কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি |

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পাঁচটি স্কুল ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের এবং ছয়টি গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তার মাঝে থাকা কালভার্টটি ভেঙে খালে পড়ে গেছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে হঠাৎ করেই কালভার্টটি ভেঙে খালে পড়ে যায়। এরপর থেকেই এই কালভার্টটি এলাকার মানুষের জন্য হয়ে উঠেছে চরম দুর্ভোগের কারণ।  

জানা যায়, উপজেলার লতাচাপলি ইউনিয়নের মৎস্য বন্দর আলীপুর ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার বিকল্প সড়ক হিসেবে পরিচিত দিয়ার আমখোলা গ্রামের কালভার্টটি। এটি ভেঙে পড়ার পর এলাকার প্রায় ছয় হাজার মানুষ ও কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজ, মুসুল্লীয়াবাদ ইসলামিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরাসা, মুসুল্লীয়াবাদ এ কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম দিয়ার আমখোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি নূরানি মাদরাসার প্রায় দুইশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই পথে চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, খানাবাদ কলেজ থেকে মুসুল্লিয়াবাদ মাদরাসা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তা এখনো কাঁচা। বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করাই কষ্টকর হয়ে ওঠে। এর মধ্যে আবার কালভার্টটি ভেঙে যাওয়ায় স্কুল-কলেজগামীদের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয়েছে।

স্থানীয় ভুক্তভোগী শাহাবুদ্দিন মাতুব্বর বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন। রাস্তা পাকা করার কথা বলে আসছেন কয়েক বছর ধরে। কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এখন কালভার্ট ভেঙে পড়ে আছে। মেম্বার একদিন আসছে। কয়েকটা বাঁশ পাঠিয়েছে ঠিক করার জন্য। কিন্তু বাঁশ দিয়ে কি কালভার্ট করা যায়?’

আরেক ভুক্তভোগী সালাম খাঁ বলেন, ‘কালভার্ট ভাঙার পরে আমরা একটি গাছ দিয়ে চলাচল করি। কিছুদিন আগে এক লোক এখান থেকে পড়ে পা ভাঙছে। এখন এটাকে যদি সংস্কার করা না হয় তাহলে আরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তারা বর্ষাকালে এই রাস্তায় কাঁদা হওয়ার কারণে ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারে না। কালভার্ট ভাঙার কারণে অনেককে হাত ধরে পার করাতে হয়। দ্রুত এই কালভার্টটি সংস্কারের আবেদন জানান তারা।

মুসুল্লীয়াবাদ এ কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফখরুল ইসলাম জানান, এই রাস্তা দিয়ে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসে। কিন্তু কালভার্ট ভাঙার পরে তাদের আসতে কষ্ট হচ্ছে। অনেকে অন্য দিক দিয়ে প্রায় তিন-চার গুণ পথ ঘুরে স্কুলে আসে। আবার অনেকে আসেইনা। কালভার্টটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) হারুন ভদ্র জানান, ২০১৬ সালে খালের ওপরে এই কালভার্টটি স্থাপন করা হয়। কিন্তু এর পাশের খালটি কিছুদিন আগে খনন করার কারণে পানির স্রোতে কালভার্টটি ভেঙে গেছে। এরই মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা এটাকে মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া তিনি নিজে কিছু বাঁশ কিনে পাঠিয়েছেন আপাতত সাঁকো বানিয়ে চলার জন্য।

লতাচাপলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লা জানান, এই কালভার্টটি আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এরই মধ্যে কালভার্টটি সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে শুকনো মৌসুম না আসলে কালভার্টের কাজ করা যাবে না। তাই এখন আপাতত কাঠ দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051920413970947