বলতে পারতেন? এখন দেখা যায়, ব্রিটিশ বা অ্যামেরিকার উচ্চারণেও বলতে পারে। আগে এমন ছিলো না।

আরো পড়ুন: এ প্লাস কলেজ সাতটি : দৈনিক শিক্ষাডটকম র‌্যাঙ্কিং 

তিনি আরো বলেন, আমরা কোনো বিষয়ে কথা বলার লোক পেতাম না। মানুষ ফেসবুকে আগে কি লিখতো আর এখন অনেক জ্ঞানের কথা লেখে। পাকিস্তানের সময় একশ বাচ্চার মধ্যে বারো জন বাচ্চা প্রাইমারি স্কুলে যেতো। যখন বাংলাদেশ হলো তখন একশ বাচ্চার ভেতর বিশ জন বাচ্চা প্রাইমারি যাওয়া শুরু করলো, এখন ৯৮ জন যায়। এখন ৩৫ লাখ বাচ্চা হয়, ২১ লাখ এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। এটাও বিরাট অগ্রগতি। কোয়ান্টিটিও গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষার্থীদের ইন্টার পার্সোনাল দক্ষতা উন্নয়নের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জীবনে সাকসেসফুল হতে ইন্টারপার্সোনাল স্কিল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরিসংখ্যান বলে আমেরিকার মতো দেশে ৪৮ শতাংশ চাকরি হয় কিন্ত এই দক্ষতার ওপরে। আমাদের অনেকে ভালো রেজাল্ট করে, ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হন। কিন্ত বিসিএসে চান্স পান না। এটা তার অন্যতম কারণ। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ও গবেষণার বিষয়ে তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ হয় চুক্তিতে। কেউ কেউ আছেন শতভাগ গবেষণা করেন। কেউ আশি ভাগ রিসার্চ বিশ ভাগ পড়ানো, এরকম চল্লিশ ও ষাট ভাগও আছে। 

তিনি আরও বলেন, অনেকে বলেন আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয় বেশি হয়ে গেছে, এমএ পাস করেও বেকার। আমি বলি- এমএ পাস করে যারা চাকরি পাচ্ছেন না, তাদের বাচ্চারা কিন্ত আরো সফিস্টিকেটেড হবে। মানুষ এখন সুন্দর করে কথা বলে। আমাদের কোয়ান্টিটিগত দিক দিয়ে এখনও অনেক দূর যেতে হবে। জাপানের ১২ কোটি ২৭ লাখ মানুষ, ১ হাজার ২০০ বিশ্ববিদ্যালয়। আর আমাদের কয়টা?

 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল   SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জাল সনদেই সরকারকে হাইকোর্ট, নয় শিক্ষক অবশেষে ধরা - dainik shiksha জাল সনদেই সরকারকে হাইকোর্ট, নয় শিক্ষক অবশেষে ধরা মা*রা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি - dainik shiksha মা*রা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন মোখবার - dainik shiksha ইরানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন মোখবার এমপিওভুক্ত হচ্ছেন ৩ হাজার শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন ৩ হাজার শিক্ষক কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041508674621582