দৈনিক শিক্ষাডটকম, কুমিল্লা : কুমিল্লায় লেগুনাস্ট্যান্ড নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক যুবকের প্রাণ গেছে। শুক্রবার বেলা আড়াইাটায় কুমিল্লা শহরতলীর শাসনগাছা লেগুনাস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে বলে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কামরান হোসেন জানান। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. জামিল হানান অর্ণব (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন জানিয়েছেন।
নিহত অর্ণব শাসনগাছা মধ্যপাড়া এলাকার আজহার উদ্দিনের ছেলে এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ নাজমুল হোসেন ও অনিক নামের দুইজনকে ঢাকায় এবং নিশাদ নিশু নামের আরেকজনকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পযর্ন্ত বাকি দুইজনের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শাসনগাছা লেগুনা ও সিএনজি অটোরিকশাস্ট্যান্ডের দখল নিয়ে শাসনগাছা মধ্যমপাড়া দফাদার বাড়ি ও মোল্লা বাড়ির দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিলো। শুক্রবার জুমার নামাজের পর মধ্যপাড়ার আবুল কাশেমের দলের সঙ্গে মোল্লা বাড়ির রাব্বি ও আলাউদ্দিনের দলের সংঘর্ষ এবং গোলাগুলি হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন অন্তত চারজন। তাদের মধ্যে অর্ণবের বুকের বাম পাশে গুলি লাগে।
পরে গুলিবিদ্ধ চারজনসহ আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অর্ণবকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় পর মোল্লা বাড়ির রাব্বির বাবা খলিল মিয়াকে আটক করে পুলিশ।
নিহত অর্ণব ছাত্রদল করতেন বলে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন শিবলু জানিয়েছেন।
শিবলু বলেন, অর্ণব আমাদের একনিষ্ঠ কর্মী। এবারের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তার নাম বিবেচনায় রাখা হয়েছিল। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।
সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারও। তিনি বলেন, নতুন করে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ঘটনাস্থলে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ওসি ফিরোজ হোসেন বলছেন, শাসনগাছা এলাকায় দুটি গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ অর্ণব নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ নাজমুল ও অনিককে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে।
তবে এটা কোনো রাজনৈতিক বিরোধের ঘটনা নয়। লেগুনা-সিএনজি স্ট্যান্ডের আধিপত্য নিয়েই দুইপক্ষের সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন জানিয়ে এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।