ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত কৃষি বিজ্ঞানী কাজী এম বদরুদ্দোজা মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ফয়সল হাসানের পাঠানো শোক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দেশের কৃষি গবেষণায় অবদান রাখা এই বিজ্ঞানীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ও। নাট্য নির্দেশক মোহাম্মদ বারী ফেইসবুকে তার মারা যাওয়ার তথ্য শেয়ার করেছেন।
কাজী পেয়ারার জনক হিসেবে খ্যাত এম বদরুদ্দোজা ঢাকার উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই পুত্র, এক কন্যা রেখে গেছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে পাকিস্তান কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালকের পদ পরিত্যাগ করে ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা দেশের কৃষি গবেষণার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তিনি কৃষি গবেষণার সংস্কার, উন্নয়ন ও বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। তার হাত ধরেই স্বাধীন বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি গবেষণার বুনিয়াদ রচিত হয় বলে কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
প্রয়াত এম বদরুদ্দোজা বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের শীর্ষ পদে দীর্ঘদিন নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ একাডেমি অব এগ্রিকালচারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
এই কৃষি বিজ্ঞানী ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়।
১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের অধীনে বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট (বর্তমানে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে পড়াশোনা করেন। তিনি ধানের বাইরে বাংলাদেশের প্রধান দুটি দানাদার ফসল চাষ শুরুর ক্ষেত্রেও নেতৃত্ব দেন।
তার মৃত্যুতে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক শোকবার্তায় বলেন, কাজী এম বদরুদ্দোজা এদেশের কৃষি গবেষণার পথিকৃৎ। দেশের কৃষি গবেষণায়, গবেষণার সম্প্রসারণে ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের শক্তিশালী কাঠামো তৈরিতে তার অনন্য অবদান রয়েছে। কৃষিখাতে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ শোক জানিয়ে বলেন, "ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা ছিলেন একাধারে কৃষি বিজ্ঞানী, কৃষি সংগঠক ও ন্যাশনাল এমেরিটাস সায়েন্টিস্ট। তিনি আজীবন এদেশের কৃষি খাতের উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তিনি তার সৃষ্টি ও কর্মের মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবেন।