সহপাঠীর আত্মহত্যার ঘটনায় দিনভর বিক্ষোভ শেষে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জনসহ কয়েকটি কর্মসূচি দিয়ে বিদ্যালয় ছাড়ল। মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। কর্মসূচির মধ্য রয়েছে বুধবারের সব পরীক্ষা বর্জন, সকাল ১০টায় কলোব্যাজ ধারণ ও ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান, প্রচলিত আইনে সহপাঠীর আত্মহত্যার বিচার এবং গভর্নিং বডিসহ অধ্যক্ষের পদত্যাগ।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আনুশকা বলেন, আমাদের সহপাঠীকে আমরা হারিয়েছি। আর কাউকে আমরা এভাবে অকালে হারাতে চাই না। আমরা একটা ন্যায় বিচারের আশায় বুধবার (৫ ডিসেম্বর) ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে। বিজয়ের মাসে স্কুল থেকে দেওয়া শাপলা ফুলের ব্যাজের পরিবর্তে কালোব্যাজ পরবো। পাশাপাশি বুধবারের সব পরীক্ষা বর্জন ঘোষণা করছি। যদি পরীক্ষা নেওয়া হয় তাহলে আমরা তা হতে দেব না।
নাজমা নামে অপর শিক্ষার্থী বলেন, আমরা শুধু পরীক্ষা বর্জন করব না অধ্যক্ষেরও পদত্যাগ চাই। বর্তমান কমিটি দায়িত্ববান না দায়িত্বহীনের পরিচয় দিয়েছে। তাই গভর্নিং বডির পদত্যাগ চাই। শিক্ষাকে বাণিজ্যের যে রূপ দিয়েছে তা মানি না। শিক্ষা ও ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন চাই। সবাইকে যথা সময়ে আসার আহ্বান রাখছি, আজকের মতো আমাদের কর্মসূচি সমাপ্তি করা হলো।
সোমবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে রাজধানীর শান্তিনগরে গলায় ফাঁস দিয়ে অরিত্রি অধিকারী (১৫) নামে ভিকারুননিসার এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেন। অরিত্রি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শাখার নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী জানান,অরিত্রির স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। রোববার (২ ডিসেম্বর) পরীক্ষা দেওয়ার সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের স্কুলে যেতে বলে। স্কুলে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ জানায়, তার মেয়ে পরীক্ষার হলে মোবাইলের মাধ্যমে নকল করছিল। তাই তাকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ খবর শোনার পর স্কুল থেকে অরিত্রি বাসায় ফিরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দিলীপ অভিযোগ করেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে আমাকে অপমান করেছে এবং জানিয়েছে অরিত্রি পরীক্ষা দিতে পারবে না। এ মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করেছে।
আর সহপাঠীর আত্মহত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার ও অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।