বাইর থেকে দেখে মনে হয় বড়সড় কোনো অনুষ্ঠান হবে, তাই বিদ্যালয়ের মাঠে শামিয়ানা টাঙিয়ে এবং পাশে কাপড়ের বেড়া দিয়ে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু না, এই প্যান্ডেলের ভেতরেই কক্ষ তৈরি করে জেএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে বসে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। রাতের কুয়াশায় ভিজে যাওয়া বেঞ্চে বসা ও পরীক্ষার খাতা রাখায় শিশুরা যেমন বিড়ম্বনায় পড়ছে। তেমনি রোদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরমের ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ঘটনাটি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কাশিয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের।
ওই কেন্দ্র্র ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের মাঠেই তৈরি করা হয়েছে একটি প্যান্ডেল। ভেতরে কাপড় দিয়ে বানানো হয়েছে কক্ষ। ওপরের শামিয়ানা কুয়াশায় ভিজে আছে। আবার বিদ্যালয়ের টিনশেড সাইকেল গ্যারেজটিতেও কাপড়ের বেড়া দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এবার তাদের বিদ্যালয়ে স্থাপিত কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪৬৯ জন। প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষের তুলনায় পরীক্ষার্থী বেশি হওয়ায় ডেকোরেটরের সাহায্যে বিদ্যালয়ের মাঠে প্যান্ডেল করে অস্থায়ীভাবে কক্ষ করে পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। এই অস্থায়ী কক্ষে অন্তত শতাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
কাশিয়া বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অস্থায়ী কক্ষে পরিদর্শক ফরিদা বেগম বলেন, কাপড়ের তৈরি ছাদ আর চারিদিক ঘেরা এই অস্থায়ী পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালে সূর্যের তাপে বিপাকে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীর সঙ্গে আমরাও ভীষণ অস্বস্তিতে আছি।
অস্থায়ী কক্ষের পরীক্ষার্থী সামিউল ইসলাম বলে, কাপড় দিয়ে ঘেরা এসব কক্ষের উপড়ে ছাদ না থাকায় রাতে কুয়াশায় বেঞ্চ ভিজে থাকে। সকালে পরীক্ষা শুরুর সময় এসব ভেজা বেঞ্চে খাতা রাখলেই ভিজে যায়। আর পরীক্ষা শুরুর পর বেলা যত বাড়ে সূর্যের তাপও তত বাড়ে।
ঘগোয়া বাসিন্দা কলেজছাত্র নাজমুল ইসলামের ছোট ভাই পরীক্ষা দিচ্ছে এই কেন্দ্রে। তিনি বলেন, প্রথম দিন ভাইকে নিয়ে এসে প্যান্ডেল দেখে মনে হয়েছিল, এখানে বুঝি ওয়াজ মাহফিল হবে। পরে দেখি পরীক্ষা হচ্ছে। বিষয়টি আমাকে অবাক করছে।
পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থী আয়শা আক্তার, আলমগীর কবীর, মরিয়ম আক্তার ও কাকলী বেগম জানায়, প্যান্ডেলের ভেতরে কেমন একটা অস্বস্তি লাগে তাদের। এ ছাড়া সকালে কুয়াশা থাকে। তখন ঠাণ্ডা লাগে, আবার দুপুরের রোদ মাথায় ধরে। ভেতরে আলোও কম বলে জানায় তারা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সুজা মিয়া বলেন, কেন্দ্রটিতে শ্রেণিকক্ষের চেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।