কাজে আসছে না স্মার্ট আইডি কার্ড, রাবি শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাবি |

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) চালু হয় স্মার্ট আইডি কার্ড। এই কার্ড নিতে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ৪০০ টাকা করে ফি দিতে হয়। তবে উপযুক্ত অবকাঠামো গড়ে না তোলায় আধুনিক এ কার্ড শিক্ষার্থীদের কোনো কাজেই আসছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সকল সুবিধা না পাওয়ায় স্মার্ট আইডি কার্ডের দাম কমানোর দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীরা জানান, স্মার্ট আইডি কার্ডের মাধ্যমে ২৮টি সেক্টরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কথা বলা হলেও, কোনো ক্ষেত্রেই কাজে লাগছে না। শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে ও ফর্ম-ফিলাপের সময় ছাড়া আর কোনো কাজেই লাগে না এই স্মার্ট কার্ড। অনেকে দাবি করছেন, এই স্মার্ট কার্ড ঢাকার নীলক্ষেত থেকে ৫০ টাকায় তৈরি করা যায়। তাহলে বিনা সেবায় আমরা কেন ৪০০ টাকা ফি দেব?

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনতে দেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের স্মার্ট আইডি কার্ড চালু করেন তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ মিজানউদ্দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, ইন্টারনেট সার্ভিস, পেমেন্ট সিস্টেম, মেডিকেল কার্ড ও লাইব্রেরি কার্ড, বাস কার্ডসহ ২৮টি সেক্টরে এ কার্ডের ব্যবহার নিশ্চিত করার কথা ছিল। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তির সময় স্মার্ট কার্ড বাবদ অতিরিক্ত ৪০০ টাকা ফি নেওয়া হয়।

কার্ডে শিক্ষার্থীদের নাম, নিবন্ধন নম্বর, আইডি কোড, ছবি, বিভাগ, হল কোড, বর্ষ ব্যক্তিগত সব তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। এ কার্ড ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার নম্বরপত্র ও সনদপত্র তোলা, গ্রন্থাগার, বিভাগ, ইনস্টিটিউট, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস, হল অফিস এবং নিরাপত্তাবিষয়ক বিভিন্ন কাজ করার সুযোগ পাবেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন সূত্রে জানা যায়, স্মার্ট কার্ড বাবদ ২০১৬-১৭ সেশনের ৪ হাজার ১৪৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৪০০ টাকা করে প্রায় ১৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা আদায় করা হয়। ২০১৭-১৮ সেশনের ৪ হাজার ১১৯ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ১৬ লাখ ৪৭ হাজার ৬০০ টাকা, ২০১৮-১৯ সেশনের ৪ হাজার ১৭৩ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ১৬ লাখ ৬৯ হাজার ২০০ টাকা, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৪ হাজার ১৫১ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ১৬ লাখ ৬০ হাজার ৪০০ টাকা।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ৪ হাজার ১৭৩ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় লাখ ১৬ হাজার ৬৯ হাজার ২০০ টাকা ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৪ হাজার ২০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ১৬ লাখ ৮ হাজার টাকা। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ৪ হাজার ৭৮৩ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৭ লাখ ৫৪ হাজার এবং সর্বশেষ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ৪ হাজার ৩৩২ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৮০০ টাকা আদায় করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ৭ বছরের কার্ড ক্রয় বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি ১ লাখ ৩০ হাজার ৪০০ টাকা আদায় করা হয়েছে। 

স্মার্ট কার্ডের দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক খাদেমুল ইসলাম মোল্ল্যা বলেন, আমাদের একটা কার্ড কিনতে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা লাগে। তাও আমরা কার্ড পাচ্ছি না। এখন কেউ যদি ৫০ টাকায় কার্ড দিতে পারে তাহলে আমরা যোগাযোগ করে তাদের থেকে কার্ড এনে দাম কমাতে পারব।  

তিনি আরো বলেন, আমরা যে কার্ড ইউজ করি সেটা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবহার করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্ডের দাম ৫০০ টাকা নেয়। সেখানে আমরা তো কম নিই। আর কেউ যদি আমাদের থেকে কম টাকায় দিতে পারে তাহলে আমরাও দাম কমিয়ে দেব। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক বই দেয়া হবে: অর্থ উপদেষ্টা - dainik shiksha জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক বই দেয়া হবে: অর্থ উপদেষ্টা নিম্নমানের কাগজে ছাপা ফরাজী প্রেসের ৩০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল - dainik shiksha নিম্নমানের কাগজে ছাপা ফরাজী প্রেসের ৩০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর কমে ১০০ - dainik shiksha বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর কমে ১০০ বিসিএসসহ সরকারি চাকরিতে আবেদন ফি নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha বিসিএসসহ সরকারি চাকরিতে আবেদন ফি নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি সময় বাড়লো এসএসসির ফরম পূরণের - dainik shiksha সময় বাড়লো এসএসসির ফরম পূরণের কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে প্রকৌশল গুচ্ছ ‍টিকিয়ে রাখতে উপাচার্যদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠি - dainik shiksha প্রকৌশল গুচ্ছ ‍টিকিয়ে রাখতে উপাচার্যদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের সনদ অনলাইনে সত্যায়ন যেভাবে - dainik shiksha বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের সনদ অনলাইনে সত্যায়ন যেভাবে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055339336395264